রাতভর বইছে ঝিরিঝিরি হিমেল বাতাস, টিপটিপ বৃষ্টির মতো ঝরেছে কুয়াশা। সকালে চারপাশ থাকে ঘন কুয়াশায় ঢাকা, ঠান্ডা বাতাসের দাপট। সূর্যের তীব্রতা ছড়াতে না পাড়ায় অনুভূত হচ্ছে তীব্র শীত। কাবু হয়ে পড়ছে জনজীবন। পৌষের মাঝামাঝি সময়ে এসে দেশের সর্ব উত্তরের জেলা পঞ্চগড়ে এখন এমনই আবহাওয়া বিরাজ করছে।
আজ মঙ্গলবার সকাল ৯টার দিকে পঞ্চগড়ের তেঁতুলিয়ায় সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ১২ দশমিক ২ ডিগ্রি সেলসিয়াস রেকর্ড করা হয়েছে। তবে সারা দেশের মধ্যে সর্বনিম্ন তাপমাত্রা মৌলভীবাজারের শ্রীমঙ্গলে রেকর্ড করা হয়েছে। সেখানে তাপমাত্রা ছিল ৮ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস।
এর আগে গত শুক্রবার থেকে সোমবার পর্যন্ত টানা চার দিন সারা দেশের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা তেঁতুলিয়ায় রেকর্ড করা হয়েছে। এই ৪ দিন তেঁতুলিয়ার সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ৮ দশমিক ৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস থেকে ১০ ডিগ্রি সেলসিয়াসের মধ্যে ওঠানামা করেছিল। তবে মঙ্গলবার তাপমাত্রা কিছুটা বাড়লেও হিমালয়ের হিম বাতাসে বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে জনজীবন। বেলা সাড়ে ১১টা পর্যন্ত সূর্যের দেখা পাওয়া যায়নি।
স্থানীয় দিনমজুরেরা বলেন, কয়েক দিন ধরে জেঁকে বসেছে শীত। শীতের দাপট বেড়ে যাওয়ায় ভোগান্তি বেড়েছে তাঁদের। এই শীতে বাইরে বের হওয়াই কষ্টকর। অনেকের পর্যাপ্ত গরম কাপড় নেই। খড়কুটো জ্বালিয়ে শীত নিবারণের চেষ্টা করছেন।
সদর উপজেলার ফকিরপাড়া এলাকার দিনমজুর বাবুল হোসেন বলেন, সকালে ভুট্টা বীজ বপনের জন্য বের হয়েছিলেন। আজ কুয়াশা কিছুটা কম হলেও বাতাসের কারণে শরীর কাঁপছে।
জেলা শহরের ভ্যানচালক আমিরুল ইসলাম বলেন, গতকাল রাত থেকেই বাতাসের জন্য বাইরে থাকা যায় না। এবারের শীতের মধ্যে এটাই সবচেয়ে বেশি বাতাস। ঠান্ডা বাতাসে ভ্যান চালাতে খুব কষ্ট হয়।
তেঁতুলিয়া আবহাওয়া পর্যবেক্ষণাগারের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. রাসেল শাহ্ বলেন, তেঁতুলিয়ার আকাশের উপরিভাগে ঘন কুয়াশা থাকায় সূর্যের তাপ ভূপৃষ্ঠে পুরোপুরি আসছে না। বাতাসে জলীয় বাষ্পের পরিমাণ বেশি রয়েছে। এ ছাড়া বাতাস হিমালয়ে ধাক্কা খেয়ে সরাসরি তেঁতুলিয়া দিয়ে পঞ্চগড় প্রবেশ করায় এই জনপদে শীতের তীব্রতা আরও বাড়ছে। আগামী কয়েক দিন এই এলাকায় একই রকম আবহাওয়া থাকতে পারে বলে তিনি জানান।