বান্দরবানে আজ বুধবার পাহাড়িদের ঐতিহ্যবাহী বৈসাবি উৎসব শুরু হয়েছে। প্রথম দিনে চাকমা-তঞ্চঙ্গ্যাদের ফুল বিজু, পুরোনো বছরের বিদায় দিয়ে নতুন বছরের মঙ্গল কামনায় ফুল ভাসানো ও বুনো ফুলে ঘর সাজানো হয়েছিল।
উৎসবের দ্বিতীয় দিনে আগামীকাল বৃহস্পতিবার মারমাসহ পাঁচটি জনগোষ্ঠীর সাংগ্রাই শুরু হচ্ছে। উৎসব উপলক্ষে জেলা শহরে ১১টি পাহাড়ি জনগোষ্ঠীর অংশগ্রহণে মঙ্গল শোভাযাত্রার আয়োজন করা হয়েছে।
ভোরে জেলা শহরের চাকমা ও তঞ্চঙ্গ্যা তরুণ-তরুণীরা শঙ্খনদের মারমা বাজারঘাটে ফুল ভাসিয়ে ফুল বিজুর দিন শুরু করেছেন। বর্ণাঢ্য পোশাক পরে বিজু ফুল (মাধবীলতা) ও হরেক বুনো ফুল কলাপাতায় ভরে নিয়ে আসেন। পানিতে নেমে তাঁরা প্রণাম করে ফুল ভাসিয়ে দেন।
ফুল ভাসাতে আসা আদ্রিতা চাকমা বলেছেন, পুরোনো বছরের সব মন্দ, কালিমা ঝেরেমুছে ক্ষমা চেয়ে বিদায় ও নতুন বছরের মঙ্গল কামনা করে ফুল বিজুর দিনে ফুল ভাসানো হয়। ফুল বিজুর দিনে ফুলের মালা গেঁথে ঘরবাড়ি সাজিয়ে তোলা হয়। বাড়িঘরের সবকিছু ধুয়েমুছে পরিচ্ছন্ন করে রাখা হয়।
প্রবীণ ব্যক্তি মিলন কান্তি তঞ্চঙ্গ্যা বলেছেন, বাংলা পঞ্জিকা অনুযায়ী চাকমা ও তঞ্চঙ্গ্যাদের আগামীকাল মূল বিজু। আজকে ঘরে ঘরে পাঁজন (অন্তত পাঁচ ধরনের শাকসবজি সংমিশ্রণে) রান্না হবে। অন্যান্য খাবারের আয়োজন থাকবে। ঘরে ঘরে ঘুরে বেড়ানো লোকজনকে আপ্যায়ন করা হবে। সবাই মনে করে, পাঁচটি ঘরে পাঁজন খেলে শরীরে রোগ প্রতিরোধক্ষমতা বাড়ে এবং সারা বছর অসুখ-বিসুখ হয় না।
মারমা ও অন্যান্য জনগোষ্ঠীর আগামীকাল সাংগ্রাই উৎসব শুরু। উৎসবের শুরুতে রাজারমাঠ থেকে মঙ্গল শোভাযাত্রা বের করা হবে। এতে মারমা, ত্রিপুরা, ম্রো, খুমি, চাকমা, চাকসহ ১১টি জনগোষ্ঠীর লোকজন অংশগ্রহণ করবে। সাংগ্রাই উদ্যাপন পরিষদ ও ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠী সাংস্কৃতিক ইনস্টিটিউটের (কেএসআই) যৌথ উদ্যোগে আয়োজিত অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকবেন পার্বত্য চট্টগ্রামবিষয়ক মন্ত্রী বীর বাহাদুর উশৈসিং।
কেএসআইয়ের ভারপ্রাপ্ত পরিচালক লীলাময় ম্রো জানিয়েছেন, মঙ্গল শোভাযাত্রা শেষে রাজার মাঠে বয়স্ক পূজা করা হবে। সেখানে প্রবীণ নারী-পুরুষদের উপহারসামগ্রী প্রদান করা হবে।