ঈশ্বরগঞ্জে ফিরে বক্তব্য দেন লুৎফুল্লাহেল মাজেদ। গতকাল বিকেল সাড়ে চারটার দিকে ঈশ্বরগঞ্জ পৌরসভার মুক্তিযোদ্ধা মোড়ে
ঈশ্বরগঞ্জে ফিরে বক্তব্য দেন লুৎফুল্লাহেল মাজেদ। গতকাল বিকেল সাড়ে চারটার দিকে ঈশ্বরগঞ্জ পৌরসভার মুক্তিযোদ্ধা মোড়ে

ঈশ্বরগঞ্জে ফিরে বিএনপি নেতা বললেন, ‘আমাকে আয়নাঘরে আটকে রাখা হয়েছিল’

ময়মনসিংহের ঈশ্বরগঞ্জ উপজেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি লুৎফুল্লাহেল মাজেদ (বাবু) বলেছেন, সিটিটিসির (পুলিশের কাউন্টার টেররিজম অ্যান্ড ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইম) একটি দল তাঁকে তাঁর গুলশানের বাসা থেকে তুলে কথিত আয়নাঘরে নিয়ে গিয়েছিল। সেখানে আটকে রেখে তাঁর ওপর অকথ্য নির্যাতন চালানো হয়। গুরুতর অসুস্থ হলেও তাঁর চিকিৎসার ব্যবস্থা করা হয়নি। গতকাল শনিবার বেলা সাড়ে তিনটার দিকে ঈশ্বরগঞ্জে ফিরে শহরের মুক্তিযোদ্ধা মোড়ে এক পথসভায় তিনি কথাগুলো বলেন।

গত ৩০ জুলাই আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারীর বাহিনীর একটি দল লুৎফুল্লাহেল মাজেদকে তাঁর গুলশানের বাসা থেকে তুলে নিয়ে যায়। শেখ হাসিনার সরকারের পতনের পর ৬ আগস্ট তিনি মুক্তি পান। গতকাল বেলা সাড়ে তিনটার দিকে ঢাকা থেকে ঈশ্বরগঞ্জ আসেন। এ সময় তাঁর সমর্থকেরা তাঁকে স্বাগত জানান।

লুৎফুল্লাহেল মাজেদ বলেন, ‘আমাকে তুলে নিয়ে আয়নাঘরে আটকে রাখা হয়েছিল। আমার বিরুদ্ধে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে আর্থিক সহায়তা করার অভিযোগ করা হয়েছিল। আইন অনুযায়ী, কাউকে ধরে নিয়ে যাওয়ার ২৪ ঘণ্টার মধ্যে আদালতে হাজির করতে হয়। কিন্তু আমার ক্ষেত্রে তা করা হয়নি।’ তিনি জানান, সরকার পতনের পরদিন (৬ আগস্ট) গুরুতর অসুস্থ অবস্থায় সেখান থেকে তিনি মুক্তি পান। পরে চিকিৎসার জন্য রাজধানীর একটি বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি হন।

গুলশানের বাসা থেকে লুৎফুল্লাহেল মাজেদকে তুলে নিয়ে যাওয়ার একটি ভিডিও ক্লিপ তাঁর ফেসবুকে পোস্ট করেছেন। লুৎফুল্লাহেল মাজেদ বলেন, তাঁকে তুলে নিয়ে যাওয়ার বিষয়টি জানতে পেরে দলের নেতা-কর্মীরা খোঁজ নিচ্ছেন। তাঁদের উদ্বেগ ও উৎকণ্ঠা দূর করার জন্য অসুস্থ শরীর নিয়েও ঈশ্বরগঞ্জে এসেছেন।

সরকার পতনের পর অনেক স্থানে ভাঙচুর ও লুটপাট হচ্ছে। দলের নেতা-কর্মীদের উদ্দেশে লুৎফুল্লাহেল মাজেদ বলেন, ‘রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের সুযোগে অনেক সুযোগসন্ধানী ব্যক্তি ভাঙচুর ও নিরীহ মানুষের সহায়-সম্পদ লুটপাট শুরু করেছে। শুনছি, ঈশ্বরগঞ্জ উপজেলার কোনো কোনো জায়গায় এমন ঘটনা ঘটেছে। তাঁদের তালিকা করে কঠোর বিচারের সম্মুখীন করা হবে। দলের কেউ অন্যায় করলেও ছাড়া পাবে না। লক্ষ রাখবেন, অন্যায়কারীরা যেন বিএনপিতে প্রবেশের সুযোগ না পায়।’

পথসভা শেষে লুৎফুল্লাহেল মাজেদ দলীয় কার্যালয়ে গিয়ে নেতা-কর্মীদের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন। পরে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে নিহত উপজেলার জাটিয়া গ্রামের কলেজছাত্র শাহরিয়ার বিন মতিনের কবর জিয়ারত করেন।