কুষ্টিয়ার কুমারখালীতে আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে ছাত্রদলের দুই পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষে অন্তত তিনজন আহত হয়েছেন। আজ বুধবার দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে কুমারখালী পৌরসভার ছালাপট্টি এলাকায় ঘটে এ ঘটনা।
সংঘর্ষে আহত ব্যক্তিরা হলেন উপজেলা সদকী ইউনিয়নের দড়িমালিয়াট গ্রামের কাদের প্রামাণিকের ছেলে আবদুল লতিফ (২৫), আইয়ুব আলীর ছেলে মো. সাইম (১৯) ও করাতকান্দি গ্রামের মতিয়ার রহমানের ছেলে সাগর হোসেন (২২)। তাঁরা ছাত্রদলের কর্মী ও সমর্থক। তাঁদের মধ্যে লতিফ ও সাইম উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসাধীন।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্র জানায়, আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে উপজেলা ছাত্রদলের আহ্বায়ক সোহানুর রহমানের সমর্থকদের সঙ্গে একই কমিটির সাবেক আহ্বায়ক আতিকুর রহমানের সমর্থকদের মধ্যে বিরোধ চলছে। এ বিরোধের জেরে আজ দুপুরে লাঠিসোঁটা, হাতুড়ি ও দেশি অস্ত্র নিয়ে উভয় পক্ষের লোকজন সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়েন। সংঘর্ষে আতিকুরের পক্ষের আবদুল লতিফ ও মো. সাইম এবং সোহানুরের পক্ষের সাগর হোসেন আহত হন। পরে স্থানীয় লোকজন তাঁদের উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যান। লতিফ ও সাইমকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। তাঁদের শরীরের বিভিন্ন স্থানে আঘাতের চিহ্ন রয়েছে।
লতিফ ও সাইম বলেন, সদকী ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) ডিজিটাল সেন্টারের উদ্যোক্তা শিমুলের বিরুদ্ধে নানা অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে। তাঁরা অভিযোগের খোঁজখবর নিতে সকালে পরিষদে গিয়েছিলেন। শিমুল ছাত্রদলের আহ্বায়ক সোহানের লোক। এরপর তাঁরা দুপুরে কুমারখালী পৌর এলাকার ছালাপট্টিতে চা পান করছিলেন। এ সময় কাজী সোহানুর, শিমুল, হাসিমসহ ছাত্রদলের বেশ কয়েকজন কর্মী লাঠিসোঁটা, হাতুড়ি ও দেশি অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে তাঁদের ওপর অতর্কিত হামলা করেন। তাঁদের মাথা, হাত ও শরীরের বিভিন্ন স্থানে আঘাত লেগেছে। এ ঘটনায় তাঁরা থানায় মামলা করবেন।
সোহানুরের সমর্থক সাগর হোসেন বলেন, সকালে লতিফ ও সাইম লোকজন নিয়ে পরিষদের তাঁর একজন আত্মীয়কে মারধর করেন। মারধরের কারণ জানতে ছালাপট্টিতে গেলে তাঁরা তাঁকেও মেরে মাথা ফাটিয়ে দেন। তবে তিনি কারও সমর্থক নন বলে দাবি করেন।
লতিফ ও সাইমের ওপর হামলা চালানোর অভিযোগ অস্বীকার করে উপজেলা ছাত্রদলের আহ্বায়ক সোহানুর রহমান বলেন, তিনি বা তাঁর লোকজন কোথাও মারামারি করেননি। তাঁর কোনো লোক আহতও নেই। তবে তিনি শুনেছেন, সকালে লতিফ ও সাইম ইউপি কার্যালয়ে গিয়ে হট্টগোল করেছেন।
এ বিষয়ে জানতে সদকী ইউপির ডিজিটাল সেন্টারের উদ্যোক্তা শিমুল হোসেনকে বারবার কল দিয়েও পাওয়া যায়নি। ফলে তাঁর বক্তব্য নেওয়া সম্ভব হয়নি।
উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের জরুরি বিভাগের চিকিৎসা কর্মকর্তা সাবরিনা বলেন, হামলায় আহত তিনজন চিকিৎসা নিতে এসেছিলেন। তাঁদের মধ্যে একজন চিকিৎসা নিয়ে চলে গেছেন। অপর দুজন হাসপাতালে ভর্তি আছেন।
কুমারখালী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আকিবুল ইসলাম বলেন, একই দলের সমর্থকদের মধ্যে সংঘর্ষে কয়েকজন আহত হয়েছেন। তাঁরা হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। এখন পর্যন্ত কোনো পক্ষ এ বিষয়ে লিখিত অভিযোগ দেয়নি।