১৪ দিন আগে থেকে ওমরাহ পালনের জন্য সৌদি আরবে অবস্থান করছেন চট্টগ্রামের রাউজান উপজেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক ফিরোজ আহমেদ। অথচ পুলিশের করা ডাকাতির প্রস্তুতির মামলায় তাঁকে আসামি করা হয়েছে।
পুলিশ বলছে, গ্রেপ্তার আসামিদের কাছ থেকে প্রাপ্ত তথ্যের ভিত্তিতে ওই বিএনপি নেতাকে আসামি করা হয়েছে। এই নেতার পরিবারের দাবি, তিনি ৪ অক্টোবর চট্টলা হজ কাফেলা থেকে ওমরাহ পালনের জন্য সৌদি আরবে গেছেন। কেন তাকে আসামি করা হলো বুঝতে পারছেন তারা। একসময় তিনি স্থানীয় ইউপির নির্বাচিত সদস্য ছিলেন।
বিএনপি নেতাদের পরিবারের অভিযোগ, আসন্ন জাতীয় নির্বাচনকে কেন্দ্র করে রাজনীতিতে সক্রিয় হবে—এমন শঙ্কায় পুলিশ ইচ্ছাকৃতভাবে ফিরোজসহ অন্য বিএনপি নেতাদের মামলায় ফাঁসিয়েছে।
গত বুধবার ভোরে পুলিশের এক অভিযানের পর রাউজান থানায় ৯ জনকে আসামি করে দুটি মামলা হয়। এর মধ্যে তিনজনকে অস্ত্রসহ গ্রেপ্তার ও বাকিদের পলাতক দেখিয়েছে পুলিশ। মামলার এজাহারে বলা হয়, অভিযানের সময় মো. শাহ আলম, মো. ইউসুফ তালুকদার, মুহাম্মদ লোকমান, মো. জসিম ও ফিরোজ মেম্বার (ফিরোজ আহমেদ) ঘটনাস্থল থেকে পালিয়ে যেতে সক্ষম হয়। তবে তিনজনকে গ্রেপ্তার করতে সক্ষম হন। ওই তিনজন বর্তমানে কারাগারে আছেন।
রাউজান উপজেলা বিএনপি নেতা ফিরোজের আহমদের ছেলে চট্টগ্রাম পোর্ট সিটি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ফারদিন আহমদ প্রথম আলোকে বলেন, তাঁর বাবা ৪ অক্টোবর চট্টলা হজ কাফেলার হয়ে চট্টগ্রাম শাহ আমানত আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর দিয়ে ওমরাহ পালনের উদ্দেশে দেশ ত্যাগ করেন। বর্তমানে তিনি মক্কায় আছেন।
সৌদি আরবের মক্কায় থাকা মামলার আসামি বিএনপি নেতা ফিরোজ আহমদের সঙ্গে হোয়াটসঅ্যাপে খুদে বার্তা পাঠিয়ে যোগাযোগ করা হলে তিনি প্রথম আলোকে বলেন, গত এক যুগে তিনি এলাকায় যাননি। তবু তাঁর নামে একাধিক গায়েবি মামলা করে আসামি করা হয়েছে। ভাঙা হয়েছে তাঁর বাড়িঘর। তাঁর দাবি বিএনপির রাজনীতি করায় তাঁকে একের পর এক মামলা দিয়ে হয়রানি করা হচ্ছে।
সৌদি আরবে থাকা ব্যক্তিকে মামলার আসামি করার বিষয়ে জানতে চাইলে রাউজান থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আবদুল্লাহ আল হারুন প্রথম আলোকে বলেন, সেদিন ডাকাতির প্রস্তুতিকালে গ্রেপ্তার তিনজন আসামি ঘটনার বিবরণে তাঁদের নাম বলেছেন।
সেই অনুযায়ী মামলার এজাহারে তাঁদের আসামি করা হয়েছে।
উল্লেখ্য, গত বুধবার সকালে পুলিশ ডাকাতির প্রস্তুতিকালে রাউজানের পূর্ব গুজরা ইউনিয়নের বড় ঠাকুর পাড়া থেকে চট্টগ্রাম উত্তর জেলা যুবদলের যোগাযোগবিষয়ক সম্পাদক জানে আলমকে অস্ত্র ও দুই সহযোগীসহ গ্রেপ্তারের কথা জানায়। তবে ওই যুবদল নেতার পরিবার বলছে, রাউজানের গ্রামের বাড়ি থেকে নগরের বাসায় ফেরার পথে গত সোমবার পুলিশ আটক করে তিন দিন আটকে রাখার পর কারাগারে পাঠানো হয়েছে তাঁকে।