মৌলভীবাজারে প্রধান তিন নদ-নদীর পানি বিপৎসীমার ওপরে

মৌলভীবাজার শহরের কাছে চাঁদনীঘাটে মনু নদের পানি বিপৎসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। মঙ্গলবার বিকালে
ছবি: প্রথম আলো

মৌলভীবাজারের প্রধান তিন নদ-নদী মনু, ধলাই ও জুড়ীর পানি বিপৎসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। আজ মঙ্গলবার বিকেল ছয়টার জরিপে পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো) পানির উচ্চতার এই তথ্য জানিয়েছে। কয়েক দিনের টানা বর্ষণ, পাহাড়ি ঢল এবং উজান থেকে নেমে আসা পানিতে জেলার সব কটি নদ-নদীতে পানি বাড়ছে।

পাউবো মৌলভীবাজার কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, আজ বিকেল ছয়টায় মৌলভীবাজারে মনু নদের পানি কুলাউড়ায় রেলওয়ে ব্রিজের কাছে বিপৎসীমার ৪৩ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে এবং মৌলভীবাজার শহরের কাছে চাঁদনীঘাটে ২৬ সেন্টিমিটার ওপরে দেখা গেছে। এ ছাড়া ধলাই নদের পানি কমলগঞ্জে রেলওয়ে ব্রিজের কাছে ৩৪ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে, জুড়ী নদীর পানি ১৫৭ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। তবে কুশিয়ারা নদীর পানি শেরপুরের কাছে আজ বিকেল ছয়টায় বিপৎসীমার ১৭ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছিল।

মৌলভীবাজার শহরের কাছে চাঁদনীঘাটে মনু নদের পানি বিপৎসীমার ২৬ সেন্টিমিটার ওপরে দেখা গেছে। মঙ্গলবার বিকালে

পাউবো ও স্থানীয় বাসিন্দাদের সূত্রে জানা গেছে, তিন দিন ধরে মৌলভীবাজারে টানা বৃষ্টি হচ্ছে। এর মধ্যে গতকাল সোমবার প্রায় সারা দিন ও রাত অঝোর বর্ষণ হয়েছে। মৌলভীবাজারে গত ২৪ ঘণ্টায় ২০০ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে। চলতি মৌসুমে এক দিনে এটাই জেলায় সর্বোচ্চ বৃষ্টিপাত। এতে জেলার নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়ে পড়েছে। মনু ও ধলাই নদের পানির উৎসস্থল উজানে ভারতের কৈলাসহরে গত ২৪ ঘণ্টায় ১৭০ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত হয়েছে। এই পানি দ্রুত নিচের দিকে নেমে আসছে। এতে মনু ও ধলাই নদে হঠাৎ পানি বেড়ে বিপৎসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।

পাউবো জানিয়েছে, ধলাই নদে পানি বেড়ে যাওয়ায় কমলগঞ্জ উপজেলার ইসলামপুর, ঘোড়ামারা, তিলকপুর ও লক্ষ্মীপুর এলাকা দিয়ে ফসলের খেত ও জনপদে পানি ঢুকছে।

পাউবো মৌলভীবাজারের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. জাবেদ ইকবাল প্রথম আলোকে বলেন, এই কদিন প্রচুর বৃষ্টি হয়েছে। মনু, ধলাই ও জুড়ী নদী বিপৎসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। এই পানি বৃদ্ধিতে মনু নদে কোনো সমস্যা হয়নি; কিন্তু ধলাই নদে বাঁধের চার ভাগের তিন ভাগ ভেঙে গেছে। কিছু জায়গায় ভাঙার অপেক্ষায়। নির্বাহী প্রকৌশলী বন্যা পূর্বাভাস কেন্দ্রের বরাত দিয়ে বলেন, কৈলাসহরে এখন বৃষ্টি নেই। যদিও আকাশ মেঘাচ্ছন্ন। রাত থেকে পানি কমতে শুরু করবে। কুশিয়ারায় এখন বিপৎসীমার নিচে থাকলেও আসামে বৃষ্টি হচ্ছে। সে বৃষ্টির পানি নামলে কুশিয়ারায় পানি বাড়বে।