বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকদের পাশে দাঁড়াতে নাবি আমন ধানের চারা উৎপাদন করে বিনা মূল্যে বিতরণের উদ্যোগ নিয়েছেন বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের (বাকৃবি) শিক্ষার্থীরা। এ উদ্যোগের অংশ হিসেবে বাকৃবির ৫ একর, নোয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে ১ একর, চট্টগ্রামের হাটহাজারীতে ৪ একর, লক্ষ্মীপুরে ২ একরসহ মোট ১২ একর জমিতে বীজ ছিটিয়ে চারা উৎপাদন করা হচ্ছে। এই জমির পরিমাণ আরও বাড়তে পারে। উৎপাদিত চারাগুলো কয়েক হাজার কৃষকের মধ্যে বিতরণ করা হবে।
এ কাজের প্রথম ধাপ হিসেবে গতকাল বৃহস্পতিবার বাকৃবির কৃষিতত্ত্ব বিভাগের গবেষণা মাঠের এক একর জমিতে ২০০ কেজি বিনা ধান-১৭-এর বীজ বপন শুরু হয়েছে। এ কাজের সঙ্গে যুক্ত একাধিক শিক্ষার্থী বলেন, বিনা-১৭ ধানটি স্বল্পমেয়াদি হওয়ায় কৃষকদের বন্যা–পরবর্তী ধান লাগানোর বিষয়টি সহজ হবে। এটি উচ্চফলনশীল এবং এতে সার ও কম পরিমাণে প্রয়োজন হয়। তাঁরা আশা করছেন, আগামী ১৮ থেকে ২০ দিনের মধ্যে চারা গজাবে। চারা গজানোর পর বন্যাকবলিত এলাকায় এই চারা বিতরণ করা হবে। এরপর বিশ্ববিদ্যালয়ের খামার ব্যবস্থাপনা শাখার মাঠেও আগামী শনিবার ধানের বীজ বপন করা হবে।
শিক্ষার্থীরা আরও জানান, ভারতের উজান থেকে আসা ঢলে দেশের বেশ কয়েকটি জেলা বন্যায় তলিয়ে গেছে। ফলে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে রোপা আমন ধানের বীজতলা ও চারা। এতে ধান লাগানোর উপযুক্ত সময় পার হয়ে যাওয়ার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। এ সংকট মোকাবিলায় দেশের বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় এবং নোয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষক, শিক্ষার্থী, বীজ কোম্পানি ও কৃষি উদ্যোক্তারা একত্র হয়ে ‘অ্যাগ্রি স্টুডেন্ট অ্যালায়েন্স’ গড়ে তুলেছেন। ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকদের মধ্যে বিনা মূল্যে ধানের চারা বিতরণের উদ্যোগ নিয়েছেন তাঁরা।
বাকৃবিতে আজ বীজ বপনের সময় উপস্থিত ছিলেন কৃষিতত্ত্ব বিভাগের অধ্যাপক মো. মশিউর রহমান এবং কৌলিতত্ত্ব ও উদ্ভিদ প্রজনন বিভাগের অধ্যাপক এ বি এম আরিফ হাসান খান রবিনসহ অর্ধশতাধিক শিক্ষক ও শিক্ষার্থী।
বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী আবদুল্লাহ আল মুন্না বলেন, বন্যাকবলিত কৃষকদের জন্য এই উদ্যোগকে সফল করতে সবাই সম্মিলিতভাবে কাজ করছেন এবং ভবিষ্যতেও সবার সহযোগিতা অব্যাহত থাকবে। উৎপাদিত চারাগুলো দ্রুত কৃষকের মধ্যে বিতরণের উদ্যোগ নেবেন তাঁরা।