মুন্সিগঞ্জের সিরাজদিখান উপজেলায় দুই সন্তানসহ মায়ের লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ। আজ রোববার দুপুরে উপজেলার কেয়াইন ইউনিয়নের উত্তর ইসলামপুর গ্রাম থেকে তিনজনের লাশ উদ্ধার করা হয়। প্রতিবেশীদের ভাষ্য, ঋণের চাপে দুই ছেলেমেয়েকে বিষপান করিয়ে ফাঁসিতে ঝুলে মা আত্মহত্যা করেছেন।
মারা যাওয়া তিনজন হলেন উপজেলার ইসলামপুর গ্রামের সৌদিপ্রবাসী অলি মিয়ার স্ত্রী সায়মা বেগম (৩৩), সায়মা-অলি দম্পতির মেয়ে ছাইমুনা আক্তার (১১) ও ছেলে মো. তাওহীদ (৮)।
সায়মা বেগমের প্রতিবেশী মো. আনোয়ার হোসেন বলেন, ঋণের কিস্তির টাকা পরিশোধ করতে বিভিন্ন ব্যক্তির কাছে টাকা ধার চেয়েছিলেন সায়মা বেগম। আজ পাঁচ থেকে ছয়টি এনজিওর কিস্তি দেওয়ার কথা ছিল। এ জন্য সায়মা গতকালও অনেকের কাছে টাকা ধার চেয়েছিলেন। ঋণের চাপ সহ্য করতে না পেরে দুই ছেলেমেয়েকে বিষ পান করিয়ে সায়মা গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করেছেন।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, আট বছর আগে বিভিন্ন ব্যক্তি ও এনজিও থেকে মোটা অঙ্কের টাকা ধার করে সৌদি আরবে যান অলি মিয়া। সে সময় তাওহীদ তার মায়ের পেটে ছিল। এই আট বছরে ঋণের চাপে অলি মিয়া দেশে আসতে পারেননি। সায়মা এক এনজিও থেকে ঋণ নিয়ে আরেক এনজিওর ঋণ পরিশোধ করে কোনোমতে জীবন চালাচ্ছিলেন। প্রতিদিন বিভিন্ন ব্যক্তি ও এনজিওর লোকজন পাওনা টাকার জন্য তাঁর বাড়িতে আসতেন। এ নিয়ে প্রায়ই স্বামী অলি মিয়ার সঙ্গে মুঠোফোনে ঝগড়া হতো সায়মার। গতকালও স্বামীর সঙ্গে ঝগড়া হয়েছে তাঁর। আজ সকালে কেরানীগঞ্জের একটি এনজিওর লোকজন বাড়িতে ঋণের টাকা নিতে আসেন। তাঁরা ঘরের দরজা বন্ধ দেখতে পান। দরজায় ধাক্কাধাক্কি করলে ভেতর থেকে কোনো সাড়াশব্দ পাননি। পরে তাঁরা জানালার একটি অংশ খুলে দেখেন, সায়মা ঘরে ফাঁস লাগিয়ে ঝুলে আছেন। আর পাশে দুই শিশুর লাশ। বিষয়টি পুলিশকে জানানো হয়।
সিরাজদিখান সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মোস্তাফিজুর রহমান প্রথম আলোকে বলেন, খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে গিয়ে আজ দুপুর ১২টার দিকে পুলিশ দুই শিশুসন্তান ও তাদের মায়ের লাশ উদ্ধার করেছে। ময়নাতদন্তের জন্য লাশগুলো মুন্সিগঞ্জ জেনারেল হাসপাতালে পাঠানো হয়।