প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পদত্যাগের পর আজ সোমবার যশোর জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক শাহীন চাকলাদারের মালিকানাধীন পাঁচ তারকা হোটেল জাবির ইন্টারন্যাশনালে ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ করেছেন বিজয়মিছিলে থাকা বিক্ষুব্ধ জনতা। এ সময় হোটেলের ভেতরে অনেকে আটকা পড়েন। ওই ঘটনায় ছয়জনের মৃত্যু হয়েছে।
যশোর সদর হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক হারুন অর রশিদ বলেন, আগুনে পুড়ে মৃত অবস্থায় ৫ জনকে হাসপাতালে আনা হয়। এ ছাড়া একজনকে হাসপাতালে আনার পর চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি মারা যান।
হেলিকপ্টারে উদ্ধারকারী দল ১৬ তলাবিশিষ্ট হোটেলের ছাদ থেকে একজনকে উদ্ধার করে। আরও কয়েকজনকে ১৪ তলার বারান্দায় দাঁড়িয়ে উদ্ধারের জন্য নিশানা উড়াতে দেখা যায়। ফায়ার সার্ভিসের কয়েকটি দল দুই ঘণ্টা ধরে আগুন নেভানোর চেষ্টা করেও নিয়ন্ত্রণে আনতে পারেনি।
সরেজমিনে দেখা যায়, বেলা সাড়ে তিনটার দিকে যশোর শহরে বিজয়মিছিল বের করেন ছাত্র-জনতা। ওই মিছিল থেকে বিক্ষুব্ধ লোকজন চিত্রা মোড়ে অবস্থিত হোটেল জাবির ইন্টারন্যাশনালে ভাঙচুর শুরু করেন। দ্বিতীয় দফায় বিকেল চারটার দিকে তাঁরা অগ্নিসংযোগ করেন। এ সময় হোটেলের নিচ থেকে ১২, ১৩ ও ১৪ তলায় আগুন জ্বলতে দেখা যায়। খবর পেয়ে ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা আগুন নেভাতে যান। এ সময় হোটেলে আটকা পড়া কয়েকজন ১৪ তলার বারান্দায় গিয়ে উদ্ধারের জন্য হাত নেড়ে আকুতি জানান। উদ্ধারকারী একটি হেলিকপ্টার হোটেলের ছাদে ল্যান্ড করার চেষ্টা করে ব্যর্থ হয়। এ সময় আটকা পড়া এক ব্যক্তি ছাদে গিয়ে দাঁড়ালে হেলিকপ্টার তাঁকে উদ্ধার করে।
এ বিষয়ে জানতে হোটেলের মালিক শাহীন চাকলাদারের মুঠোফোনে একাধিকবার কল করা হলেও তিনি ফোন ধরেননি। এ ছাড়া হোটেলের মুঠোফোন নম্বর, ফায়ার সার্ভিস যশোরের উপপরিচালক ও যশোরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার বেলাল হোসেনের মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে কেউ কল ধরেননি।
এ ছাড়া শাহীন চাকলাদারের কাঁঠালতলা এলাকার বাসভবনে অগ্নিসংযোগ করা হয়। শহরের চারখাম্বা মোড়ে অবস্থিত শেখ রাসেলের ভাস্কর্যও ভাঙচুর করা হয়েছে।
এদিকে প্রথম আলোর যশোরের কেশবপুর প্রতিনিধি দিলীপ মোদকের বাসভবন ও পত্রিকার দোকানে হামলা ও ভাঙচুর করে অগ্নিসংযোগ করা হয়। আগুনে ক্ষয়ক্ষতি বেশি না হলেও দিলীপ মোদকের ব্যবহৃত মোটরসাইকেলটি ভাঙচুর করা হয়েছে।
এ ছাড়া কেশবপুর বাজারে অবস্থিত পৌর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক কার্তিক সাহার হার্ডওয়্যার ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান থেকে মালামাল লুট, পৌরসভার আওয়ামী লীগ–সমর্থিত কাউন্সিলর মনোয়ার হোসেনের খাবারের হোটেল ও মুদিদোকানি অশোক সাহার বাড়িতে ভাঙচুর করা হয়েছে।