নৌকা প্রতীকের পোস্টার লাগাতে মানা করার জেরে নোয়াখালী জেলা বিএনপির নেতা আবদুর রহমানের গ্রামের বাড়িতে হামলা ও ভাঙচুরের ঘটনা ঘটেছে। গতকাল শনিবার সন্ধ্যায় নোয়াখালীর সেনবাগ উপজেলার ছাতারপাইয়া ইউনিয়নের ঠনারপাড় গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। ভয়ে বাড়ির লোকজন পালিয়ে যাওয়ায় কোনো হতাহতের ঘটনা ঘটেনি।
আবদুর রহমানের দাবি, নোয়াখালী-২ (সেনবাগ-সোনাইমুড়ী আংশিক) আসনের আওয়ামী লীগের সংসদ সদস্য মোরশেদ আলমের অনুসারীরা হামলা, ভাঙচুর ও গুলি চালিয়েছেন।
আবদুর রহমান সেনবাগ উপজেলার ছাতারপাইয়া ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান এবং জেলা বিএনপির ত্রাণ ও পুনর্বাসন সম্পাদক। তাঁর অভিযোগ, তিন মাস আগে সংসদ সদস্য মোরশেদ আলমের নির্দেশে ঠনারপাড় বাজারে খাস জায়গায় তাঁর স্ত্রীর নামের তিনটি দোকান উচ্ছেদ করা হয়। এ কারণে তাঁর দ্বিতীয় স্ত্রী রোখসানা আক্তার স্বতন্ত্র প্রার্থী আতাউর রহমানের পক্ষে নির্বাচনী প্রচারে অংশ নেন। গতকাল সকালে তাঁর বাড়ির সামনের দেয়ালে নৌকা প্রতীকের পোস্টার লাগাতে যান সংসদ সদস্য মোরশেদ আলমের কর্মী-সমর্থকেরা। তখন রোখসানা তাঁদের বাড়ির দেয়ালে নৌকার পোস্টার লাগাতে নিষেধ করেন। এ নিয়ে তাঁদের সঙ্গে কথা-কাটাকাটি হয়। এ ঘটনায় ক্ষুব্ধ হয়ে গতকাল সন্ধ্যার দিকে সংসদ সদস্য মোরশেদ আলমের শতাধিক সশস্ত্র অনুসারী মোটরসাইকেল ও মাইক্রোবাসে করে এসে তাঁর ঠনারপাড় গ্রামের বাড়িতে হামলা চালান। হামলাকারীরা বাসভবন লক্ষ্য করে এলোপাতাড়ি গুলি ছোড়েন এবং ঘরের দরজা–জানালা ভেঙে গুঁড়িয়ে দেন। হামলাকারীদের আসতে দেখে তিনি ও তাঁর পরিবারের সদস্যরা বাড়ি থেকে পালিয়ে গিয়ে অন্য স্থানে আশ্রয় নেন। তখন হামলাকারীরা তালা ভেঙে ঘরে ঢুকে ভাঙচুর ও লুটপাট চালান। পরে ঘটনাস্থল থেকে বেশ কয়েকটি গুলির খোসা ও হামলায় ব্যবহৃত লাঠিসোঁটা উদ্ধার করেন স্থানীয় লোকজন।
অভিযোগের বিষয়ে জানার জন্য সংসদ সদস্য মোরশেদ আলমের মুঠোফোনে একাধিকবার কল করা হলেও তিনি ধরেননি। এ কারণে অভিযোগের বিষয়ে তাঁর বক্তব্য নেওয়া সম্ভব হয়নি।
সেনবাগ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নাজিম উদ্দিনের মুঠোফোনে একাধিকবার কল করা হলেও বন্ধ পাওয়া যায়। পরে জেলা পুলিশ সুপার মোহাম্মদ আসাদুজ্জামান প্রথম আলোকে বলেন, বিএনপি নেতার বাড়িতে হামলার খবর তিনি পেয়েছেন। ঘটনাস্থলে বেগমগঞ্জ সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপারকে পাঠানো হয়েছে। এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে থানার পুলিশকে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।