নেত্রকোনার পূর্বধলায় সড়কে রক্তাক্ত অবস্থায় পড়ে থাকা নারীর লাশের পরিচয় মিলেছে। গতকাল শুক্রবার নিহত ওই নারীর স্বজন ও পরিচিত ব্যক্তিরা ছবি ও ব্যবহৃত পোশাক দেখে পরিচয় নিশ্চিত করেছে বলে দাবি পুলিশের। আজ শনিবার দুপুরে নেত্রকোনা জেলা পুলিশের বিশেষ শাখার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (মিডিয়া) মো. লুৎফর রহমান প্রথম আলোকে মুঠোফোনে এ তথ্য জানিয়েছেন।
পুলিশ কর্মকর্তা লুৎফর রহমান জানান, নিহত ওই নারীর নাম মনোয়ারা আক্তার (৩০)। তাঁর বাবার বাড়ি ময়মনসিংহের মুক্তাগাছা উপজেলার সানোয়ারা এলাকায়। তিনি ওই গ্রামের মৃত ইব্রাহিম মিয়ার মেয়ে। মনোয়ারা ময়মনসিংহ শহরের আকুয়া চৌরাঙ্গীর মোড় এলাকায় একটি বাসায় গৃহপরিচালিকার কাজ করতেন। চার বছর আগে তিনি আকুয়া চৌরাঙ্গীর মোড় এলাকায় মনসুর মিয়া নামের এক ব্যক্তিকে বিয়ে করেন।
লুৎফর রহমান বলেন, ওই নারীর লাশের পাশ থেকে অচেতন অবস্থায় উদ্ধার হওয়া দুই বছর বয়সী শিশুটির নাম আলিফ। শিশু আলিফ এখনো ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। ঘটনার রহস্য উদ্ঘাটনসহ জড়িত ব্যক্তিদের গ্রেপ্তার করতে পূর্বধলা থানা-পুলিশ কাজ করছে।
পুলিশ ও স্থানীয় বাসিন্দাদের সূত্রে জানা যায়, গত ২৯ মে ভোর সাড়ে পাঁচটার দিকে পূর্বধলার কাছিয়াকান্দা গ্রামের লোকজন ওই নারীর রক্তাক্ত লাশ দেখতে পান। লাশের পাশে একটি ছেলেশিশু অচেতন অবস্থায় পড়ে ছিল। পরে পুলিশ ওই নারীর লাশ উদ্ধার করে হাসপাতালের মর্গে পাঠায়। শিশুটিকে উদ্ধার করে সবশেষ ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। পরিচয় না পাওয়ায় নারীর লাশটি ময়নাতদন্ত ও নমুনা সংগ্রহ শেষে আঞ্জুমান মুফিদুল ইসলামের মাধ্যমে বেওয়ারিশ হিসেবে জেলা শহরের সাতপাই পৌর কবরস্থানে দাফন করা হয়।
শিশুটির বর্তমান অবস্থার বিষয়ে জানতে চাইলে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের উপপরিচালক জাকিউল ইসলাম জানান, শিশুটিকে প্রয়োজনীয় চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। আশা করা যায়, দ্রুতই সুস্থ হয়ে উঠবে। চিকিৎসক ও নার্সদের পাশাপাশি সমাজসেবা কার্যালয়ের লোকজনসহ শিশুটির স্বজনেরা হাসপাতালে দেখাশোনা করছেন।
পূর্বধলা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মুহাম্মদ রাশেদুল ইসলাম বলেন, ‘নিহত ওই নারী ও তাঁর পাশ থেকে অচেতন অবস্থায় উদ্ধার হওয়া শিশুটির পরিচয় শনাক্ত হয়েছে। ইতিমধ্যে আমরা ঘটনার রহস্য উদ্ঘাটনসহ জড়িত ব্যক্তিকে শনাক্ত করছি। আশা করছি, দ্রুতই জড়িত ব্যক্তিদের গ্রেপ্তার করতে সক্ষম হব। তদন্তের স্বার্থে এখনি বিষয়টি প্রকাশ করছি না।’