সরকারি চাকরিতে কোটা সংস্কারের দাবিতে শিক্ষার্থীদের চলমান আন্দোলন নিয়ে প্রধানমন্ত্রীর সংবাদ সম্মেলন থেকে আসা বক্তব্যকে ‘অবমাননাকর’ আখ্যা দিয়ে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে বিক্ষোভ ও অবস্থান কর্মসূচি পালন করেছেন শিক্ষার্থীরা। আজ সোমবার বেলা পৌনে ১টা থেকে ১টা ৫০ মিনিট পর্যন্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের প্যারিস রোডে অবস্থান নিয়ে এ কর্মসূচি পালন করেন তাঁরা।
কর্মসূচিতে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়, রাজশাহী প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়, বরেন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা উপস্থিত ছিলেন। গতকাল রোববার বিকেলে প্রধানমন্ত্রীর সংবাদ সম্মেলনে কোটা সংস্কার আন্দোলন নিয়ে আসা এক বক্তব্যের প্রতিক্রিয়ায় শিক্ষার্থীরা এ কর্মসূচি পালন করেন।
আন্দোলনকারীরা বলছেন, প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্যকে শিক্ষার্থীরা ঘৃণাভরে প্রত্যাখ্যান করেছেন। তাঁদের এক দফা দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত তাঁরা রাজপথ ছাড়বেন না।
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ব্যবসায় প্রশাসন বিভাগের শিক্ষার্থী সাব্বির হোসেন প্রথম আলোকে বলেন, ‘একটি গণতান্ত্রিক দেশের নাগরিক ও ছাত্র হিসেবে আমাদের দাবি উত্থাপন করতে রাজপথে এসেছি। কিন্তু আমাদের সে সুযোগ দেওয়া হচ্ছে না। কিছু কিছু বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের ওপর ছাত্রলীগ হামলা চালাচ্ছে। দেশের উন্নয়ন তখনই হবে, যখন মেধাবীদের মূল্যায়ন করা হবে। দাবি আদায় না হলে আমরা রাজপথ ছাড়ব না।’
বিক্ষোভ মিছিলে শিক্ষার্থীরা ‘চেয়েছিলাম অধিকার, হয়ে গেলাম রাজাকার’, ‘তুমি নও, আমি নই, রাজাকার রাজাকার’, ‘কে বলেছে, কে বলেছে, সরকার সরকার’, ‘এক দুই তিন চার, মেধাবীরা রাজাকার’, ‘অ্যাকশন অ্যাকশন, ডাইরেক্ট অ্যাকশন’, ‘পুলিশ দিয়ে আন্দোলন, বন্ধ করা যাবে না’, ‘লড়াই হবে সেখানে, বাধা আসবে যেখানে’ ইত্যাদি স্লোগান দেন।
এর আগে গতকাল রোববার দিবাগত রাতে একই দাবিতে ঢাকা-রাজশাহী মহাসড়কে ও প্রশাসন ভবনের সামনে অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভ করেছেন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। রাত সোয়া ১২টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান ফটকের তালা ভেঙে মহাসড়কে বিক্ষোভ শুরু করেন তাঁরা।
এর আগে দিবাগত রাত পৌনে ১২টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন হল থেকে খণ্ড খণ্ড মিছিল বের করেন শিক্ষার্থীরা। মিছিলগুলো বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ করে প্যারিস রোডে এসে জড়ো হয়।
পরে দিবাগত রাত সোয়া ১২টার দিকে একটি বিক্ষোভ মিছিল নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান ফটকের সামনের মহাসড়কে অবস্থান নেন তাঁরা। এ সময় প্রধান ফটকটি তালাবদ্ধ থাকলে সেটি ভেঙে মহাসড়কে যান আন্দোলনকারীরা। মহাসড়কে প্রায় আধাঘণ্টা অবস্থান করার পর রাত ১২টা ৪০ মিনিটের দিকে সেখান থেকে সরে এসে প্রশাসন ভবনের সামনে বিক্ষোভ করেন তাঁরা। রাত দেড়টা পর্যন্ত শিক্ষার্থীদের এই বিক্ষোভ চলে।