সেনাবাহিনীর কর্নেল মাহমুদ হাসান, ময়মনসিংহের জেলা প্রশাসক (ডিসি) দিদারে আলম মোহাম্মদ মাকসুদ চৌধুরী, পুলিশ সুপার মাছুম আহাম্মদ ভূঞাসহ অন্য কর্মকর্তারা কোতোয়ালি মডেল থানা পরিদর্শনে যান
সেনাবাহিনীর কর্নেল মাহমুদ হাসান, ময়মনসিংহের জেলা প্রশাসক (ডিসি) দিদারে আলম মোহাম্মদ মাকসুদ চৌধুরী, পুলিশ সুপার মাছুম আহাম্মদ ভূঞাসহ অন্য কর্মকর্তারা কোতোয়ালি মডেল থানা পরিদর্শনে যান

ময়মনসিংহে থানার ভেতরে কাজ করছে পুলিশ, যাচ্ছে না বাইরে

ময়মনসিংহের ১৪টি থানায় গতকাল শুক্রবার রাতে কার্যক্রম শুরু হয়েছে। তবে শুধু থানার ভেতরে চলছে এ কার্যক্রম। থানার বাইরে টহল, মামলার তদন্ত, আসামি গ্রেপ্তারসহ অন্যান্য কার্যক্রম এখনো শুরু হয়নি। পুলিশ জানিয়েছে, নিরাপত্তাহীনতার কারণে তারা বাইরের কার্যক্রমে যাচ্ছে না।

আজ শনিবার থানার বাইরে পুলিশ সদস্যদের কার্যক্রম চালাতে জেলার কোনো থানা এলাকায় দেখা যায়নি। বিভাগীয় শহরেও ট্রাফিকের দায়িত্ব আনসার ব্যাটালিয়ন ও শিক্ষার্থীরা চালিয়েছেন।

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনকে কেন্দ্র করে দেশের বিভিন্ন স্থানে আন্দোলনকারীদের সঙ্গে পুলিশের সংঘর্ষ ও প্রাণহানি হয়। শেখ হাসিনা সরকারের পতনের আগে-পরে থানা, ফাঁড়িসহ পুলিশের বেশ কিছু স্থাপনায় হামলা, ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ করা হয়। ৫ আগস্ট শেখ হাসিনার দেশত্যাগের পর সারা দেশে পুলিশি কার্যক্রম বন্ধ হয়ে যায়। পুলিশ সদস্যরা থানায় আসতে সাহস পাননি। স্থাপনা পাহারা দেওয়ার জন্য আনসার সদস্য মোতায়েন করা হয়। সেনাবাহিনীর সহায়তায় থানায় কার্যক্রম চালু হচ্ছে। গতকাল রাতে জেলার ১৪টি থানার কার্যক্রম শুরু হয় বলে জানিয়েছেন পুলিশ সুপার (এসপি) মাছুম আহাম্মদ ভূঞা।

থানার বাইরে যেতে পুলিশ সদস্যরা অনিরাপদ বোধ করায় তাঁদের জোর করে পাঠানো হচ্ছে না জানিয়ে আজ বিকেলে জেলার গৌরীপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) হাসান আল মামুন বলেন, ‘আমরা বিষয়টি ওভারকাম করার চেষ্টা করছি। পুলিশ যখন স্বাচ্ছন্দ্যে বাইরে যেতে পারবে, তখন আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে থাকবে। ছাত্র আন্দোলনে যাঁরা নেতৃত্ব দিয়েছেন এবং অন্য নেতাদের সঙ্গে আমরা কথা বলছি। আশা করছি, দ্রুত পরিস্থিতি ঠিক হয়ে যাবে।’

আজ বেলা দুইটার দিকে সেনাবাহিনীর কর্নেল মাহমুদ হাসান, ময়মনসিংহের জেলা প্রশাসক (ডিসি) দিদারে আলম মোহাম্মদ মাকসুদ চৌধুরী, পুলিশ সুপার মাছুম আহাম্মদ ভূঞাসহ অন্য কর্মকর্তারা কোতোয়ালি মডেল থানায় যান। এ সময় কোতোয়ালি মডেল থানার ওসি মাইন উদ্দিন, পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) আনোয়ার হোসেনসহ পুলিশের অন্যান্য কর্মকর্তা ও সদস্য কর্নেল মাহমুদ হাসানকে অভিনন্দন জানান।

সেনাবাহিনীর কর্নেল মাহমুদ হাসান থানায় উপস্থিত সাংবাদিকদের বলেন, ‘দেশের ক্রান্তিকালে সামরিক ও বেসামরিক প্রশাসন সবাইকে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে কাজ করতে হবে। পুলিশকে বলেছি, তাদের নিয়মিত কার্যক্রম যত দ্রুত সম্ভব তারা যেন চালু করে। যাতে দেশের মানুষ বুঝতে পারে, পুলিশ প্রশাসন অ্যাকটিভলি কাজ করছে। অন্যথায় যে দূরত্ব তৈরি হয়েছে, তাতে সুযোগসন্ধানী লোকজন কার্যক্রম গ্রহণ করে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি ঘটাতে পারে।’

কর্নেল মাহমুদ হাসান আরও বলেন, ‘পুলিশ জানিয়েছে, তাদের মনোবল ভালো আছে। তারা নিয়মিত কার্যক্রম চালু রেখেছে। পুলিশকে আত্মবিশ্বাস দিতে এখানে সেনাবাহিনীর ছোট একটি টিম মোতায়েন করেছি। তাদের (পুলিশের) যেকোনো প্রয়োজনে সেনাবাহিনী প্রস্তুত রয়েছে। পুলিশ যত দ্রুত অ্যাকটিভ হবে, তত দ্রুত আমরা সেনাবাহিনীকে আমাদের নিয়মিত কার্যক্রমে নিয়ে যাব।’

ময়মনসিংহ কোতোয়ালি মডেল থানার ওসি মো. মাইন উদ্দিন বলেন, ‘সেনাবাহিনীর কর্মকর্তারা শুভেচ্ছা বিনিময়ের জন্য এসেছিলেন। একসঙ্গে কাজ করব। থানায় সাধারণ ডায়েরিসহ অন্যান্য কার্যক্রম চলমান। তবে বাইরে টহল কার্যক্রম আমরা এখনো শুরু করিনি। থানার কার্যক্রম চলছে, আমরা সবাই রয়েছি।’