কামারখন্দে সংঘর্ষের ঘটনায় বিএনপির শতাধিক নেতা-কর্মীর বিরুদ্ধে মামলা

আওয়ামী লীগ ও পুলিশের সঙ্গে বিএনপির ত্রিমুখী সংঘর্ষে পাল্টাপাল্টি ধাওয়া, ইটপাটকেল নিক্ষেপ ও গাড়ি ভাঙচুরের ঘটনা ঘটেছে। শুক্রবার দুপুরে সিরাজগঞ্জের কামারখন্দে
ছবি: প্রথম আলো

সিরাজগঞ্জের কামারখন্দ উপজেলায় আওয়ামী লীগ ও পুলিশের সঙ্গে বিএনপির ত্রিমুখী সংঘর্ষে ঘটনায় মামলা করেছে আওয়ামী লীগ। গতকাল শুক্রবার রাতে কামারখন্দ উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি সেলিম রেজা বাদী হয়ে জেলা বিএনপির শতাধিক নেতা-কর্মীর বিরুদ্ধে কামারখন্দ থানায় মামলাটি করেন।

কামারখন্দ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নুরন্নবী প্রধান বলেন, মামলার এজাহারে ২৬ জনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাতনামা ১৫০ থেকে ২০০ জনকে আসামি করা হয়েছে। এজাহারে বিএনপির জেলা ও উপজেলা পর্যায়ের নেতা-কর্মীদের নাম আছে। এ ঘটনায় এখন পর্যন্ত দুজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।

বিএনপি সূত্রে জানা যায়, আসামির তালিকায় জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক সাইদুর রহমান, সহ সভাপতি নাজমুল হাসান, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক শামীম, সাংগঠনিক সম্পাদক আবু সাঈদ, জেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের সাধারণ সম্পাদক আব্দুল্লাহ আল কায়েস, কামারখন্দ উপজেলা বিএনপির সভাপতি বদিউজ্জামান ফেরদৌস ও সাধারণ সম্পাদক রেজাতে রাব্বির নাম আছে।

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, গতকাল দুপুরে কামারখন্দ উপজেলার জামতৈল রেলওয়ে স্টেশনে বিএনপি কার্যালয়ের সামনে দলটির কর্মসূচি চলাকালে আওয়ামী লীগ ও পুলিশের সঙ্গে বিএনপির ত্রিমুখী সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। এ সময় ইটপাটকেল নিক্ষেপ ও গাড়ি ভাঙচুরের ঘটনা ঘটেছে। এতে পুলিশের ৬ সদস্যসহ অন্তত ২০ জন আহত হয়েছেন।

জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক সাইদুর রহমান বলেন, ‘কামারখন্দে আমরা শান্তিপূর্ণভাবে কর্মসূচি পালন করছিলাম। এ সময় আওয়ামী লীগের সন্ত্রাসীরা আমাদের ওপর হামলা ও ককটেল নিক্ষেপ করে। শুধু তা–ই নয়, আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীদের হামলায় আমাদের সাবেক এমপিও আহত হয়েছেন। এখন পরিকল্পিতভাবে আমাদের নেতা-কর্মীদের নামে মামলা দেওয়া হয়েছে।’

এদিকে ঘটনার পর গতকাল সন্ধ্যায় জেলা আওয়ামী লীগ কার্যালয়ে প্রতিবাদ মিছিল ও সংবাদ সম্মেলন করে জেলা আওয়ামী লীগ। সেখানে জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি হোসেন আলী হাসান অভিযোগ করেন, ‘আমাদের নেতা-কর্মীরা শুক্রবার জুমার নামাজ আদায় করতে মসজিদের দিকে যাচ্ছিলেন, সে সময় বিএনপি নাশকতার উদ্দেশ্যে দেশীয় অস্ত্র ও ককটেল নিয়ে আমাদের নেতা-কর্মীদের ওপর হামলা চালায়। বিএনপি আবার দেশে জ্বালাও–পোড়াও ও বোমাবাজি শুরু করেছে।’

সহকারী পুলিশ সুপার (কামারখন্দ সার্কেল) আদনান মুস্তাফিজ বলেন, গতকাল দুপুরে সংঘর্ষের পর কামারখন্দের জামতৈল ও আশপাশের এলাকায় অভিযান চালায় পুলিশ। এ সময় উপজেলার উত্তর জামতৈল এলাকায় জেলা ট্রাক বন্দোবস্ত সমিতির কার্যালয়ের সামনে খোলা জায়গা থেকে একটি বিস্ফোরিত ও পাঁচটি অবিস্ফোরিত ককটেল উদ্ধার করা হয়েছে। সেখানে ককটেল কীভাবে এল, তা তদন্ত করে দেখছে পুলিশ।

আগামী ৩ ডিসেম্বর রাজশাহীতে বিএনপির বিভাগীয় গণসমাবেশ সফল করতে কামারখন্দে দলীয় কার্যালয়ে আলোচনা সভার আয়োজন করেছিল দলটি। সেখানে দলটির নেতা-কর্মীদের সঙ্গে আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মী ও পুলিশের সংঘর্ষ হয়। এ সময় পাল্টাপাল্টি ধাওয়া ও ইটপাটকেল নিক্ষেপের ঘটনায় সাবেক সংসদ সদস্য রুমানা মাহমুদসহ বিএনপি ও আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীরা আহত হয়েছেন।