নোয়াখালীতে গ্রামীণ নারীদের উৎপাদিত হস্তশিল্প প্রদর্শনীতে দর্শনার্থীদের ভিড়। গতকাল বিকেলে শহরের একটি মিলনায়তনে
নোয়াখালীতে গ্রামীণ নারীদের উৎপাদিত হস্তশিল্প প্রদর্শনীতে দর্শনার্থীদের ভিড়। গতকাল বিকেলে শহরের একটি মিলনায়তনে

নোয়াখালীতে থেকেও বড় উদ্যোক্তা হওয়ার স্বপ্ন আফসানাদের

আফসানা অবনি। নোয়াখালী সরকারি কলেজ থেকে হিসাববিজ্ঞান বিষয়ে স্নাতক শেষ করেছেন কেবলই। কিন্তু পড়ালেখার পাশাপাশি তিনি জড়িয়ে পড়েন নারীদের ব্যবহার্য খাদি কাপড়ের বিভিন্ন ধরনের হাতব্যাগ ও বাহারি নকশার শাড়ি তৈরির কাজে। এসব করতে গিয়ে অল্প দিনেই পরিচিতি পান জেলা শহরে। হয়ে ওঠেন একজন তরুণ নারী উদ্যোক্তা। স্বপ্ন দেখছেন, নোয়াখালীতে থেকেই বড় নারী উদ্যোক্তা হওয়ার।

আফসানা অবনির মতো এ রকম নারী উদ্যোক্তাদের নিয়ে নোয়াখালী জেলা শহর মাইজদীতে হয়ে গেল গ্রামীণ নারীদের উৎপাদিত হস্তশিল্প প্রদর্শনী ও মেলা। শহরের একটি মিলনায়তনে গতকাল মঙ্গলবার দিনব্যাপী এই মেলার আয়োজন করে বেসরকারি উন্নয়ন সংগঠন পারটিসিপেটরি রিসার্চ অ্যান্ড অ্যাকশান নেটওয়ার্ক (প্রান)। আয়োজনে সার্বিক সহায়তা করে জেলা মহিলাবিষয়ক অধিদপ্তর, একশনএইড বাংলাদেশ এবং জাতিসংঘ জনসংখ্যা তহবিল। দিনব্যাপী এই প্রদর্শনী ও মেলায় ১৮ জন গ্রামীণ নারী উদ্যোক্তা অংশগ্রহণ করেন।

জলবায়ু ঝুঁকিপূর্ণ অঞ্চল নোয়াখালীর দ্বীপ হাতিয়া উপজেলার দুর্যোগের শিকার নারীদের হাতে তৈরি বিভিন্ন পণ্য নিয়ে এই প্রদর্শনী আয়োজিত হয়। প্রদর্শনীতে স্থান পায় নকশিকাঁথা, ব্লক-বাটিকের তৈরি পোশাক, শাড়ি, চুড়ি, মাটির তৈজসপত্র, দোলনা, খাদ্যসামগ্রীসহ নানা রকমের পণ্য।

উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন নোয়াখালী মহিলাবিষয়ক অধিদপ্তরের উপপরিচালক কামরুন নাহার, নোয়াখালী পল্লী উন্নয়ন সংস্থার (এনআরডিএস) নির্বাহী পরিচালক আবদুল আউয়াল ও প্রাণের কোষাধ্যক্ষ আমিনুজ্জামান।

মেলায় অংশ নেওয়া নারী উদ্যোক্তা আফসানা অবনি প্রথম আলোকে বলেন, নারী উদ্যোক্তাদের নিয়ে এ ধরনের মেলার আয়োজন খুবই প্রশংসনীয় একটি উদ্যোগ। কারণ, এমন আয়োজনের মধ্য দিয়ে নতুন উদ্যোক্তারা নিজের উৎপাদিত পণ্য সহজে সব শ্রেণির ক্রেতাদের সামনে উপস্থাপনের সুযোগ পান। তিনি নিজেও এই প্রদর্শনী ও মেলায় অংশগ্রহণ করে নতুন ক্রেতা যেমন পেয়েছেন, তেমনি ভবিষ্যতে এই মেলা তাঁর ব্যবসাকে আরও এগিয়ে নিতে সহায়ক ভূমিকা পালন করবে বলে আশা করছেন।

মেলায় অংশগ্রহ নেওয়া আরেক নারী উদ্যোক্তা ইয়াছমিন আক্তার বলেন, তিনি তিন বছর ধরে ব্লক ও বুটিকের কাজ করে পোশাক তৈরি করছেন। উৎপাদিত পণ্য তিনি অনলাইন ও সরাসরি বিক্রি করে সাড়া পেয়েছেন তিনি। প্রতিদিনই নতুন নতুন ক্রেতার কাছ থেকে পাচ্ছেন বিক্রির আদেশ। আশা করছেন, এই মেলার মধ্য দিয়ে তিনি আরও পরিচিতি পাবেন এবং ব্যবসারও আরও উন্নতি হবে।

মেলা থেকে দুটি বুটিকের শাড়ি কিনেছেন শহরের মাস্টারপাড়া এলাকার বাসিন্দা জেসমিন আক্তার। প্রথম আলোকে তিনি বলেন, অনেক সুন্দর একটি আয়োজন। তিনি লোকমুখে শুনে মেলা দেখতে এসেছেন। এসে অপেক্ষাকৃত কমমূল্যে নজরকাড়া ব্লক ও বুটিকের কাজ করা দুটো শাড়ি কিনেছেন।