গ্রেপ্তার
গ্রেপ্তার

সিলেটে সহিংসতার ঘটনায় ১২ মামলা, গ্রেপ্তার ১৪৩

কোটা সংস্কার আন্দোলনকে কেন্দ্র করে সিলেটে সহিংসতার ঘটনায় ১২টি মামলা হয়েছে। এসব মামলায় আসামি করা হয়েছে অন্তত ১৬ হাজার। এখন পর্যন্ত ১৪৩ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। আজ বুধবার সন্ধ্যায় মহানগর ও জেলা পুলিশের সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের সঙ্গে কথা বলে এ তথ্য জানা গেছে।

পুলিশ জানিয়েছে, সিলেট মহানগরের তিন থানায় ১০টি মামলা হয়েছে। ১৭ জুলাইয়ের পর থেকে হওয়া এসব মামলায় এজাহারনামীয় আসামি ২৪৪ জন। এর বাইরে মামলাগুলোয় অজ্ঞাতনামা আসামি করা হয়েছে ১২ হাজার ৮১০ থেকে ১৬ হাজার ১৫ জনকে।

পুলিশের তথ্য অনুযায়ী, নতুন ১০টি মামলায় গ্রেপ্তার হয়েছেন ১২১ জন। এর বাইরে পুরোনো মামলায় সিলেটের মোগলাবাজার ও শাহপরান থানায় আরও ১৪ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়। এ হিসাবে নতুন ও পুরোনো মামলা মিলিয়ে মহানগরে গ্রেপ্তারের সংখ্যা ১৩৫। নতুন মামলাগুলোর মধ্যে কোতোয়ালিতে ৫টি, জালালাবাদে ৪টি ও দক্ষিণ সুরমায় ১টি।

সিলেট মহানগর পুলিশের অতিরিক্ত উপকমিশনার (গণমাধ্যম) মোহাম্মদ সাইফুল ইসলাম প্রথম আলোকে বলেন, আজ বিকেল সাড়ে পাঁচটা পর্যন্ত গত ২৪ ঘণ্টায় সিলেট মহানগরে ১৪ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। সব মিলিয়ে নতুন মামলায় নগরে ১৩৫ জন গ্রেপ্তার হয়েছেন। যাঁরা অভিযুক্ত তাঁদেরই গ্রেপ্তার করা হচ্ছে।

এদিকে জেলা পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, সিলেট জেলার জৈন্তাপুর থানায় ১৯ জুলাই একটি ও কানাইঘাট থানায় ২০ জুলাই একটি মামলা হয়। এ দুটি মামলায় চারজন করে আটজন গ্রেপ্তার হয়েছেন। জৈন্তাপুরের মামলায় এজাহারনামীয় আসামি ২৮ জন। এখানে ৮০–৯০ জনকে অজ্ঞাতনামা আসামি করা হয়েছে। অন্যদিকে কানাইঘাটে এজাহারনামীয় আসামি ৬ জন। এখানে ১০০–১৫০ জন অজ্ঞাতনামা আসামি আছেন।

সিলেট মহানগরে গ্রেপ্তার বিএনপি-জামায়াতের গুরুত্বপূর্ণ নেতা-কর্মীদের মধ্যে সিলেট সিটি করপোরেশনের সাবেক প্যানেল মেয়র ও মহানগর বিএনপির সাবেক যুগ্ম আহ্বায়ক রেজাউল হাসান লোদী, সিলেট মহানগর স্বেচ্ছাসেবক দলের সদস্যসচিব আফসর খান, জামায়াতের কেন্দ্রীয় কমিটির সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল এহসানুল মাহবুব জুবায়ের, সিলেট মহানগর জামায়াতের আমির ফখরুল ইসলাম, সেক্রেটারি জেনারেল শাহজাহান আলী ও সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল আবদুর রব উল্লেখযোগ্য।

পুলিশের একটি সূত্র জানিয়েছে, বিশেষ করে গত শুক্র ও শনিবার বিএনপি ও এর অঙ্গসংগঠনের নেতা-কর্মীরা প্রকাশ্যে দিনের বেলা নগরের বন্দরবাজার এলাকায় সিলেট প্রধান ডাকঘর ভাঙচুর, বন্দরবাজারের রাস্তায় টায়ার জ্বালিয়ে অগ্নিসংযোগ, সিলেট সিটি করপোরেশন, পুলিশের গাড়িতে ভাঙচুরসহ সরকারি কাজে সংঘবদ্ধভাবে বাধা দেন। একইভাবে শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়-সংলগ্ন এলাকায় একই মহল হামলা-ভাঙচুর-সংঘর্ষ চালিয়েছেন। এসব ঘটনার ভিডিও ফুটেজ পুলিশের কাছে আছে। অনেক প্রত্যক্ষদর্শীও আছেন। সুনির্দিষ্টভাবে অভিযুক্ত ব্যক্তিদের পুলিশ খুঁজে খুঁজে গ্রেপ্তার করছে।

সিলেট মহানগর পুলিশের উপকমিশনার (উত্তর) মো. আজবাহার আলী শেখ প্রথম আলোকে বলেন, দুষ্কৃতকারীরা সরকারি-বেসরকারি স্থাপনা ও গাড়িতে ভাঙচুরের পাশাপাশি অগ্নিসংযোগ করেছেন। অভিযুক্ত ব্যক্তিদের প্রত্যেকেই বিএনপি-জামায়াতের নেতা-কর্মী। কোটা সংস্কার আন্দোলন ঘিরে যে সহিংসতা হয়েছে, সেখানে আসলে সাধারণ শিক্ষার্থীদের অংশগ্রহণ ছিল না। মূলত বিএনপি-জামায়াতের নেতা-কর্মীরাই তাণ্ডব চালিয়েছেন। তাই মামলাগুলোয় তাঁদেরই গ্রেপ্তার করা হচ্ছে। এ ছাড়া পুরোনো মামলায় পরোয়ানাসহ সুনির্দিষ্ট কিছু অভিযোগে পুলিশ সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদেরও গ্রেপ্তার করছে।