কামারখন্দে বিএনপি, আওয়ামী লীগ ও পুলিশের ত্রিমুখী সংঘর্ষ, আহত ২০

আওয়ামী লীগ ও পুলিশের সঙ্গে বিএনপির ত্রিমুখী সংঘর্ষ। শুক্রবার দুপুরে সিরাজগঞ্জের কামারখন্দে
ছবি: প্রথম আলো

সিরাজগঞ্জের কামারখন্দ উপজেলায় আওয়ামী লীগ ও পুলিশের সঙ্গে বিএনপির ত্রিমুখী সংঘর্ষ হয়েছে। আজ শুক্রবার দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে উপজেলার জামতৈল রেলওয়ে স্টেশন এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। এ সময় পাল্টাপাল্টি ধাওয়া, ইটপাটকেল নিক্ষেপ ও গাড়ি ভাঙচুরের ঘটনা ঘটেছে। এতে ৬ পুলিশ সদস্যসহ অন্তত ২০ জন আহত হয়েছেন। সংঘর্ষে সাবেক সংসদ সদস্য রুমানা মাহমুদসহ বিএনপি ও আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীরা আহত হয়েছেন।

পুলিশ জানিয়েছে, সিরাজগঞ্জ সহকারী পুলিশ সুপার (কামারখন্দ সার্কেল) আদনান মুস্তাফিজ ও কামারখন্দ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নুরন্নবী প্রধানসহ পুলিশের ছয় সদস্য আহত হয়েছেন।

আওয়ামী লীগ ও পুলিশের সঙ্গে বিএনপির ত্রিমুখী সংঘর্ষে পাল্টাপাল্টি ধাওয়া, ইটপাটকেল নিক্ষেপ ও গাড়ি ভাঙচুরের ঘটনা ঘটেছে। শুক্রবার দুপুরে সিরাজগঞ্জের কামারখন্দে

সিরাজগঞ্জ জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক সাইদুর রহমান প্রথম আলোকে বলেন, ‘আগামী ৩ ডিসেম্বর রাজশাহীর বিভাগীয় গণসমাবেশ সফল করতে কামারখন্দে দলীয় কার্যালয়ে আজ আলোচনা সভা করি আমরা। সেখানে কেন্দ্রীয় নেত্রী সৈয়দা আসিফা আশরাফী পাপিয়া, সাবেক সংসদ সদস্য ও জেলা বিএনপির সভাপতি রুমানা মাহমুদসহ অনেক নেতা উপস্থিত ছিলেন। সভা শেষে দলীয় কার্যালয় থেকে বের হয়ে আমরা রেলওয়ে স্টেশনে এলে আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীরা আমাদের ওপর অতর্কিত হামলা চালান। এ সময় তাঁরা রুমানা মাহমুদের গাড়ি ও বেশ কয়েকটি মোটরসাইকেল ভাঙচুর করেন। আমরা প্রতিরোধ করতে গেলে পুলিশ আমাদের ওপর গুলি চালায়। এতে রুমানা মাহমুদ, ১০ নেতা-কর্মীসহ আমি আহত হয়েছি।’

কামারখন্দ উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আনোয়ার হোসেন বলেন, ‘বিএনপির অভিযোগ সঠিক নয়। আমাদের ১৪-১৫ নেতা-কর্মী জামতৈল বাজার থেকে বাড়ি ফিরছিলেন। বিএনপির মধ্যে দুটি পক্ষ রয়েছে। তাঁদের দুই পক্ষের দ্বন্দ্বের একপর্যায়ে তাঁরা সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়েন এবং জামতৈল রেলওয়ে স্টেশন এলাকায় আওয়ামী লীগের ছয়-সাতজন নেতা-কর্মীর ওপর তাঁরা অতর্কিত হামলা চালিয়ে আহত করেন।’

পুলিশ জানিয়েছে, সংঘর্ষে তাদের ছয় সদস্য আহত হয়েছেন। শুক্রবার দুপুরে সিরাজগঞ্জের কামারখন্দে

কামারখন্দ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নুরন্নবী প্রধান বলেন, পাল্টাপাল্টি ধাওয়ার ঘটনার সময় পুলিশ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে যায়। এ সময় বিএনপির নেতা-কর্মীরা হামলা চালান। বাধ্য হয়ে ছররা গুলি চালিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনা হয়। এ ঘটনায় তিনি নিজেও আহত হয়েছেন।

সংঘর্ষের আগে দলীয় কার্যালয়ের সামনে বিএনপির সভা। শুক্রবার দুপুরে সিরাজগঞ্জের কামারখন্দে

সিরাজগঞ্জ সহকারী পুলিশ সুপার (কামারখন্দ সার্কেল) আদনান মুস্তাফিজ বলেন, ‘বিএনপির নেতা-কর্মীরা তাঁদের কর্মসূচি শেষ করে জামতৈল রেলওয়ে স্টেশন এলাকায় বেশ কিছু দোকানপাট ও মোটরসাইকেল ভাঙচুর করেন। তাঁদের এমন কাজে বাধা দিতে গেলে তাঁরা পুলিশের ওপর ইটপাটকেল ও লাঠিসোঁটা নিয়ে হামলা করেন। তাঁদের হাতে ধারালো অস্ত্রও ছিল। তাঁদের হামলায় আমি, থানার ওসি এবং ছয় পুলিশ সদস্য আহত হয়েছেন।’

সহকারী পুলিশ সুপার আদনান মুস্তাফিজ বলেন, পরিস্থিতি বর্তমানে নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। এ ঘটনায় আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।