ভ্যানচালকদের লাইসেন্স দিচ্ছেন কুষ্টিয়ার কুমারখালী উপজেলার যদুবয়রা ইউপি চেয়ারম্যান মিজানুর রহমান। আজ বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় যদুবয়রা ইউনিয়ন পরিষদ চত্বরে
ভ্যানচালকদের লাইসেন্স দিচ্ছেন কুষ্টিয়ার কুমারখালী উপজেলার যদুবয়রা ইউপি চেয়ারম্যান মিজানুর রহমান। আজ বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় যদুবয়রা ইউনিয়ন পরিষদ চত্বরে

কুষ্টিয়ার কুমারখালী

পৌর এলাকায় চালাতে ৩০০ ভ্যানকে লাইসেন্স দিলেন ইউপি চেয়ারম্যান

কুষ্টিয়ার কুমারখালী পৌর এলাকায় চলাচলের জন্য অন্তত ৩০০ ভ্যানচালককে বিনা মূল্যে লাইসেন্স দিয়েছেন যদুবয়রা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো. মিজানুর রহমান। পৌর এলাকায় বাইরের ভ্যান (পৌরসভার লাইসেন্সবিহীন) চলাচলে বাধা দেওয়ার প্রতিবাদ জানিয়ে তিনি এ উদ্যোগ নিয়েছেন। যদিও পৌর কর্তৃপক্ষ বলছে, ইউপি চেয়ারম্যানের লাইসেন্সে পৌর এলাকায় ভ্যান চালানোর সুযোগ নেই।

ভ্যানচালক ও স্থানীয় লোকজনের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, কুষ্টিয়া পৌরসভা থেকে যদুবয়রা ইউনিয়নকে গড়াই নদ বিভক্ত করেছে। বছরখানেক আগে সেখানে একটি সেতু নির্মাণ করা হয়েছে। এতে খুব সহজে কয়েক মিনিটেই যদুবয়রা ইউনিয়নের বাসিন্দারা পৌর শহরে যেতে পারে। যদুবয়রাসহ বিভিন্ন ইউনিয়নের চালকেরা সরাসরি যাত্রী নিয়ে উপজেলা শহর, পরিষদ চত্বর, হাসপাতাল, থানাসহ বিভিন্ন স্থানে চলাচল করছেন। তবে তাঁদের পৌরসভার দেওয়া লাইসেন্স না থাকায় সম্প্রতি কুমারখালী পৌর কর্তৃপক্ষ ইউনিয়ন পর্যায়ের চালকদের চাবি কেড়ে নেওয়া, অসদাচারণ, মারধরসহ নানা নির্যাতন করছে বলে অভিযোগ।

এ ঘটনার প্রতিবাদ জানিয়ে যদুবয়রা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান নিজস্ব অর্থায়নে অন্তত ৩০০ চালকের ইউনিয়ন পরিষদ থেকে বিনা মূল্যে লাইসেন্স দিয়েছেন। সাধারণত এসব লাইসেন্সের ফি ২০০ টাকা।

ইউপি চেয়ারম্যানের লাইসেন্স পাওয়া ভ্যানচালক সাইফুল ইসলাম বলেন, শহরে প্রবেশ করলেই পৌরসভার লোকজন তাঁদের ভ্যান থামিয়ে ৫০০ টাকা দিয়ে লাইসেন্স করতে চাপ দেন। ৫০০ টাকা না দিলেই তাঁদের চাবি কেড়ে নিয়ে বসিয়ে রাখেন, মারধর করেন।

শরিফ নামের আরেক চালক জানান, লাইসেন্স না থাকায় প্রতিদিনই পৌরসভার কর্মচারীরা তাঁর সঙ্গে খারাপ আচরণ করেন। সে জন্য চেয়ারম্যান মিজানুর রহমান তাঁকে ফ্রিতে লাইসেন্স দিয়েছেন। এতে ভ্যানচালকেরা ব্যাপক খুশি।

যদুবয়রা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মিজানুর রহমান বলেন, পৌর কর্তৃপক্ষ লাইসেন্সের নামে চালকদের ওপর অন্যায়, অত্যাচার, নির্যাতন ও জুলুম করছে। ঘটনার প্রতিবাদ জানাতে তিনি নিজস্ব অর্থায়নে ৩০০ চালককে বিনা মূল্য লাইসেন্স দিয়েছেন। তিনি আরও বলেন, পৌরসভার মধ্যে তিন ও চার চাকার যানবহন ঢুকলেই বিভিন্ন বেনামি স্লিপ দিয়ে চাঁদা আদায় করছে পৌর কর্তৃপক্ষ। এগুলো বন্ধের জন্য তিনি স্থানীয় সংসদ সদস্য, উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও প্রশাসনের হস্তক্ষেপ চান।

তবে এসব অভিযোগ অস্বীকার করেছেন কুমারখালী পৌরসভার প্যানেল মেয়র এস এম রফিক। তিনি বলেন, নিয়ম অনুযায়ী পৌরসভায় যানবাহন চলতে হলে লাইসেন্স করতে হবে। এখানে কোনো অনিয়ম হচ্ছে না। ইউপি চেয়ারম্যানের লাইসেন্স নিয়ে পৌর এলাকায় যানবাহন চলাচলের সুযোগ নেই।

কুমারখালী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা এস এম মিকাইল ইসলাম বলেন, বিষয়টি খোঁজখবর নিয়ে তিনি প্রয়োজনীয় উদ্যোগ গ্রহণ করবেন।