কক্সবাজারের উখিয়ার বালুখালী আশ্রয়শিবিরে (ক্যাম্প-৮) সন্ত্রাসীদের গুলিতে গুরুতর আহত হয়েছেন রাত্রিকালীন ক্যাম্প পাহারার স্বেচ্ছাসেবী দলের (লাঠি-বাঁশি বাহিনী) এক সদস্য। গতকাল সোমবার রাত নয়টার দিকে গুলির এ ঘটনা ঘটে।
আহত রোহিঙ্গা আয়াত উল্লাহ (২৮) ওই আশ্রয়শিবিরের (ক্যাম্প-৮ ডব্লিউ) ই ব্লকের এ-৫৩–এর বাসিন্দা আবদুল রজকের ছেলে। ঘটনার পর আর্মড পুলিশ ব্যাটালিয়নের (এপিবিএন) সদস্যরা আয়াত উল্লাহকে উদ্ধার করে ক্যাম্পের ভেতর কুতুপালং এমএসএফ হাসপাতালে ভর্তি করান। মিয়ানমারের সশস্ত্র গোষ্ঠী আরাকান স্যালভেশন আর্মির (আরসার) সদস্যরা এ হামলা চালিয়েছেন বলে জানিয়েছে পুলিশ।
রোহিঙ্গা শিবিরের নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা ১৪ এপিবিএনের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে, গতকাল রাত পৌনে নয়টার দিকে ক্যাম্প-৮ ডব্লিউ ই ব্লকের হেড মাঝি (ক্যাম্প ব্যবস্থাপনা কমিটির প্রধান) মো. আরিফ স্থানীয় রোহিঙ্গাদের সঙ্গে আলোচনা করছিলেন। এ সময় মৌলভি মো. আকিজ ওরফে অলির (৫৪) নেতৃত্বে আরসার ১০ জনের একটি সশস্ত্র দল সেখানে এলোপাতাড়ি গুলি ছুড়তে শুরু করে। এ সময় মো. আরিফ দৌড়ে পালিয়ে যান। তবে একটি গুলি গিয়ে লাগে রাত্রিকালীন ক্যাম্প পাহারা দলের সদস্য ও রোহিঙ্গা স্বেচ্ছাসেবী আয়াত উল্লাহর কোমরে। এরপর আরিফকে দেখে নেওয়ার হুমকি দিয়ে আরসার সদস্যরা পাশের পাহাড়ের দিকে চলে যান। খবর পেয়ে এপিবিএনের সদস্যরা গুলিবিদ্ধ আয়াত উল্লাহকে উদ্ধার করে প্রথমে বালুখালীতে এমএসএফ হাসপাতালে নিয়ে যান। অবস্থার অবনতি হলে তাঁকে পাশের কুতুপালং এমএসএফ হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়।
রোহিঙ্গা শিবিরের নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা ১৪ এপিবিএনের এক পুলিশ কর্মকর্তা বলেন, আরসার ৮ থেকে ১০ জনের একটি দল হেড মাঝি আরিফকে হত্যা করতে হামলা চালিয়েছিল। তারা আরিফকে লক্ষ্য করে চারটি গুলি ছোড়ে। এই দলে নেতৃত্ব দেন আরসার সাবকমান্ডার আকিজ প্রকাশ মৌলভি। আরিফকে লক্ষ্য করে গুলি করা হলেও তিনি কৌশলে রক্ষা পান। তবে গুলিবিদ্ধ হন রাত্রিকালীন ক্যাম্প পাহারা দলের সদস্য আয়াত উল্লাহ। সন্ত্রাসীদের ধরতে আশ্রয়শিবির ও আশপাশে অভিযান চালানো হচ্ছে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কয়েক রোহিঙ্গানেতা বলেন, ক্যাম্প ব্যবস্থাপনার মাঝিদের তৎপরতার কারণে আরসার বেশ কয়েক সদস্য আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর হাতে মাদক-অস্ত্রসহ ধরা পড়েছেন। রাত্রিকালীন পাহারা বসানোর কারণে আরসার সদস্যরা বেকায়দায় রয়েছেন। আশ্রয়শিবিরে মাদকের ব্যবসা পরিচালনা, রোহিঙ্গাদের কাছ থেকে চাঁদা আদায় করতে না পেরে আরসার সদস্যরা মাঝিদের ওপর হামলা করছেন।