কুষ্টিয়া থেকে ছেড়ে আসা বাসে ডাকাতি ও ধর্ষণের ঘটনায় জড়িত সন্দেহে পুলিশ একজনকে গ্রেপ্তার করেছে। টাঙ্গাইল জেলা গোয়েন্দা পুলিশ রাজা মিয়া নামের ওই ব্যক্তিকে আজ বৃহস্পতিবার ভোরে গ্রেপ্তার করে। তিনি কালিহাতী উপজেলার বল্লা গ্রামের বাসিন্দা। শহরের নতুন বাসস্ট্যান্ড এলাকায় ভাড়া বাসায় থাকতেন। টাঙ্গাইলের পুলিশ সুপার সরকার মোহাম্মদ কায়সার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
বাসটি গত মঙ্গলবার সন্ধ্যায় কুষ্টিয়ার দৌলতপুর থেকে নারায়ণগঞ্জের উদ্দেশে যাত্রা শুরু করে। গভীর রাতে বঙ্গবন্ধু সেতু পার হওয়ার পর যাত্রীবেশী ডাকাত দল অস্ত্রের মুখে বাসের নিয়ন্ত্রণ নিয়ে যাত্রীদের হাত, চোখ, মুখ বেঁধে ফেলে। যাত্রীদের মুঠোফোন, টাকাসহ মূল্যবান জিনিসপত্র লুট করে। এ সময় ধর্ষণের ঘটনাও ঘটে। তিন ঘণ্টা ধরে চলে ডাকাতি ও ধর্ষণের ঘটনা। এরপর মধুপুরে রাস্তার পাশে খাদে পড়ে গেলে ডাকাতরা পালিয়ে যায়। খাদে পড়ে যাওয়ার পর আশপাশের লোকজন উদ্ধারে এগিয়ে আসে। খবর পেয়ে ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌঁছান। তাঁদের সঙ্গে আলাপ করে এসব তথ্য জানা যায়।
মধুপুর ফায়ার সার্ভিসের কর্মকর্তা জয়নাল আবেদিন জানান, খবর পাওয়ার পর তাঁরা ঘটনাস্থলে পৌঁছান। প্রথমে মনে করেছিলেন সাধারণ দুর্ঘটনা। যাওয়ার পর দেখেন জানালা দিয়ে উঁকি দেওয়া অনেকের মুখ–হাত বাঁধা। সবাই আতঙ্কিত। এ সময় যাত্রীদের কাছে জানতে পারেন বাসে ডাকাতি হয়েছে। ধর্ষণের ঘটনাও ঘটেছে। এ সময় তাঁরা আহত দুজন ও ধর্ষণের শিকার এক নারীকে উদ্ধার করে মধুপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যান।
রক্তিপাড়া গ্রামের মো. আলহাজ মিয়া বলেন, বাসের ভেতরের যাত্রীদের চোখ, হাত, মুখ তাঁদের পরনের কাপড় ও জানালার পর্দা দিয়ে বাঁধা ছিল। সবাই ভয়ে কাঁপছিলেন। ওই গ্রামের স্বপন মিয়া বলেন, যাত্রীদের সঙ্গে কথা বলে জানতে পারেন, তাদের মুঠোফোন, টাকাপয়সা সব ছিনিয়ে নিয়েছে এবং ধর্ষণের ঘটনাও ঘটে। প্রতিবাদ করলে হত্যা করতে পারে—এ ভয়ে সবাই চুপ ছিলেন।
এ ব্যাপারে গতকাল বুধবার রাতে ওই বাসের যাত্রী হেকমত আলী বাদী হয়ে মধুপুর থানায় মামলা করেন। হেকমত আলীর বাড়ি কুষ্টিয়ার দৌলতপুর উপজেলার সালিমপুর গ্রামে। মামলায় অজ্ঞাত ব্যক্তিদের আসামি করা হয়েছে। আসামিদের বিরুদ্ধে ডাকাতি ও দলবদ্ধ ধর্ষণের অভিযোগ আনা হয়েছে।
মামলার তদন্ত কর্মকর্তা মধুপুর থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মো. মুরাদ হোসেন বলেন, এ ঘটনায় জড়িত অভিযোগে একজনকে আটক করা হয়েছে। পরে তাঁকে মামলায় গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে। এ ছাড়া বাসের চালক ও সুপারভাইজারকে হেফাজতে রাখা হয়েছে। তাঁদের ব্যাপারে খোঁজখবর নেওয়া হচ্ছে।
মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা মুরাদ হোসেন জানান, ধর্ষণের শিকার বাসের নারী যাত্রীর ডাক্তারি পরীক্ষা আজ টাঙ্গাইল জেনারেল হাসপাতালে করা হবে।