মাওলানা সাদপন্থীরা ক্ষমতাচ্যুত সরকারের দোসর: ওলামা মাশায়েখ বাংলাদেশ

ওলামা– মাশায়েখ বাংলাদেশ জাতীয় প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলন করে। ঢাকা, ১২ নভেম্বর
ছবি: বিজ্ঞপ্তি

বাংলাদেশে তাবলিগ জামাতের সাদ কান্ধলভীর অনুসারীদের ক্ষমতাচ্যুত আওয়ামী লীগ সরকারের দোসর বলে আখ্যা দিয়েছেন ওলামা–মাশায়েখ বাংলাদেশের নেতা মাওলানা নাজমুল হাসান। তিনি বলেছেন, ‘গত সরকারকে সঙ্গে নিয়ে এঁরা (সাদপন্থী) আমাদের পাকিস্তানি বলেছে। সরকারের দোসর হয়ে সুবিধা নিয়েছে। এখন এই সরকারকে (অন্তর্বর্তী) অস্থিতিশীল করার জন্য ব্যস্ত।’ এ সময় তিনি কাকরাইল মসজিদে নিজেদের অবস্থান না ছাড়ার ঘোষণা দেন।

ঢাকায় জাতীয় প্রেসক্লাবে আজ মঙ্গলবার দুপুরে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে ওলামা– মাশায়েখ বাংলাদেশ ও হেফাজতে ইসলামের নেতা মাওলানা নাজমুল হাসান সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে এ কথা বলেন।

নাজমুল হাসান বলেন, ‘আমরা বলব, এই সরকারকে যারা অস্থিতিশীল করতে চায়...যেভাবে ৮৮ জন আলেম-ওলামার শাহাদাতের বিনিময়ে আমরা এই সরকারকে এনেছি, তেমনিভাবে আমরা রক্ত দিয়ে হলেও এই সরকারকে রক্ষা করব।’

কওমি আলেমদের প্রতিনিধিত্বকারী সংগঠন ওলামা মাশায়েখ বাংলাদেশ গত ৫ নভেম্বর রাজধানীর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে মহাসম্মেলন করে। এই সম্মেলন থেকে টঙ্গীর বিশ্ব ইজতেমার স্থান এবং ঢাকায় কাকরাইল মসজিদ-মাদ্রাসার নিয়ন্ত্রণ তাদের হাতে নেওয়ার ঘোষণা দেওয়া হয়।

আজ জাতীয় প্রেসক্লাবে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনেও একই ঘোষণা দেন মাওলানা নাজমুল হাসান। তিনি বলেন, ‘কাকরাইল মসজিদের জমির খাজনা-খরিদা মাওলানা জোবায়ের আহমদের নামে পরিশোধ করা আছে। মসজিদের বিদ্যুৎ বিলসহ সব বিল পরিশোধ করেন জোবায়ের সাহেব। স্বত্বমূলে এই স্থাপনার অধিকার জোবায়ের আহমদসহ তাবলিগের মূলধারার। কাজেই আমাদের স্পষ্ট ঘোষণা, আমরা কোনো অবস্থাতেই কাকরাইলের অবস্থান ছাড়ব না।’

প্রসঙ্গত, বাংলাদেশে তাবলিগ জামাতের দাওয়াতি কার্যক্রম নিয়ে ২০১৮ সাল থেকে দুটি পক্ষ তৈরি হয়েছে। একটিতে আছেন তাবলিগ জামাতের শীর্ষ মুরব্বি বাংলাদেশের মাওলানা জোবায়ের আহমদ। অন্য পক্ষে আছেন ভারতের মাওলানা সাদ কান্ধলভীর অনুসারীরা। এ পক্ষ সাদ কান্ধলভীকে বিশ্ব তাবলিগ জামায়াতের আমির মনে করে। মাওলানা জোবায়ের আহমদের পক্ষের তাবলিগপন্থীরা সাদকে আমির মানেন না। কারণ তাঁদের দাবি, তিনি (মাওলানা সাদ) কোরআন-হাদিসের অপব্যাখ্যা করেছেন, নবী-রাসুলের সমালোচনা করে ধৃষ্টতা দেখিয়েছেন।

সাদপন্থীদের সঙ্গে আলোচনা করে এর সমাধান সম্ভব কি না, এমন প্রশ্নের জবাবে নাজমুল হাসান বলেন, ‘সাদ সাহেব গুমরাহ, এই ব্যাপারে কোনো সন্দেহ নেই। বাংলাদেশে যাঁরা সাদপন্থী, তাঁদের প্রতি আবেদন, আপনারা তো আমাদের দেশের।...আপনারা যদি ওনাকে (মাওলানা সাদ) ঘোষণা দিয়ে ত্যাগ করেন, আমরা আপনাদের সঙ্গে...সবার জন্য রাজি আছি। উনি যতক্ষণ না তওবা করে সঠিক দ্বীনের (ইসলাম) পথে ফিরে আসেন, তাঁর ব্যাপারে যতক্ষণ দারুল উলুম দেওবন্দের ফতোয়া বলবৎ থাকবে, তাঁকে অনুসরণ করা যাবে না।’

সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পড়েন হেফাজতে ইসলামের কেন্দ্রীয় নেতা মাওলানা ফজলুল করিম কাসেমী। এ সময় আরও উপস্থিত ছিলেন মাওলানা বাহাউদ্দিন জাকারিয়া, মাওলানা শাহরিয়ার মাহমুদ, মাওলানা কেফায়েতুল্লাহ আজহারী, মাওলানা আবদুল মালেক প্রমুখ।