রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের সঙ্গে স্থানীয় লোকজনের সংঘর্ষের ঘটনায় মামলা করেছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। আজ রোববার বিকেলে বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার অধ্যাপক আবদুস সালাম বাদী হয়ে নগরের মতিহার থানায় মামলাটি করেন।
মামলায় বিনোদপুর এলাকার ৪০০ থেকে ৫০০ জন অজ্ঞাতনামা ব্যক্তিকে আসামি করা হয়েছে। এ ঘটনায় মো. তসলিম আলী ওরফে পিটার (৪৫) নামের এক ব্যক্তিকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। তিনি নগরের খোঁজাপুর এলাকার বাসিন্দা। তিনি একটি বাসের কাউন্টারের চেইনমাস্টার। গ্রেপ্তার তসলিম প্রথমে শিক্ষার্থীদের আঘাত করেন বলে পুলিশ জানিয়েছে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের সহকারী প্রক্টর অধ্যাপক আরিফুর রহমান থানায় মামলার এজাহার জমা দেন। তিনি প্রথম আলোকে বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার বাদী হয়ে মামলাটি করেছেন। বিকেলে তিনি (আরিফুর) এজাহারটি থানায় জমা দিয়েছেন।
নগরের মতিহার থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. হাফিজুর রহমান বলেন, আজ বিকেলে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের পক্ষ থেকে মামলা করা হয়েছে। এ ঘটনায় একজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
মামলার সংক্ষিপ্ত এজাহারে উল্লেখ করা হয়েছে, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ২০১৭-২০১৮ শিক্ষাবর্ষের সমাজকর্ম বিভাগের শিক্ষার্থী আল-আমিন আকাশ গতকাল শনিবার দুপুরে বগুড়া থেকে বাসে বিশ্ববিদ্যালয়ে আসছিলেন। বাসের আসনে বসাকে কেন্দ্র করে বাসের তত্ত্বাবধায়কের (সুপারভাইজার) সঙ্গে আল-আমিনের বাগ্বিতণ্ডা হয়। বাসে থাকতে তিনি বিষয়টি মুঠোফোনে তাঁর বন্ধুদের জানালে ক্যাম্পাস থেকে তাঁর বন্ধুরা বিনোদপুর বাজারে অবস্থান নেন। সন্ধ্যা পৌনে ছয়টার দিকে বাসটি বিনোদপুর বাজারে বিশ্ববিদ্যালয়ের ফটকের সামনে পৌঁছালে আবার কথা–কাটাকাটি হয়। এ সময় বিনোদপুর বাজারের দোকানদার ও বাসের চেইনমাস্টার আল-আমিনের ওপর অতর্কিত হামলা করেন এবং তাঁর বন্ধুরা ঠেকাতে গেলে তাঁদের মারধর করে গুরুতর জখম করেন।
এজাহারে আরও বলা হয়, সন্ধ্যা ছয়টার দিকে সহকারী প্রক্টররা ঘটনাস্থলে গিয়ে উপস্থিত ছাত্রদের শান্ত করার চেষ্টা করেন। সেখানে আধা ঘণ্টা কথাবার্তা চলে। এ সুযোগে বিনোদপুর দোকানমালিকের সদস্য ও স্থানীয় অজ্ঞাতনামা ৪০০ থেকে ৫০০ জন দলবদ্ধ হয়ে দা, কাঁচি, লাঠি, রড, পাথর, ইট নিয়ে হত্যার উদ্দেশ্যে বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রবেশ করে ছাত্রদের ওপর হামলা করেন। ইট, লাঠি ও রামদার আঘাতে বাংলা বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের রকিব (২২), মার্কেটিং বিভাগের একই বর্ষের আরিফ (২২), তৃতীয় বর্ষের সাব্বিরসহ (২৩) মোট ৮৬ জন শিক্ষার্থী আহত হয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের চিকিৎসাকেন্দ্রে চিকিৎসা নিয়ে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বিভিন্ন ওয়ার্ডে ভর্তি হন। উপাচার্য ও সহ-উপাচার্য আহত শিক্ষার্থীদের মেডিকেলের চিকিৎসাসহ দেখভাল করছেন।