গাজীপুরের শ্রীপুর রেলস্টেশনে ঢাকা-ময়মনসিংহ রুটে চলাচল করা সব আন্তনগর ট্রেনের যাত্রাবিরতির দাবিতে রেলপথ অবরোধ করা হয়েছে। আজ সোমবার বেলা ১১টা থেকে সহস্রাধিক লোক শ্রীপুর রেলক্রসিং ও শ্রীপুর রেলস্টেশনের প্ল্যাটফর্মে অবস্থান নিয়ে এই কর্মসূচি শুরু করেন।
এ সময় আন্দোলনকারীরা ট্রেন থামানোর দাবি–সম্পর্কিত বিভিন্ন ব্যানার ও ফেস্টুন তুলে ধরেন। বেলা ২টার দিকে কর্মসূচি শেষ হয় ও ট্রেন চলাচল শুরু হয়।
বেলা সাড়ে ১১টায় সেখানে গিয়ে দেখা যায়, ঢাকা অভিমুখে যাত্রা করা ব্রহ্মপুত্র এক্সপ্রেস ট্রেনটি শ্রীপুর রেলস্টেশনে দাঁড়িয়ে আছে। অপর দিকে অবরোধে অংশ নেওয়া লোকজন ব্যানার, ফেস্টুন হাতে নিয়ে কিছুক্ষণ পরপর ট্রেন থামানোর দাবিতে স্লোগান দিচ্ছিলেন।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, ব্রহ্মপুত্র এক্সপ্রেস ট্রেনটি শ্রীপুর রেলস্টেশনে নির্ধারিত যাত্রাবিরতি নেই। তবে দাবি আদায়ের জন্য সড়কে সাধারণ লোকজন অবস্থান নেওয়ায় ট্রেনটি সেখানে থামতে বাধ্য হয়।
অবরোধ ও মানববন্ধনে অংশ নেওয়া লোকজনের মধ্যে আছেন ছাত্র, শিক্ষক, ব্যবসায়ী, চাকরিজীবী থেকে শুরু করে সব শ্রেণি–পেশার মানুষ। অবরোধে অংশ নেওয়া আমান উল্লাহ নামের এক ব্যক্তি বলেন, ‘শিল্প–অধ্যুষিত ও ঘনবসতিপূর্ণ এলাকা হওয়ায় শ্রীপুর থেকে দৈনিক হাজারো মানুষ ঢাকা, ময়মনসিংহসহ বিভিন্ন এলাকায় যাত্রা করেন। সড়কপথে যানজটের কারণে ভোগান্তি হয়। বিকল্প হিসেবে রেলপথ ব্যবহার করা যায়। শ্রীপুরে সব আন্তনগর ট্রেন যাত্রাবিরতি দিলে সমস্যার সমাধান হয়ে যাবে। এ ক্ষেত্রে সরকার রাজস্ব পাবে।’
মো. জুবায়ের নামের আরেকজন বলেন, ‘দীর্ঘদিন ধরে শ্রীপুরের মানুষের প্রাণের দাবি আন্তনগর ট্রেনের যাত্রাবিরতি। বহু বছর ধরে কয়েক দফা এই দাবি নিয়ে মানুষ অবরোধ ও মানববন্ধন করেছে, কিন্তু কর্তৃপক্ষ সেই ব্যবস্থা নেয়নি। আমাদের দাবি, অতি দ্রুত এখানে ট্রেনের যাত্রাবিরতির ব্যবস্থা করা হোক।’
এদিকে ট্রেন আটকা পড়ে ভোগান্তিতে পড়েছেন যাত্রীরা। তাঁদের সেবা দেওয়ার জন্য কাজ করছে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকভিত্তিক সেবামূলক সংগঠন শ্রীপুর ব্লাড ব্যাংক। জরুরি রোগী ও অতি জরুরি প্রয়োজনে বিমানবন্দরগামী যাত্রীদের জন্য অ্যাম্বুলেন্স ও গাড়ির ব্যবস্থা করা হয়েছে।
উল্লেখ্য, স্থানীয় লোকজনের দাবির পরিপ্রেক্ষিতে ২০২০ সালের জানুয়ারি থেকে শ্রীপুর রেলস্টেশনে যমুনা এক্সপ্রেস ট্রেনের যাত্রাবিরতি দেওয়া হচ্ছে। রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ ট্রেনটির যাত্রাবিরতি করে সীমিতসংখ্যক টিকিট বিক্রির ব্যবস্থা করে। তবে যাত্রীর তুলনায় টিকিট ও ট্রেনের সংখ্যা একেবারেই নগণ্য বলেন দাবি করে আসছেন যাত্রীরা।
শ্রীপুর রেলস্টেশনের মাস্টার সাইদুর রহমান জানান, অবরোধের কারণে বেলা ১১টা থেকে ব্রহ্মপুত্র এক্সপ্রেস ট্রেনটি শ্রীপুরে আটকে ছিল। এ ছাড়া কাওরাইদ, রাজেন্দ্রপুর ও আশপাশের বিভিন্ন স্টেশনে অন্যান্য ট্রেন থেমে ছিল। বেলা ২টায় অবরোধ তুলে নেওয়া হয়েছে। আন্দোলনকারীদের প্রতিনিধির সঙ্গে রেল কর্তৃপক্ষ বৈঠক করে সিদ্ধান্ত নেওয়ার আশ্বাস দিয়েছে।