নিখোঁজ বিএনপি নেতা এম ইলিয়াস আলীর স্ত্রী তাহসিনা রুশদীরের গাড়িতে হামলার ২২ মাস পর আদালতে মামলা করা হয়েছে। গত মঙ্গলবার সিলেটের সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট-২ আদালতে মামলাটি হয়। এতে সিলেটের ওসমানীনগর থানার সাবেক ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাসহ (ওসি) ৩১ জনের নাম উল্লেখ করে এবং অজ্ঞাতনামা ২০ থেকে ২২ জনকে আসামি করা হয়েছে। আসামিরা বেশির ভাগই আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মী।
সিলেটের ওসমানীনগরের গোয়ালাবাজার ইউনিয়নের করনসি গ্রামের বিএনপি কর্মী মো. মন্নান বক্স মামলাটির বাদী হয়েছেন। তাহসিনা রুশদীর বিএনপির চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা। তাঁর স্বামী নিখোঁজ ইলিয়াস আলী বিএনপির সাবেক কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক।
আদালত মামলাটি আমলে নিয়ে ওসমানীনগর থানার পুলিশকে তদন্ত করে প্রতিবেদন দাখিলের নির্দেশ দিয়েছেন। মামলার আরজিতে বলা হয়, সিলেটে বিএনপির গণসমাবেশ উপলক্ষে ২০২২ সালের ১৫ নভেম্বর বিকেল চারটার দিকে তাহসিনা রুশদীর নেতা-কর্মীদের নিয়ে ওসমানীনগরে প্রচারপত্র বিলি করতে যান। প্রচারপত্র বিলি শেষে উপজেলার উত্তর গোয়ালাবাজার দাশপাড়া রোডে নিজের গাড়িতে ওঠার সময় হামলার শিকার হন তিনি। এ সময় তাঁকে রড দিয়ে হত্যাচেষ্টা করলে নেতা-কর্মীরা আগলে রাখেন। হামলার কারণ জানতে চাইলে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করতে থাকেন হামলাকারীরা। আসামিরা ওই দিন তাহসিনা রুশদীরের গাড়ি ভাঙচুর করে। ওই দিন পুলিশের আশকারায় অভিযুক্ত ব্যক্তিদের হামলায় বিএনপি ও অঙ্গসংগঠনের নেতা-কর্মীদের অনেকে আহত হন।
ঘটনার এত দিন পর মামলা দায়েরের কারণ সম্পর্কে বাদী উল্লেখ করেন, ঘটনার সময় দেশের রাজনৈতিক পরিবেশ প্রতিকূলে থাকার কারণে মামলা করতে দেরি হয়েছে।
মামলাটির আসামিদের মধ্যে আছেন ওসমানীনগর উপজেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক জাবেদ আহমদ আম্বিয়া (৪৫), উপজেলা আওয়ামী লীগ নেতা কিবরিয়া মিয়া (৪২), কামরুল ইসলাম (৪২), লিলবর হোসেন (৩৮), রিপন মিয়া (৩২), আমজাদ হোসেন (৩০), রুবেল আহমদ (৩০), মো. নজরুল মিয়া (২৮), মুকিদ মিয়া (৪৭), শাকিল মিয়া (২৬), রাজন দেব (২৮), বেলাল আহমদ, মতিউর রহমান (৩৮), হাবিব মিয়া (২৯), জাবেদ মিয়া (২৮), নাহিদ মিয়া (৩০), কওছর মিয়া (২৮), ফারুক আহমদ (৪০), রফু মিয়া (৩২), জামাল মিয়া (২৯), ওসমানীনগর থানার সাবেক ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এস এম মাইন উদ্দীন, কনস্টেবল আশরাফুল ইসলাম, এলেক্স কাওছার (৩০), নয়ন মিয়া (২৪), খোকন মিয়া (৩৫), হুমায়ূন আহমেদ (২৬), সালমান আহমদ মাছুম (৩৮), শাহ আলমগীর (৪০), ইউসুফ হোসেন চৌধুরী (৪০), আবদাল মিয়া (৪৫) ও মিজু মিয়া (২৯)।
ওসমানীনগর থানার ওসি রাশেদুল হক প্রথম আলোকে বলেন, আদালতে অভিযোগ দায়ের হওয়ার বিষয়টি তিনি শুনেছেন। তবে কোনো আদেশ থানায় পৌঁছায়নি। আদালতের নির্দেশনা পাওয়ার পর পরবর্তী আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।