বিয়ের পর ৯ বছর সন্তানহীন ছিলেন। দীর্ঘ প্রতীক্ষার পর অবশেষে একসঙ্গে চার সন্তানের জন্ম দিয়েছেন চুয়াডাঙ্গার জীবননগরের গৃহবধূ তহমিনা খাতুন। গতকাল বুধবার বিকেলে যশোরের একটি হাসপাতালে অস্ত্রোপচারের মাধ্যমে তিনি দুই ছেলে ও দুই মেয়েসন্তান প্রসব করেছেন।
তহমিনার স্বামী জীবননগর উপজেলার সুটিয়া গ্রামের দিনমজুর জিয়ারুল ইসলাম। ঘর আলো করে চার সন্তান জন্ম নেওয়ায় তাঁদের স্বজনেরা সবাই খুশি। তবে চার শিশুর চিকিৎসা ও পরবর্তী লালন-পালনের খরচ নিয়ে উদ্বিগ্ন পরিবারটি।
আদ্-দ্বীন সকিনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের উপপরিচালক ও গাইনি বিভাগের প্রধান শিলা পোদ্দারের তত্ত্বাবধানে তহমিনার সি-সেকশন অস্ত্রোপচার হয়। শিলা পোদ্দার আজ বৃহস্পতিবার রাতে প্রথম আলোকে জানান, শিশুদের মা তহমিনা খাতুন ভালো আছেন। অস্ত্রোপচারের পর তাঁকে হাসপাতালের চারতলায় প্রসূতি ওয়ার্ডে রেখে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। তবে নবজাতকের চারজনেরই ওজন তুলনামূলক কম। তাদের স্বাভাবিক পর্যায়ে নিতে হাসপাতালের শিশু বিশেষজ্ঞ কিশোর কুমার হালদারের তত্ত্বাবধানে শিশু নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে (এনআইসিইউতে) রাখা হয়েছে।
নবজাতকদের হাসপাতালের তিনতলার ইনকিউবেশন কক্ষে এনআইসিইউতে নিবিড় পরিচর্যায় রাখা হয়েছে।
পরিবার সূত্রে জানা গেছে, ২০১৪ সালে পারিবারিকভাবে সুটিয়া গ্রামের মৃত বিশারত আলীর ছেলে জিয়ারুল ইসলামের সঙ্গে ঝিনাইদহ জেলার কোটচাঁদপুর উপজেলার সাবদালপুর গ্রামের আমিরুল ইসলামের মেয়ে তহমিনা খাতুনের বিয়ে হয়। বিয়ের পর ৯ বছর এই দম্পতির কোনো সন্তান হয়নি। একসঙ্গে চার সন্তান জন্মের খবরে তাঁদের স্বজনেরা সবাই খুশি। নবজাতকদের হাসপাতালের তিনতলার ইনকিউবেশন কক্ষে এনআইসিইউতে নিবিড় পরিচর্যায় রাখা হয়েছে।
আজ রাতে মুঠোফোনে কথা হয় তহমিনার সঙ্গে। তিনি প্রথম আলোকে বলেন, ‘আল্লাহর কাচে এট্টা সন্তানের জন্যি স্বামী আর আমি কত দিন-রাত সুমানে কাবরাইচি, কান্দিচি। আল্লাহ আমাগের মুক পান তাকিয়েচে। আমাগের ঘর সন্তান দিয়ে ভইরে দিয়েচে। তেবে অ্যাকন সমস্যা, সন্তান কীভাবে মানুষ কইরব। গরিবের ঘরে কীভাবে বড় হবে সন্তানেরা। সেইডেই ভাববার বিষয়।’ তহমিনা জানান, বাড়ি ফিরে পরিবারের সবার সঙ্গে আলোচনা করে সন্তানদের নাম রাখা হবে।
জিয়ারুল ইসলামের সঙ্গে ফোনে যোগাযোগের চেষ্টা করে পাওয়া যায়নি। জিয়ারুলের ভাইয়ের ছেলে যশোর মাইকেল মধুসূদন কলেজের স্নাতকের ছাত্র সাগর হোসেন প্রথম আলোকে বলেন, ‘চাচার চার সন্তান হওয়ার খবর ছড়িয়ে পড়লে আমাদের বাড়িতে ঈদের খুশি নেমে এসেছে। সবাই অপেক্ষায় রয়েছে কখন নবজাতকেরা বাড়িতে আসবে।’