পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আব্দুল মোমেন
পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আব্দুল মোমেন

হলফনামা বিশ্লেষণ

পররাষ্ট্রমন্ত্রী মোমেনের আয় কমেছে, সম্পদ বেড়েছে

সিলেট-১ (নগর ও সদর) আসনের সংসদ সদস্য ও পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আব্দুল মোমেনের আয় কমেছে। তবে অস্থাবর সম্পদ বেড়ে হয়েছে দ্বিগুণের কাছাকাছি।

রিটার্নিং কর্মকর্তার কার্যালয়ে জমা দেওয়া হলফনামা থেকে এ তথ্য পাওয়া গেছে।

দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে সিলেট-১ আসনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী হিসেবে নির্বাচন করবেন এ কে আব্দুল মোমেন। ২০১৮ সালে তিনি প্রথমবারের মতো সংসদ নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন।

পররাষ্ট্রমন্ত্রী এবার হলফনামায় পেশা হিসেবে উল্লেখ করেছেন ‘রাজনীতি ও অন্যান্য’। ২০১৮ সালে তিনি পেশা হিসেবে দেখিয়েছিলেন ‘শিক্ষকতা ও অন্যান্য’। স্নাতকোত্তর পাস মোমেনের বিরুদ্ধে কোনো মামলা নেই।

হলফনামা অনুযায়ী, পররাষ্ট্রমন্ত্রীর বার্ষিক আয় এখন ২৬ লাখ টাকার কিছু বেশি, যা ২০১৮ সালে ছিল প্রায় ৩৬ লাখ টাকা। বর্তমানে বাড়ি ও দোকানভাড়া থেকে প্রায় ৪ লাখ টাকা, পেশা থেকে প্রায় ১২ লাখ ৬০ হাজার টাকা এবং ব্যাংকের মুনাফা বাবদ প্রায় ৯ লাখ ৬১ হাজার টাকা আয় করেন তিনি।

নগদ টাকা, ব্যাংকে জমা, শেয়ার ও সমজাতীয় খাত, সঞ্চয়পত্র ও সমজাতীয় খাত, ইলেকট্রনিক সরঞ্জাম ও অন্যান্য খাত মিলিয়ে মোমেনের অস্থাবর সম্পদ আছে ৪ কোটি ৭৯ লাখ টাকার, যা ২০১৮ সালে ছিল প্রায় ২ কোটি ৮৮ লাখ টাকার।

মোমেনের বর্তমানে স্থাবর সম্পদ তেমন একটা বাড়েনি। এখন তাঁর স্থাবর সম্পদ রয়েছে প্রায় ৪ কোটি ৬২ লাখ টাকার। ২০১৮ সালে তা ছিল ৪ কোটি ২৪ লাখ টাকা মূল্যের। তাঁর কোনো ঋণ নেই।

মোমেনের স্ত্রী সেলিনা মোমেনের ৮ লাখ টাকা অস্থাবর সম্পদ রয়েছে, যা ২০১৮ সালেও সমপরিমাণের ছিল।

সিলেট-১ আসনের রিটার্নিং কর্মকর্তা গতকাল রোববার যাচাই শেষে পাঁচজন প্রার্থীর মনোনয়নপত্র বৈধ ঘোষণা করেন। হলফনামা অনুযায়ী, সবচেয়ে ধনী আওয়ামী লীগের প্রার্থী এ কে আব্দুল মোমেন। এরপরই রয়েছেন স্বতন্ত্র প্রার্থী মো. মিসবাহ উদ্দিন সিরাজ। তিনি আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কমিটির তিনবারের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক।

হলফনামা ঘেঁটে দেখা যায়, মিসবাহ উদ্দিনের বার্ষিক আয় প্রায় ১৭ লাখ টাকা। তাঁর ২ কোটি টাকার অস্থাবর সম্পদ রয়েছে। তাঁর স্ত্রীর রয়েছে ১ কোটি ৬৩ লাখ টাকার অস্থাবর সম্পদ। মিসবাহের স্থাবর সম্পদ আছে ৬৮ লাখ টাকার। তাঁর স্ত্রীর স্থাবর সম্পদের মধ্যে দোতলা একটি বাড়ি আছে। তবে মিসবাহের সাড়ে ৩৭ লাখ টাকার ব্যক্তিগত ঋণ রয়েছে।

জাকের পার্টির প্রার্থী মো. আবদুল হান্নান হলফনামায় নিজেকে ‘স্বশিক্ষিত’ দাবি করেছেন। তাঁর বিরুদ্ধে কোনো মামলা নেই। তাঁর বার্ষিক আয় ৩ লাখ ৬০ হাজার টাকা। তাঁর সোয়া দুই লাখ টাকা মূল্যের এবং তাঁর স্ত্রীর তিন লাখ টাকার অস্থাবর সম্পদ রয়েছে। হান্নানের স্থাবর সম্পদের মূল্য চার লাখ টাকা। তাঁর কোনো দেনা নেই।

ইসলামী ঐক্যজোটের প্রার্থী ফয়জুল হক কামিল পাস। মাদ্রাসার এই শিক্ষকের বিরুদ্ধে কোনো মামলা নেই। তাঁর বার্ষিক আয় ১ লাখ ২০ হাজার টাকা। তাঁর ১ লাখ ৫৮ হাজার টাকার অস্থাবর সম্পদ এবং ৬০ লাখ টাকার স্থাবর সম্পদ আছে। তাঁর পাঁচ লাখ টাকার ব্যাংকঋণ আছে।

বাংলাদেশ কংগ্রেসের প্রার্থী মোহাম্মদ সোহেল আহমদ চৌধুরী স্নাতকোত্তর পাস। তাঁর বিরুদ্ধে কোনো মামলা নেই। নিজের পেশা উল্লেখ করেছেন ‘সমাজসেবা’। তাঁর কোনো আয় নেই বলে হলফনামায় উল্লেখ করেছেন। তাঁর ৮০ হাজার টাকার অস্থাবর সম্পদ রয়েছে। তবে তাঁর কোনো স্থাবর সম্পদ ও দেনা নেই।