নীলফামারীর কিশোরগঞ্জ উপজেলায় সম্পত্তি লিখে না দেওয়ায় বৃদ্ধ বাবার মরদেহ দাফন ছাড়াই কয়েক ঘণ্টা উঠানে ফেলে রাখার অভিযোগ উঠেছে সন্তানদের বিরুদ্ধে। পরে স্থানীয় বাসিন্দাদের হস্তক্ষেপে মরদেহের দাফনকাজ হয়েছে। গতকাল শুক্রবার রাত আটটার দিকে উপজেলার রণচণ্ডী ইউনিয়নের কিশামত বীচচরণ মিস্ত্রিপাড়া এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।
এর আগে গত বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান আবু মোতালেব (৬৫) নামের ওই বৃদ্ধ। তিনি মিস্ত্রিপাড়া এলাকার বাসিন্দা।
পরিবার ও এলাকাবাসী সূত্রে জানা গেছে, আবু মোতালেব তাঁর স্ত্রী ও দুই মেয়েকে রেখে আরেক নারীকে বিয়ে করেন। বিয়ের পর তিনি তাঁর প্রথম স্ত্রী ও সন্তানদের সব সম্পত্তির অধিকার থেকে বঞ্চিত করেন। এমনকি তাঁদের কোনো খোঁজখবর বা ভরণপোষণ করেননি। ওই সময় তিনি দ্বিতীয় স্ত্রীর সঙ্গে থাকতেন। একপর্যায়ে এলাকাবাসীর সহায়তায় মোতালেবের প্রথম স্ত্রীর দুই মেয়েকে বিয়ে দেওয়া হয়। বিয়ের পর মেয়েদের কোনো খোঁজখবর নেননি মোতালেব। তাঁর প্রথম স্ত্রী মানবেতর জীবন যাপন করেন।
ওই বৃদ্ধ মারা যাওয়ার পর গতকাল সন্ধ্যায় তাঁর মরদেহ দাফনের জন্য নিজ বাড়িতে নেওয়া হয়। এ সময় তাঁর প্রথম স্ত্রীর দুই মেয়ে সেখানে গিয়ে নিজেদের ভাগের সম্পত্তির দাবি করেন, তা বুঝিয়ে না দেওয়ায় মরদেহ দাফনে বাধা দেন। পরে স্থানীয় বাসিন্দারা বিষয়টি নিয়ে মীমাংসার আশ্বাস দিলে গতকাল রাত আটটার দিকে পারিবারিক কবরস্থানে মোতালেবের মরদেহ দাফন করা হয়।
মোতালেবের শ্যালক বেলাল মুন্সি বলেন, ‘আমার দুলাভাই বেঁচে থাকতে দুটি বিয়ে করেছিলেন। তাঁর প্রথম স্ত্রী অর্থাৎ আমার বোনকে কিছু না দিয়ে তাঁর ছোট স্ত্রীকে সব সম্পত্তি লিখে দেন। মৃত ব্যক্তির ভাইয়েরা দায়িত্ব নিয়েছেন, তাঁর প্রথম স্ত্রীর দেনমোহর ও সম্পত্তির অংশ দ্বিতীয় স্ত্রীর থেকে নিয়ে মেয়েদের লিখে দেওয়ার ব্যবস্থা করবেন।’
মোতালেবের মৃত্যুর এক দিন পর স্থানীয়ভাবে বিষয়টির মীমাংসা করে তাঁর মরদেহ দাফনের ব্যবস্থা করা হয় বলে জানান স্থানীয় ইউপি সদস্য মজনু মিয়া (মধু)।