ছাত্র-জনতার আন্দোলনে গুলিতে নিহত কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের অ্যাকাউন্টিং অ্যান্ড ইনফরমেশন সিস্টেমস (এআইএস) বিভাগের শিক্ষার্থী আবদুল কাইয়ুমের পরিবারকে সাত লাখ টাকা আর্থিক সহায়তা দেওয়া হয়েছে। গতকাল বুধবার এআইএস বিভাগের সম্মেলনকক্ষে আবদুল কাইয়ুমের স্মরণসভা ও দোয়া মাহফিল অনুষ্ঠানে তাঁর পরিবারের সদস্যদের হাতে সাত লাখ টাকার চেক হস্তান্তর করেন বিশ্ববিদ্যালয়টির উপাচার্য মো. হায়দার আলী। গতকাল রাতে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের জনসংযোগ কর্মকর্তা (অতিরিক্ত দায়িত্ব) মোহাম্মদ এমদাদুল হক।
স্মরণসভায় এআইএস বিভাগের বিভাগীয় প্রধান মোহাম্মদ বেলালের সভাপতিত্বে প্রধান অতিথির বক্তব্যে দেন উপাচার্য হায়দার আলী বলেন, দেশের সব জায়গায় বৈষম্য ছিল। ছাত্ররা গণঅভ্যুত্থানের মাধ্যমে নতুনভাবে স্বাধীনতা এনে দিয়েছেন। তাঁরা তাঁদের দায়িত্ব সঠিকভাবে পালনের মাধ্যমে অনিয়মগুলো দূর করতে সর্বদা সচেষ্ট থাকবেন। শহীদ আবদুল কাইয়ুম স্মরণে কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ে স্মৃতিফলক স্থাপনের পদক্ষেপ নেওয়া হবে।
স্মরণসভায় বিশেষ অতিথির বক্তব্যে সহ–উপাচার্য মাসুদা কামাল বলেন, ‘কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে দেশের জন্য জীবন দিয়ে আবদুল কাইয়ুম তাঁর যে ভূমিকাটুকু ছিল, সেটা পালন করে গেছেন। কিন্তু আরও যে লাখো কোটি কাইয়ুম রয়েছেন, তাঁদের কাছে দেশটাকে রেখে গেছেন তিনি। আর যাতে স্বৈরাচারের হাতে দেশ না যায়, সেদিকে লক্ষ রেখে এবং সব শহীদসহ আবদুল কাইয়ুমকে স্মরণ রেখে আমরা এই দেশটাকে সামনের দিকে এগিয়ে নিতে ভূমিকা রাখব।’
বিশ্ববিদ্যালয়ের কোষাধ্যক্ষ মোহাম্মদ সোলায়মান বলেন, দেশটাকে যাতে আর কেউ নস্যাৎ করতে না পারে, সে জন্য দৃঢ় চেতনা জাগ্রত করে সজাগ থাকতে হবে।
অনুষ্ঠানে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর আবদুল হাকিম, বিজনেস স্টাডিজ অনুষদের ডিন মোহাম্মদ আহসানউল্লাহ, বিভিন্ন বিভাগের শিক্ষক, শিক্ষার্থী, কর্মকর্তা ও কর্মচারীরা উপস্থিত ছিলেন।
৫ আগস্ট কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী আবদুল কাইয়ুম বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ‘লং মার্চ টু ঢাকা’ কর্মসূচিতে অংশ নেন। ওই দিন তিনি ঢাকার সাভারের নিউমার্কেট এলাকায় গুলিবিদ্ধ হন। পরে সাভার এনাম মেডিকেলে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান। আবদুল কাইয়ুম বিশ্ববিদ্যালয়ের অ্যাকাউন্টিং অ্যান্ড ইনফরমেশন সিস্টেমস বিভাগের ২০১৮-১৯ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী ছিলেন। তিনি সাভারের সিআরপি হাসপাতালের পাশের টগরমুড়া এলাকার বাসিন্দা মোহাম্মদ কফিল উদ্দিনের ছেলে। দুই ভাই ও এক বোনের মধ্যে তিনি ছিলেন সবার ছোট।