টঙ্গীর ইজতেমা মাঠের নিয়ন্ত্রণ নিয়ে হামলা ও হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় জড়িতদের বিচারে দাবিতে কুমিল্লায় ঢাকা–চট্টগ্রাম মহাসড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ হয়েছে। আজ বৃহস্পতিবার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে কুমিল্লা আদর্শ সদর উপজেলার আলেখারচর এলাকায় আয়োজিত কর্মসূচি থেকে তাবলিগ জামাতের মাওলানা সাদের অনুসারীদের স্থায়ীভাবে নিষিদ্ধের দাবি জানানো হয়।
‘কুমিল্লা জেলা ওলামা মাশায়েখ ও সর্বস্তরের তৌহিদি জনতার’ ব্যানারে এই কর্মসূচির আয়োজন করা হয়। বিক্ষোভে অংশগ্রহণকারীরা তাবলিগ জামাতের জোবায়েরপন্থী হিসেবে পরিচিত।
পুলিশ ও প্রত্যক্ষদর্শী সূত্রে জানা গেছে, ইজতেমা মাঠে হামলা চালিয়ে চারজনকে হত্যার প্রতিবাদে মহাসড়ক অবরোধ করেন বিক্ষোভকারীরা। এ সময় অনেকে মহাসড়কে বসে পড়েন। প্রায় আধা ঘণ্টা মহাসড়ক অবরোধের কারণে অন্তত পাঁচ কিলোমিটার এলাকাজুড়ে যানজটের সৃষ্টি হয়। খবর পেয়ে জেলা পুলিশ, হাইওয়ে পুলিশ ও জেলা প্রশাসনের কর্মকর্তারা ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনেন। পরে বেলা ১২টার দিকে পুলিশ ও প্রশাসনের কর্মকর্তারা অবরোধকারীদের সরিয়ে দিয়ে যান চলাচল স্বাভাবিক করেন। পরে সাত দফা দাবি জানিয়ে জেলা প্রশাসকের কাছে স্মারকলিপি দিয়েছেন বিক্ষোভকারীরা।
এর আগে সকাল ৯টা থেকে আলেখারচর এলাকায় বিক্ষোভ সমাবেশ ও মানববন্ধন করা হয়। সমাবেশে বক্তব্য দেন মুফতি শামছুল ইসলাম জিলানী, মাওলানা মফিজুল ইসলাম, মুফতি আমজাদ হোসাইন, মাওলানা আনিসুর রহমান আশরাফী, জসিম উদ্দিন, মাওলানা আহসানুল্লাহ প্রমুখ।
বক্তারা বলেন, রাতের অন্ধকারে সাদপন্থীদের যারা নিরীহ তাবলিগ জামাতের সাথিদের ওপর হামলা চালিয়ে হত্যা করেছে, তাদের দ্রুত গ্রেপ্তার ও ফাঁসি নিশ্চিত করতে হবে। এ ছাড়া কুমিল্লা জেলার সব মসজিদে সাদপন্থীদের কার্যক্রম নিষিদ্ধ করতে হবে। যে ধারায় সন্ত্রাসী সংগঠন হিসেবে ছাত্রলীগকে নিষিদ্ধ করা হয়েছে, তেমনি তাদেরও স্থায়ীভাবে নিষিদ্ধ করার পদক্ষেপ নিতে হবে।
কুমিল্লার কোতোয়ালি মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মহিনুল ইসলাম বলেন, তাঁরা সকাল ৯টা থেকে বিক্ষোভ সমাবেশ ও মানববন্ধন শুরু করেন। পরে মহাসড়ক অবরোধ করলে তাঁদের ১৫ থেকে ২০ মিনিটের মধ্যে সরিয়ে দেওয়া হয়। পরে জেলা প্রশাসকের কাছে স্মারকলিপি দিয়ে চলে গেছেন তাঁরা।
ময়নামতি হাইওয়ে থানার ওসি ইকবাল বাহার মজুমদার বেলা ৩টার দিকে প্রথম আলোকে বলেন, সাড়ে ১১টা থেকে প্রায় ২০ মিনিট মহাসড়কে ছিলেন তাঁরা। এতে মহাসড়কের উভয়মুখী লেনেই যানজটের সৃষ্টি হয়। তবে তাঁরা মহাসড়ক থেকে সরে যাওয়ার পরপরই যান চলাচল স্বাভাবিক হয়ে গেছে। এই মুহূর্তে কোনো সমস্যা নেই।
তাবলিগ জামাতের ইজতেমা ও দাওয়াতি কার্যক্রম নিয়ে ভারতের মাওলানা সাদ কান্ধলভী ও ঢাকার কাকরাইলের মাওলানা জোবায়েরপন্থীদের বিরোধ চলে আসছে। এর জেরে গতকাল বুধবার ভোররাতে টঙ্গীর ইজতেমা মাঠে সাদপন্থীদের হামলায় জোবায়েরপন্থী চারজন মুসল্লি নিহত হওয়ার ঘটনা ঘটে।