আন্তক্যাডার বৈষম্য নিরসনে রাজশাহীতে বিভাগীয় সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়েছে। শনিবার সকালে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ মিলনায়তনে
আন্তক্যাডার বৈষম্য নিরসনে রাজশাহীতে বিভাগীয় সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়েছে। শনিবার সকালে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ মিলনায়তনে

রাজশাহীতে বিভাগীয় সম্মেলন

উপসচিব ও তদূর্ধ্ব পদে মেধার ভিত্তিতে নিয়োগের দাবি আন্তক্যাডার বৈষম্য নিরসন পরিষদের

উপসচিব ও তদূর্ধ্ব পদের জন্য কোটাপদ্ধতি বাতিল করে উন্মুক্ত পরীক্ষার মাধ্যমে মেধার ভিত্তিতে কর্মকর্তা নিয়োগের দাবি জানিয়েছেন আন্তক্যাডার বৈষম্য নিরসন পরিষদের রাজশাহী বিভাগের কর্মকর্তারা। আজ শনিবার সকালে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ মিলনায়তনে আয়োজিত বিভাগীয় সম্মেলনে তাঁরা এ দাবি জানান। সম্মেলনে ২৫টি ক্যাডারের বিভিন্ন ব্যাচের অন্তত ৭০০ কর্মকর্তা অংশ নেন।

গণপূর্ত ক্যাডারের অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী মো. আব্দুল গোফফারের সভাপতিত্বে সম্মেলনে বিশেষ অতিথি ছিলেন পোস্টমাস্টার জেনারেল কাজী আসাদুল ইসলাম। অনুষ্ঠান পরিচালনা করেন তথ্য ক্যাডারের কর্মকর্তা মুনিরুল হাসান ও শিক্ষা ক্যাডারের কর্মকর্তা মোছা. নূরজাহান বেগম। এতে রাজশাহী বিভাগের সব জেলার আন্তক্যাডার বৈষম্য নিরসন পরিষদের সমন্বয়ক ও কেন্দ্রীয় সমন্বয়কেরা উপস্থিত ছিলেন।

সম্মেলনে বক্তারা বলেন, সরকারের উপসচিব ও তদূর্ধ্ব পদের জন্য ‘কোটাপদ্ধতি’ বাতিল করে উন্মুক্ত পরীক্ষার মাধ্যমে মেধার ভিত্তিতে কর্মকর্তা নিয়োগ করতে হবে। এ ছাড়া পেশাভিত্তিক মন্ত্রণালয় গঠন অর্থাৎ ‘ক্যাডার যার মন্ত্রণালয় তার’ এবং পক্ষপাতদুষ্ট জনপ্রশাসন সংস্কার কমিশন পুনর্গঠন করাসহ বেশ কিছু দাবি ও সুপারিশ করেন তাঁরা।

কর্মকর্তারা আরও বলেন, সংবিধানের ২৭ অনুচ্ছেদ অনুযায়ী সব নাগরিক আইনের দৃষ্টিতে সমান এবং আইনের সমান আশ্রয় লাভের অধিকারী হলেও সংবিধান লঙ্ঘন করে প্রশাসন ক্যাডার উপসচিব ও তদূর্ধ্ব পদে কোটাপদ্ধতি চালুর মাধ্যমে অন্যান্য ক্যাডারের সদস্যদের সাংবিধানিক অধিকার অনৈতিকভাবে হরণ করে চলেছে। ১৯৭৯ সালের ১ মার্চ সিনিয়র সার্ভিসেস পুল (এসএসপি) আদেশ জারি করে মেধাবী সিভিল সার্ভিস গড়ে তুলতে সব ক্যাডারের মধ্য থেকে উন্মুক্ত পরীক্ষার মাধ্যমে উত্তীর্ণ কর্মকর্তাদের উপসচিব হিসেবে নিয়োগের বিধান করা হয়। কিন্তু উপসচিব পদে নিয়োগের ক্ষেত্রে অন্যায়ভাবে কোটা আরোপ করেছে প্রশাসন ক্যাডার।

বক্তারা আরও বলেন, ১৯৯৮ সালে এক প্রজ্ঞাপনের মাধ্যমে নিজেদের জন্য ৭৫ শতাংশ কোটা রেখে অন্য সব ক্যাডারের জন্য ২৫ শতাংশ কোটা আরোপ করা হয়। সম্প্রতি তারা ২০২৪ সালের ২০ ফেব্রুয়ারি উপসচিব ও তদূর্ধ্ব পদগুলো প্রশাসন ক্যাডারের তফসিলভুক্তের পর গেজেট প্রকাশ করার মাধ্যমে কার্যত নিজেদের জন্য ১০০ শতাংশ কোটার ব্যবস্থা করে। বিভিন্ন সেক্টরে যাঁরা বিশেষজ্ঞ, তাঁদের দমিয়ে রেখে প্রশাসন ক্যাডার সব মন্ত্রণালয় দখল করে রেখেছে। এতে অন্যান্য ক্যাডারের সদস্যদের কাজের স্পৃহা ও অনুপ্রেরণা নষ্ট হচ্ছে।

কর্মকর্তারা বৈষম্য দূর করে সব ক্যাডারের মধ্যে সমতা আনা, পদ আপগ্রেডেশন, পদোন্নতিতে সমান সুযোগ, ওয়ারেন্ট অব প্রিসিডেন্সের সংশোধন, পুনর্বিন্যাসসহ বিভিন্ন ক্যাডারের সিনিয়র পদ থেকে প্রশাসন ক্যাডারের কর্মকর্তাদের প্রত্যাহার করার দাবি জানান।