সিলেট শিক্ষা বোর্ডে এইচএসসিতে সব সূচকে এগিয়ে আছেন ছাত্রীরা। ফলাফল প্রকাশের পর আজ রোববার দুপুরে সিলেট সরকারি মহিলা কলেজে দুই শিক্ষার্থী
সিলেট শিক্ষা বোর্ডে এইচএসসিতে সব সূচকে এগিয়ে আছেন ছাত্রীরা। ফলাফল প্রকাশের পর আজ রোববার দুপুরে সিলেট সরকারি মহিলা কলেজে দুই শিক্ষার্থী

সিলেটে এইচএসসিতে পাসের হার ও জিপিএ-৫ দুটিই কমেছে

সিলেট শিক্ষা বোর্ডে এবারের এইচএসসি পরীক্ষার ফলাফলে গত বছরের তুলনায় পাসের হার ও জিপিএ-৫ দুটিই কমেছে। এবার সিলেট বোর্ডে পাসের হার ৭১ দশমিক ৬২। যা গত বছরের তুলনায় ৯ দশমিক ৭৮ শতাংশ কম। গত বছর পাসের হার ছিল ৮১ দশমিক ৪০। গত বছর রেকর্ড ৪ হাজার ৮৭১ জন জিপিএ-৫ পেয়েছিলেন। এবার জিপিএ-৫ পেয়েছেন ১ হাজার ৬৯৯ জন শিক্ষার্থী।

সিলেট শিক্ষা বোর্ডের সম্মেলনকক্ষে আজ রোববার বেলা পৌনে তিনটার দিকে সংবাদ সম্মেলনে বিস্তারিত ফলাফল তুলে ধরেন বোর্ডের পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক অরুন চন্দ্র পাল। তবে এর আগেই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোতে এবং মুঠোফোনের খুদে বার্তার মাধ্যমে ফলাফল জেনে নিয়েছেন শিক্ষার্থীরা।

অরুন চন্দ্র পাল জানান, এবারের ফলাফলে শতভাগ পাস করা প্রতিষ্ঠানের সংখ্যা কমেছে। এবার দুটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা শতভাগ পাস করেছেন। এর আগের বছর ২০২২ সালে ১১টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা শতভাগ পাস করেছিলেন।
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন কলেজ পরিদর্শক সৈয়দ মোয়াজ্জেম হুসেন, বিদ্যালয় পরিদর্শক মোহাম্মদ মঈনুল ইসলাম, সহকারী পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক দ্বীপেশ রঞ্জন দাশ, সিস্টেম অ্যানালিস্ট সরকার মোহাম্মদ আতিকুর রহমান ও উপপরীক্ষা নিয়ন্ত্রক হাবিবা বাছিত।

সবকিছুতে এগিয়ে ছাত্রীরা

সিলেট বোর্ডের অধীনে এইচএসসির ফলাফলে সব সূচকে এগিয়ে আছেন ছাত্রীরা। পরীক্ষার্থীর সংখ্যা, পাসের হার এবং জিপিএ-৫ প্রাপ্তিতে এগিয়ে রয়েছেন মেয়েরা। এবার ৪৮ হাজার ৭৫১ ছাত্রী পরীক্ষায় অংশ নিয়ে পাস করেছেন ৩৫ হাজার ৬২০ জন। পাসের হার ৭৩ দশমিক শূন্য ৭। জিপিএ-৫ পেয়েছেন ৮৮০ জন।
এদিকে ছাত্রদের পাসের হার ৬৯ দশমিক ৫৮। পরীক্ষায় অংশ নিয়েছিলেন ৩৪ হাজার ৩৭২ জন ছাত্র। এর মধ্যে পাস করেছেন ২৩ হাজার ৯১৬ জন। জিপিএ-৫ পেয়েছেন ৮১৯ জন।

শিক্ষা বোর্ডের পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক অরুন চন্দ্র পাল বলেন, সিলেটে ছাত্রদের বিদেশ যাওয়ার প্রবণতা বেশি। এ জন্য ছাত্রদের সংখ্যা কম। এ ছাড়া ছাত্রীরা পড়াশোনায় বেশি মনোযোগী হওয়ায় পাসের হার বেশি।

বিভাগভিত্তিক পাসের হারে এগিয়ে রয়েছেন বিজ্ঞানের শিক্ষার্থীরা। এ বিভাগে পাসের হার ৮২ দশমিক ৩৪। বিজ্ঞান বিভাগ থেকে জিপিএ-৫ পেয়েছেন ১ হাজার ৩৩৫ জন। মানবিকে পাসের হার ৬৯ দশমিক ৭২। জিপিএ-৫ পেয়েছেন ১ হাজার ২৫৮ জন। ব্যবসায় শিক্ষা বিভাগে পাসের হার ৬৯ দশমিক ৪২। জিপিএ-৫ পেয়েছেন ১০৬ শিক্ষার্থী।

এগিয়ে সিলেট জেলা

এদিকে সিলেট বোর্ডের অধীনে বিভাগের চার জেলার মধ্যে পাসের হার ও জিপিএ-৫ প্রাপ্তিতে গতবারের মতো এগিয়ে রয়েছে সিলেট জেলা। জেলায় এবার পাসের হার ৭৬ দশমিক ৫২। জিপিএ-৫ পেয়েছেন ১ হাজার ১০৩ জন। পাসের হারের দিক দিয়ে দ্বিতীয় অবস্থানে রয়েছে হবিগঞ্জ। জেলায় পাসের হার ৬৯ দশমিক ৫৯। জিপিএ-৫ পেয়েছেন ১১২ জন। পাসের হারের দিক দিয়ে কিছুটা পিছিয়ে থাকলেও জিপিএ-৫ প্রাপ্তির দিক দিয়ে দ্বিতীয় অবস্থানে মৌলভীবাজার। জেলার পাসের হার ৬৫ দশমিক ৮৫। জিপিএ-৫ পেয়েছেন ১৭০ শিক্ষার্থী। সুনামগঞ্জ জেলায় পাসের হার ৬৯ দশমিক ২১। জিপিএ-৫ পেয়েছেন ৫৪ জন।

গত বছরের তুলনায় খারাপ ফলাফলের কারণ হিসেবে সিলেট শিক্ষা বোর্ডের পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক অরুন চন্দ্র পাল বলেন, ইংরেজি বিষয়ে পাসের হার কমে যাওয়ায় ফলে প্রভাব পড়েছে। এর জন্য গ্রামাঞ্চলের প্রতিষ্ঠানগুলোতে ইংরেজি বিষয়ে নার্সিং প্রয়োজন। দক্ষ শিক্ষকের প্রয়োজন রয়েছে। এ ছাড়া তিন বছর ধরে পূর্ণ সিলেবাসে পরীক্ষা না হওয়ায় পাসের হার বেশি ছিল। এবার পূর্ণ সিলেবাসে সব বিষয়ে পরীক্ষা হওয়ায় পাসের হারে প্রভাব পড়েছে।