শিক্ষার্থী হত্যা, নিপীড়ন ও হয়রানির ঘটনার প্রতিবাদে মানববন্ধন করেন কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের কয়েকজন শিক্ষক। আজ বৃহস্পতিবার দুপুরে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক ভবনের সামনে
শিক্ষার্থী হত্যা, নিপীড়ন ও হয়রানির ঘটনার প্রতিবাদে মানববন্ধন করেন কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের কয়েকজন শিক্ষক। আজ বৃহস্পতিবার দুপুরে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক ভবনের সামনে

হত্যা-নিপীড়নের প্রতিবাদে কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের মানববন্ধন, আওয়ামী লীগের বাধা

দেশে শিক্ষার্থী হত্যা, নিপীড়ন ও হয়রানির ঘটনার প্রতিবাদে কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাধারণ শিক্ষকেরা মানববন্ধন করেছেন। আজ বৃহস্পতিবার দুপুরে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক ভবনের সামনে ‘কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাধারণ শিক্ষকবৃন্দ’—এর ব্যানারে এই কর্মসূচি পালন করা হয়।

তবে মানববন্ধনে আসতে আওয়ামী লীগ, ছাত্রলীগ ও যুবলীগের নেতা-কর্মীরা বিভিন্ন স্থানে অবস্থান নিয়ে বাধা দিয়েছেন বলে অভিযোগ করেছেন শিক্ষকেরা।

গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের সহকারী অধ্যাপক কাজী এম আনিছুল ইসলামের সঞ্চালনায় মানববন্ধনে বক্তৃতা করেন বাংলা বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক কামরুন নাহার, নৃবিজ্ঞান বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক শামীমা নাসরিন, গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের সহকারী অধ্যাপক মাহবুবুল হক ভূঁইয়া, ফার্মেসি বিভাগের সহকারী অধ্যাপক জয়চন্দ্র রাজবংশী ও বাংলা বিভাগের প্রভাষক গোলাম মাহমুদ।

মানববন্ধনে কামরুন নাহার বলেন, ১৮ জুলাই কোটা প্রথা সংস্কারের দাবিতে আন্দোলনে গিয়ে তাঁর ছেলে মেঘ আহত হয়েছেন। তিনি অনুভব করেছেন, সন্তানের আহত হওয়ার বিষয়টি কতটা কষ্টের। আর যেসব মায়েরা তাঁদের সন্তান হারিয়েছেন, তাঁরা কতটা কষ্টে আছেন। শিক্ষার্থীদের আন্দোলনে শিক্ষকদের সহযোগী হওয়ার আহ্বান জানান তিনি।

মাহবুবুল হক ভূঁইয়া বলেন, এই মানববন্ধনে অংশ নিতে তাঁর অনেক সহকর্মীকে ক্যাম্পাসে আসতে দেওয়া হয়নি। বিশ্ববিদ্যালয়ে যাঁরাই আসতে চেয়েছেন, তাঁদের ফিরিয়ে দেওয়া হয়েছে। চোখরাঙানিতে সবাই ভয় পেয়েছেন।

কাজী এম আনিছুল ইসলাম বলেন, শিক্ষকেরা ক্যাম্পাসে প্রবেশ করতে পারছেন না। এ নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনকে জানালেও তারা কোনো ব্যবস্থা নিচ্ছে না।

আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনের নেতা-কর্মীরা অবস্থান নেন। আজ বৃহস্পতিবার দুপুরে বিশ্ববিদ্যালয়ের আনসার ক্যাম্প এলাকায়

আজ দুপুর ১২টার দিকে পলিটেকনিক মোড়, ক্যাডেট কলেজ মোড় ও আনসার ক্যাম্পের সামনে আওয়ামী লীগ ও এর সহযোগী সংগঠনের নেতা-কর্মীদের সব ধরনের যানবাহনে তল্লাশি করতে দেখা যায়। যাঁরাই বিশ্ববিদ্যালয়ের অভিমুখে যাচ্ছিলেন, তাঁদের ফিরিয়ে দেওয়া হয়। আনসার ক্যাম্পের মোড়ে কুমিল্লা সদর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান আমিনুল ইসলাম নেতা-কর্মীদের নিয়ে অবস্থান নেন। ক্যাডেট কলেজ মোড়ে নেতা-কর্মীদের দাঁড়িয়ে ছিলেন কুমিল্লা সদর উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান আহমেদ নিয়াজ। তিনি বলেন, কোনো শিক্ষককে তাঁরা ফিরিয়ে দেননি। জামায়াত-বিএনপি যেন ক্যাম্পাসে প্রবেশ করতে না পারে, সে জন্য তাঁরা মোড়ে মোড়ে অবস্থান নিয়েছেন।

কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের গণিত বিভাগের অধ্যাপক মো. আবদুল হাকিম বলেন, পলিটেকনিক মোড়ে তিনিসহ তাঁর কয়েকজন সহকর্মীকে ফিরিয়ে দেওয়া হয়েছে। এ সময় তাঁর সঙ্গে ছিলেন গণিত বিভাগের অধ্যাপক খলিফা মোহাম্মদ হেলাল, একই বিভাগের আনোয়ার হোসেন, বাংলা বিভাগের অধ্যাপক জি এম মনিরুজ্জামান।

শিক্ষকদের বাধা দেওয়ার বিষয়ে জানতে চাইলে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর কাজী ওমর সিদ্দিকী বলেন, তিনি কোটবাড়ি পুলিশ ফাঁড়িতে ফোন করেন। তবে এ বিষয়ে পুলিশের পক্ষ থেকে কোনো পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে কি না, তা তিনি জানেন না।
তবে কোটবাড়ি পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ এস এম আরিফুল ইসলাম বলেন, এমন অভিযোগ কেউ দেননি। বিষয়টি তিনি জানেন না।