পটুয়াখালী সদর উপজেলায় স্বামীকে কুপিয়ে হত্যা করে স্ত্রী থানায় গিয়ে পুলিশের কাছে আত্মসমর্পণ করেছেন। গতকাল শুক্রবার রাতে পটুয়াখালী সদর থানায় আত্মসমর্পণ করেন ওই নারী। পরে পুলিশ দ্রুত সদর উপজেলার কলাতলা এলাকার ভাড়া বাসা থেকে তাঁর স্বামীর লাশ উদ্ধার করে। এ সময় হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত বঁটি উদ্ধার করা হয়েছে।
নিহত তরুণের নাম মো. রাকিব (২২)। থানায় আত্মসমর্পণ করা তাঁর স্ত্রী হলেন জিনিয়া ইসলাম (১৮)। নিহত রাকিবের বাড়ি ভোলার লালমোহন উপজেলার ফুলবাগিচা গ্রামে। তিনি পরিবারের সদস্যদের নিয়ে পটুয়াখালী শহরের কলাতলা এলাকায় ভাড়া বাসায় থাকতেন।
গৃহবধূ জিনিয়া ইসলামের বরাত দিয়ে পুলিশ জানায়, জিনিয়া ইসলামের বাবার বাড়ি পটুয়াখালীর সদর উপজেলায়। গত বছর রোজার আগে জিনিয়ার সঙ্গে মো. রাকিবের বিয়ে হয়। বিয়ের পর রাকিব স্ত্রী জিনিয়াকে নিয়ে মা-বাবা ও ছোট ভাইয়ের সঙ্গে শহরের কলাতলা এলাকায় ভাড়া বাসায় বসবাস করে আসছিলেন। রাকিব বেকার ও মাদকাসক্ত। জিনিয়াকে সন্দেহ করতেন রাকিব। বিয়ের পর থেকে এ নিয়ে জিনিয়াকে সবার সমানে শারীরিক নির্যাতন করতেন রাকিব। স্বামীর অত্যাচার সইতে না পেরে রাগ করে গত বৃহস্পতিবার সকালে তিনি বাবার বাড়ি চলে যান। গতকাল শুক্রবার বেলা ১১টার দিকে রাকিব গিয়ে তাঁকে নিয়ে আসেন।
জিনিয়ার বরাতে পুলিশ জানায়, বাসায় এনে রাকিব জিনিয়াকে নির্যাতন করেন। বিকেলে রাকিব ঘরে ঘুমিয়ে পড়েন। শ্বশুর-শাশুড়ি পাশের বাড়িতে ছিলেন। ১০ বছর বয়সী দেবর বাড়ির উঠানে খেলছিল। এই ফাঁকে জিনিয়া ঘরে থাকা বঁটি দিয়ে কুপিয়ে রাকিবকে হত্যা করেন। প্রায় তিন ঘণ্টা এভাবে স্বামীর লাশের পাশে ছিলেন তিনি। পরে রাত আটটার দিকে জিনিয়া সদর থানায় গিয়ে আত্মসমর্পণ করে স্বামী হত্যার বিবরণ দেন।
পটুয়াখালীর অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মোহাম্মদ আহম্মেদ মাঈনুল ইসলাম বলেন, নিহত রাকিবের মাথায়, বুকে ও পায়ে ধারালো অস্ত্র দিয়ে কোপানোর চিহ্ন আছে। লাশটি উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে। এ ঘটনায় মামলার প্রস্তুতি চলছে। পুলিশ হত্যার বিষয়টি তদন্ত করে দেখছে।