চুয়াডাঙ্গায় চলছে মাঝারি শৈত্যপ্রবাহ। এরই মধ্যে কাদাপানিতে কৃষিশ্রমিকেরা বীজতলা থেকে ধানের চারা তুলছেন। আজ রোববার সকালে পৌর এলাকার হাজরাহাটি মাঠে
চুয়াডাঙ্গায় চলছে মাঝারি শৈত্যপ্রবাহ। এরই মধ্যে কাদাপানিতে কৃষিশ্রমিকেরা বীজতলা থেকে ধানের চারা তুলছেন। আজ রোববার সকালে পৌর এলাকার হাজরাহাটি মাঠে

মাঝারি শৈত্যপ্রবাহের কবলে চুয়াডাঙ্গা, তাপমাত্রা দুই বছরের মধ্যে সর্বনিম্ন

চুয়াডাঙ্গায় টানা তিন দিন মৃদু শৈত্যপ্রবাহের পর আজ রোববার মাঝারি শৈত্যপ্রবাহ শুরু হয়েছে। আবহাওয়া অধিদপ্তর আজ সকাল ৯টায় চুয়াডাঙ্গায় সারা দেশের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করেছে ৭ দশমিক ৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস। কর্মকর্তারা বলছেন, জেলায় গত দুই বছরের মধ্যে এটিই সর্বনিম্ন তাপমাত্রা। এর আগে গত বছরের ২৯ জানুয়ারি ওই মৌসুমের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছিল ৮ দশমিক ২ ডিগ্রি সেলসিয়াস। আজ চুয়াডাঙ্গার পাশাপাশি সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে পার্শ্ববর্তী জেলা যশোরেও।

এদিকে প্রায় এক সপ্তাহ ধরে ঘন কুয়াশা ও মেঘলা আকাশের কারণে দিনের বেশির ভাগ সময় সূর্য দেখা না গেলেও সর্বনিম্ন তাপমাত্রার দিনে আজ সকাল থেকেই চুয়াডাঙ্গায় ঝলমলে রোদের দেখা মিলেছে। কিন্তু বাতাসের গতিবেগ বেড়ে যাওয়ায় উত্তরের হিমেল হাওয়ায় কনকনে ঠান্ডায় তীব্র শীত অনুভূত হচ্ছে। এতে কৃষিকাজে নিযুক্ত শ্রমিকসহ কর্মজীবী মানুষের দুর্ভোগ বেড়েছে।

জেলার হাটকালুগঞ্জে অবস্থিত আবহাওয়া পর্যবেক্ষণাগারের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা রকিবুল হাসান বলেন, জানুয়ারি মাস হিসেবে এ তাপমাত্রা অনেকটাই স্বাভাবিক। আজ মাঝারি শৈত্যপ্রবাহ শুরু হয়েছে। আরও কয়েক দিন এ ধরনের শৈত্যপ্রবাহ বয়ে যেতে পারে। তিনি বলেন, উত্তর থেকে হিমালয়ের বরফ গলা হিমেল বাতাস ধেয়ে আসায় রোদ ওঠার পরও বেশি শীত অনুভূত হচ্ছে। কারণ, ঘন কুয়াশা ও মেঘলা আকাশ থাকলে যে পরিমাণ হাওয়া বয়ে থাকে, কুয়াশা ও মেঘ কেটে গেলে পরিমাণ তুলনামূলক বেড়ে যায়।

আজ সকাল আটটার দিকে পৌর এলাকার হাজরাহাটি গ্রামের মাঠে দেখা যায়, তীব্র শীতের মধ্যেও কাদাপানিতে দাঁড়িয়ে বীজতলা থেকে বোরো ধানের চারা সংগ্রহ করে আবাদি জমিতে রোপণ করছেন কৃষিশ্রমিকেরা। শ্রমিক দলের প্রধান আছির উদ্দিন জানান, সকাল ছয়টার দিকে তাঁরা সদর উপজেলার মোমিনপুর ইউনিয়নের সরিষাডাঙ্গা গ্রাম থেকে বাইসাইকেলে হাজরাহাটি গ্রামে কাজে এসেছেন।

সেখানে কর্মরত শ্রমিক মাহবুল হোসেন বলেন, ‘অ্যারাম জাড় ইর আগে লাগিনি। মনডা এট্টুও চাচ্চিল না যে কাজে আসি, প্যাটতো আর মানে না। কাজ না করলি খাতি দেবে কিডা। বউ, ছেলেমেয়েদের কষ্টের কতা ভাইবে টালা জাড়ের মদ্যিই কাজে আইচি।’ একই কথা বলেন কৃষিশ্রমিক শের আলী, হাসিবুল ও ইন্নান হোসেন। ইন্নান বলেন, ‘মুরব্বিগের কাচে শুনিচি কষ্ট করলি কেষ্ট মেলে। তাই, খাইয়ে পরে বাঁইচে থাকতি টালা শীতির মদ্যিই কষ্ট কইরে কাজে আইচি। জানি না, কদ্দিন অ্যারাম কটিন ঠান্টা থাকবে।’