খুলনার পাইকগাছায় চোখে-মুখে আঠা দিয়ে গৃহবধূকে (৪৫) দলবদ্ধ ধর্ষণের ঘটনায় করা মামলায় সন্দেহভাজন এক আসামিকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। আজ বুধবার সকালে তাঁকে গ্রেপ্তারের পর দুপুরে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়।
গ্রেপ্তার ওই ব্যক্তির (৫০) নামে থানায় তিনটি ডাকাতি মামলাসহ ছয়টি মামলা আছে। ওই ব্যক্তি পাইকগাছার একটি গ্রামের বাসিন্দা। তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদের সাত দিনের রিমান্ড চাইবে পুলিশ।
পাইকগাছা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ওবাইদুর রহমান প্রথম আলোকে বলেন, গৃহবধূকে আটকে ধর্ষণের ঘটনায় সন্দেহভাজন হিসেবে এক ব্যক্তিকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। দুপুরের দিকে আদালতে সোপর্দ করলে বিচারক তাঁকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন। কাল বৃহস্পতিবার তাঁর সাত দিনের রিমান্ড চাওয়া হবে।
চোখের পাতা ও ঠোঁটে শক্ত আঠা দিয়ে আটকে গৃহবধূকে ধর্ষণের অভিযোগে গতকাল মঙ্গলবার সন্ধ্যার পর ওই গৃহবধূর স্বামী বাদী হয়ে পাইকগাছা থানায় মামলা করেছেন। মামলার এজাহারে কারও নাম উল্লেখ করা হয়নি, অজ্ঞাতনামা আসামি উল্লেখ করা হয়েছে। ওই রাতে বাড়ি থেকে স্বর্ণালংকার ও টাকা খোয়া যাওয়ার কথাও উল্লেখ করা হয়েছে মামলায়।
মামলা, স্বজন ও প্রতিবেশী সূত্রে জানা যায়, গত রোববার রাত সাড়ে তিনটার দিকে ঘরের মধ্যে ওই গৃহবধূর গোঙানির শব্দ শুনে প্রতিবেশীরা এগিয়ে যান। পরে গৃহবধূকে ঘর থেকে হাত-পা বাঁধা ও চোখ-মুখ আঠা দিয়ে আটকানো অবস্থায় উদ্ধার করা হয়। যখন তাঁকে উদ্ধার করা হয়, তখন অচেতন ছিলেন। পরদিন সোমবার সকালে অচেতন অবস্থায় তাঁকে খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করেন স্বজনেরা। ওই দিন রাতে গৃহবধূর চেতনা ফেরে। গতকাল সকাল পর্যন্ত স্বাভাবিকভাবে তিনি কথা বলতে পারছিলেন না। দুপুরের দিকে কথা বলতে পারলেও সেদিন রাতে কী ঘটেছিল, তা স্পষ্ট করে বলতে পারেননি।
ওই গৃহবধূর স্বামী বলছেন, ওই ঘটনায় তাঁরা কাউকে সন্দেহ করতে পারছেন না। এলাকার সবার সঙ্গেই তাঁদের ভালো সম্পর্ক রয়েছে। কেন ও কী কারণে এমন ঘটনা ঘটেছে তা তিনি বুঝতে পারছেন না।
গৃহবধূর স্বাস্থ্য পরীক্ষায় ধর্ষণের সুস্পষ্ট আলামত পাওয়া গেছে। সব ধরনের নমুনা সংগ্রহ করে রেখেছে খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। সংশ্লিষ্ট চিকিৎসকেরা জানিয়েছেন, গৃহবধূকে ধর্ষণের পাশাপাশি তাঁর ওপর পাশবিক নির্যাতন করা হয়েছে। শরীরের বিভিন্ন জায়গায় নির্যাতনের চিহ্ন রয়েছে। চোখ ও মুখ আঠা দিয়ে আটকে কাউকে এভাবে নির্যাতন বা ধর্ষণ করার মতো এমন ঘটনা এর আগে তাঁরা দেখেননি।