জামালপুরে মেয়ের পর এবার নিখোঁজ মায়ের গলাকাটা লাশ উদ্ধার

লাশ
প্রতীকী ছবি

জামালপুর সদর উপজেলায় কাজলী আক্তার (৩০) নামের একজনের গলাকাটা লাশ পাওয়ার ঘটনার এক দিন পর খালের পানি থেকে তাঁর মায়ের গলাকাটা লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ। গতকাল সোমবার রাত ১০টার দিকে সদর উপজেলার জামিরা এলাকা থেকে লাশটি উদ্ধার করা হয়। এ ঘটনায় পুলিশ সন্দেহভাজন দুজনকে গ্রেপ্তার করেছে।

নিহত নারীর নাম জোসনা বেগম (৫০)। তিনি উপজেলার নয়াপাড়া গ্রামের ব্যবসায়ী মোস্তফা কামালের স্ত্রী। এর আগে গত রোববার কুমারীয়া বটতলা এলাকার একটি বাঁশঝাড়ের নিচ থেকে জোসনার মেয়ে কাজলী আক্তারের গলাকাটা লাশ উদ্ধার করা হয়। ওই সময় থেকে জোসনা বেগম নিখোঁজ ছিলেন।

স্ত্রী ও মেয়ের হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় ছয়জনের নাম উল্লেখ করে এবং আরও ছয়জনকে অজ্ঞাতনামা আসামি করে মামলা করেছেন মোস্তফা কামাল। এ ঘটনায় পুলিশ সন্দেহভাজন হিসেবে গতকাল সোমবার রাতে টাঙ্গাইলের মধুপুর উপজেলার শোলাকুঁড়ি এলাকার মো. শামীম হাসান (৩০) ও ফরিদপুরের মো. মামুন মিয়াকে (৩৫) গ্রেপ্তার করেছে।

নিহত জোসনা বেগমের স্বজন ও পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, গতকাল সন্ধ্যার পর জামিরা এলাকার একটি খালের পানিতে স্থানীয় লোকজন এক নারীর গলাকাটা অর্ধগলিত লাশ ভাসতে দেখেন। খবর পেয়ে সদর থানা-পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে রাত ১০টার দিকে লাশটি উদ্ধার করে। পরে লাশ উদ্ধারের খবর পেয়ে মোস্তফা কামাল থানায় গিয়ে লাশের পরিচয় শনাক্ত করেন।

নিহত দুজনের পরিবার ও পুলিশ সূত্রে জানা যায়, কাজলীর চাকরির বিষয়ে কথা বলার জন্য গত শনিবার সন্ধ্যায় তিনি ও তাঁর মা জোসনা বেগম এক নেতার বাড়িতে যাওয়ার কথা বলে বাড়ি থেকে বের হন। সঙ্গে তাঁরা দই, মিষ্টি ও পিঠা নিয়ে যান। এরপর রাতে তাঁরা দুজন আর বাড়িতে ফিরে আসেননি। পরে গত রোববার বেলা ১১টার দিকে বাঁশঝাড় থেকে কাজলী আক্তারের গলাকাটা লাশ উদ্ধার করে পুলিশ।

মোস্তফা কামাল বলেন, ‘আগের দিন মেয়ের গলাকাটা লাশ পেলাম। তার এক দিন পর স্ত্রীর গলাকাটা লাশ পেলাম। আমার মেয়ে ও স্ত্রীকে ডেকে নিয়ে নৃশংসভাবে হত্যা করা হয়েছে। বাড়ি থেকে বের হওয়ার সময় দুজনে বলে গিয়েছিল, চাকরির বিষয়ে কথা বলার জন্য একজনের বাড়িতে যাচ্ছেন। এরপর তারা আর বাড়িতে ফিরতে পারল না। তাদের কী অপরাধ যে এভাবে গলাকেটে হত্যা করা হয়েছে! দ্রুত সময়ের মধ্যে আমি হত্যাকারীদের গ্রেপ্তার ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানাই।’

জামালপুর সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) কাজী শাহনেওয়াজ প্রথম আলোকে বলেন, এক দিনের ব্যবধানে মা ও মেয়ের গলাকাটা লাশ উদ্ধার হয়েছে। দুজনের হত্যাকাণ্ডের ধরন একই রকম। কাজলী আক্তারের বিয়ে হয়েছিল। দেড় বছর আগে তাঁর বিবাহবিচ্ছেদ হয়েছে। এরপর থেকে কাজলী বাবার বাড়িতেই থাকতেন। আবার কাজলী আক্তারেরে সঙ্গে স্থানীয় এক যুবকের প্রেমের সম্পর্কের বিষয়ে তথ্য পাওয়া গেছে। প্রাথমিকভাবে পুলিশ তিনটি বিষয় ধরে হত্যাকাণ্ডের বিষয়টি তদন্ত করছে। দ্রুত সময়ের মধ্যে হত্যাকাণ্ডের রহস্য উদ্‌ঘাটন করা যাবে বলে আশা করছেন তিনি।