ময়মনসিংহের নান্দাইলে সুনীল চন্দ্র বর্মণ (৬০) নামের এক ব্যবসায়ীর কাছে চাঁদা দাবি করে অজ্ঞাতনামা দুর্বৃত্তরা তৃতীয়বারের মতো চিঠি দিয়েছে। এই চিঠিতে আগে দাবি করা এক লাখ টাকা পরিশোধের তাগাদা দেওয়া হয়েছে। অন্যথায় খারাপ পরিণতি বরণ করার হুমকি দেওয়া হয়েছে চিঠিতে।
সুনীল চন্দ্র বর্মণ নান্দাইল পৌরসভার আচারগাঁও উত্তরপাড়া মহল্লার রাধানাথ বর্মণের ছেলে। আজ শুক্রবার ঘুম থেকে উঠে বাসভবনের দরজা খোলার পর তিনি চিঠিটি দরজায় ঝুলতে দেখে আতঙ্কিত হয়ে পড়েন। বিষয়টি তিনি নিজ সম্প্রদায়ের লোকজনকে জানানোর পর থানা-পুলিশকেও জানিয়েছেন।
এর আগে গত মঙ্গলবার ৫০ হাজার টাকা চেয়ে ওই ব্যবসায়ীকে প্রথমবার চিঠি দেওয়া হয়। কিন্তু ওই ব্যবসায়ী চিঠিতে উল্লেখ করা স্থানে টাকা রেখে না আসায় গতকাল বৃহস্পতিবার এক লাখ টাকা চেয়ে দ্বিতীয় দফায় চিঠি দেওয়া হয়। প্রথমবার চিঠি পাওয়ার পরদিন গত বুধবার সুনীল নান্দাইল মডেল থানায় সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেন।
থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ফরিদ আহমেদ প্রথম আলোকে জানান, জিডিটি তদন্তের জন্য একজন পুলিশ কর্মকর্তাকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে।
এদিকে দ্বিতীয় দফায় চিঠি পাওয়ার পর ওই ব্যবসায়ী ভীতসন্ত্রস্ত হয়ে প্রশাসন ও পুলিশের সঙ্গে যোগাযোগ করেন। গতকাল সন্ধ্যার দিকে নান্দাইল উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) অরুণ কৃষ্ণ পাল ও ওসি ফরিদ আহমেদ সুনীল চন্দ্র বর্মণের বাড়িতে যান। ইউএনও গতকাল সন্ধ্যায় প্রথম আলোকে জানান, পরপর দুটি উড়োচিঠি পেয়ে ওই ব্যবসায়ী ভয় পেয়েছেন। বিষয়টি দেখার জন্য তিনি ওসিকে নিয়ে ব্যবসায়ীর বাড়িতে যান। উড়োচিঠির সূত্র উদ্ধারের জন্য পুলিশ ঘটনাটি তদন্ত করছে।
স্থানীয় লোকজন জানান, সুনীল চন্দ্র বর্মণ নান্দাইল পৌরবাজারের পেঁয়াজ-রসুন ও নানা জাতের মসলা বিক্রি করেন। দ্বিতীয় চিঠিতে অজ্ঞাতনামা ব্যক্তিরা তাঁকে ‘সুনীলদা’ বলে সম্বোধন করে লেখে, ‘প্রথমবার ৫০ হাজার টাকা চাওয়া হয়েছিল। আপনি টাকা না দিয়ে চিঠিটি নানা জায়গায় দেখিয়েছেন। এ কারণে আপনাকে দ্বিগুণ অর্থাৎ এক লাখ টাকা দিতে হবে।’ টাকাগুলো লাল কাপড়ে মুড়িয়ে শ্মশানঘাটে রেখে আসতে বলা হয়। আগে তাঁকে নদীর পাড়ে আটকানোর কথা স্মরণ করিয়ে দেওয়া হয় চিঠিতে।
আজ দেওয়া তৃতীয় চিঠিতে ওই ব্যবসায়ীকে দ্রুত টাকা পরিশোধ করার জন্য বলা হয়। টাকা দিলে ব্যবসায়ী ও তাঁর পরিবারকে দেখেশুনে রাখা হবে। অন্যথায় খারাপ পরিণতি হবে বলে হুমকি দেওয়া হয়।
নান্দাইল মডেল থানার ওসি ফরিদ আহমেদ বলেন, অজ্ঞাতনামা দুর্বৃত্তরা ওই ব্যবসায়ীকে তৃতীয়বারের মতো চিঠি দিয়েছে। বিষয়টি গোয়েন্দা সংস্থাকে জানানো হয়েছে।