মুন্সিগঞ্জ সদর উপজেলার চরাঞ্চলে আধিপত্য বিস্তার ও সংসদ নির্বাচনকে কেন্দ্র করে নৌকার সমর্থকদের বাড়িতে হামলা, ভাঙচুর ও লুটপাটের অভিযোগ উঠেছে স্বতন্ত্র প্রার্থীর সমর্থকদের বিরুদ্ধে।
আজ রোববার সকাল সাড়ে ছয়টার দিকে উপজেলার আধার ইউনিয়নের সোলারচর ও বকুলতলা গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।
হামলায় দুজন নারীসহ তিনজনকে পিটিয়ে আহত করা হয়েছে। এ ছাড়া স্বর্ণালংকার, টাকা, গরু-ছাগল ও দোকানের মালামাল লুট করা হয়েছে বলে ভুক্তভোগী ব্যক্তিরা জানিয়েছেন। এ সময় একাধিক ককটেল বিস্ফোরণের ঘটনাও ঘটেছে।
হামলা-ভাঙচুরের ঘটনায় এক পক্ষে ছিলেন আধার ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মো. সুরুজ মেম্বার। তিনি মুন্সিগঞ্জ-৩ (সদর-গজারিয়া) আসনের স্বতন্ত্র প্রার্থী মোহাম্মদ ফয়সালের সমর্থক। অন্য পক্ষের নেতৃত্ব দেন ওই ইউনিয়নের ২ নম্বর ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সভাপতি আলী হোসেন। তিনি নৌকার প্রার্থী মৃণাল কান্তি দাসের সমর্থক ছিলেন।
স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, আধিপত্য বিস্তার নিয়ে সুরুজ মেম্বার ও আলী হোসেনের মধ্যে আগে থেকেই বিরোধ ছিল। দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে কেন্দ্র করে বিরোধ আরও বাড়ে। নির্বাচনের পর দুই পক্ষের মধ্যে চাপা উত্তেজনা বিরাজ করছিল। আজ সকাল সাড়ে ৬টার দিকে সুরুজ মেম্বারের পক্ষের সাইফুল ইসলামসহ ৪০-৫০ জনের একটি দল দেশি অস্ত্র নিয়ে সোলারচর ও বকুলতলা গ্রামে হামলা করে। এ সময় একাধিক ককটেল বিস্ফোরণ ঘটিয়ে এলাকায় আতঙ্ক তৈরি করা হয়। পরে প্রতিপক্ষের বাড়িঘরে হামলা-ভাঙচুর চালিয়ে লুটপাট করা হয়।
আলী হোসেন দাবি করেছেন, নৌকা প্রতীকে সমর্থন করায় তাঁদের বাড়িঘরে হামলা করা হয়েছে। স্বতন্ত্র প্রার্থীর সমর্থক সুরুজ মেম্বার, সাইফুল ইসলামের নেতৃত্বে মোল্লাকান্দি ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান রিপন হোসেন পাটোয়ারী, ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি ফরহাদ খাঁর সহযোগিতায় শতাধিক ব্যক্তি সকালে অতর্কিতে হামলা করেন। এতে তাঁদের পক্ষের শতাধিক বাড়িঘর ভাঙচুর, ১৫টি গরু, ৮টি ছাগল, ২০-২৫ ভরি স্বর্ণালংকার ও লক্ষাধিক টাকা লুট করা হয়েছে। ঘটনার সময় বাধা দেওয়ায় তিনজনকে পিটিয়ে আহত করা হয়েছে।
হামলাকারীদের বিষয়ে আলী হোসেনের বক্তব্যকে সঠিক বললেন সুরুজ মেম্বার। তবে তিনি ছিলেন না। সুরুজ মেম্বার প্রথম আলোকে বলেন, আলী হোসেনের সঙ্গে দ্বন্দ্ব থাকলেও তিনি নৌকার নির্বাচন করেছেন। তাঁর সঙ্গে আগে যাঁরা ছিলেন, তাঁদের অনেকেই স্বতন্ত্র প্রার্থীর পক্ষে নির্বাচন করেছেন। হামলার সঙ্গে তিনি নন; তাঁর একসময়কার সমর্থকেরা জড়িত থাকতে পারেন বলে তিনি ধারণা করেন।
অতিরিক্ত পুলিশ সুপার থান্দার খাইরুল হাসান জানান, খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে পুলিশ। এলাকায় অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা আছে। আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করেই ঘটনাটি ঘটেছে। এ ঘটনায় তাঁদের জানামতে, ৮টি গরু লুট ও ১০টি বাড়ি ভাঙচুর করা হয়েছে। ইতিমধ্যে চারটি গরু উদ্ধার করা হয়েছে।