একসময় এলাকায় সজ্জন হিসেবে পরিচিত ছিলেন সাবেক খাদ্যমন্ত্রী সাধন চন্দ্র মজুমদার। ২০১৪ সালে জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক হওয়ার পর বেপরোয়া হয়ে ওঠেন তিনি। দলে ও সরকারি কাজে একচ্ছত্র আধিপত্য প্রতিষ্ঠা করেন। আত্মীয়স্বজন ও অনুগত ব্যক্তিদের পদ দিয়ে নেতা বানান।
স্থানীয় সরকার নির্বাচনে ইউনিয়ন থেকে জেলা পর্যন্ত করেছেন মনোনয়ন-বাণিজ্য। ক্যাডার বাহিনী দিয়ে সরকারি কাজের দরপত্র নিয়ন্ত্রণ, পুকুর ও জমি দখল, চাঁদাবাজিসহ জেলার অপরাধজগৎ নিয়ন্ত্রণে রাখতেন তিনি।
নওগাঁ-১ (নিয়ামতপুর–পোরশা–সাপাহার) আসন থেকে টানা তিনবার সংসদ সদস্য হওয়ার পর ২০১৯ সালে খাদ্যমন্ত্রী হন সাধন মজুমদার। ২০২৪ সালে দ্বিতীয় দফায় খাদ্যমন্ত্রীর দায়িত্ব পান। মন্ত্রিত্বের সাড়ে পাঁচ বছরে ধান-চালের ব্যবসা নিয়ন্ত্রণে আত্মীয়স্বজন ও ঘনিষ্ঠ ব্যবসায়ীদের নিয়ে গড়ে তুলেছিলেন সিন্ডিকেট।
ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের সঙ্গে সঙ্গে আত্মগোপনে চলে যান সাধন চন্দ্র মজুমদার। ৯ অক্টোবর রাতে রাজধানীর বসুন্ধরা আবাসিক এলাকা থেকে গ্রেপ্তার হন তিনি। কিন্তু সাধনের ক্যাডাররা ধরা না পড়ায় তাঁর অপকর্ম নিয়ে এখনো মুখ খুলতে ভয় পান এলাকাবাসী।
স্বাধীনতার পর নওগাঁয় আওয়ামী লীগের রাজনীতি চলত দলের সাবেক কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক আব্দুল জলিলকে ঘিরে। বর্ষীয়ান এই রাজনীতিবিদের হাত ধরে রাজনীতিতে আসেন সাধন চন্দ্র মজুমদার। ধীরে ধীরে দলে শক্ত ভিত তৈরি করেন। আব্দুল জলিলের মৃত্যুর পর ২০১৪ সালে জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক হন। এরপর ইউনিয়ন থেকে জেলা কমিটি পর্যন্ত আওয়ামী লীগ ও এর সহযোগী সংগঠনের কোন পদে কাকে বসাবেন, তার একচ্ছত্র নিয়ন্ত্রক ছিলেন তিনি। দলে বিরুদ্ধমতের নেতা–কর্মীদের পদবঞ্চিত করে কোণঠাসা করেছেন। এমনকি হামলা–মামলাসহ নানাভাবে হয়রানির শিকার হয়েছেন তাঁরা। স্থানীয় সরকার নির্বাচনে ‘ত্যাগী’ নেতাদের মনোনয়ন না দিয়ে টাকার বিনিময়ে অযোগ্য ও অজনপ্রিয়দের মনোনয়ন দেওয়ার অভিযোগ আছে।
জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সদস্য রেজাউল ইসলাম তাঁর বিরুদ্ধে কথা বলেছিলেন। তাঁকে জেলার কমিটি থেকে বাদ দেওয়ার পাশাপাশি নিয়ামতপুর উপজেলা কমিটি থেকেও বাদ দেন সাধন চন্দ্র মজুমদার। এমনকি নওগাঁ শিল্প ও বণিক সমিতির পরিচালকের পদ থেকেও বাদ দেওয়া হয়। তাঁর রোষানল থেকে রেজাউলের বাবা এনামুল হকও বাদ যাননি।
রেজাউল ইসলাম প্রথম আলোকে বলেন, ‘২০১৮ সালের নির্বাচনে আমার বাবা দলীয় মনোনয়ন চেয়েছিলেন। তখন থেকেই আমার বাবার সাথে তাঁর (সাধন চন্দ্র মজুমদার) দূরত্ব তৈরি হয়। বাবা উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি হলেও মন্ত্রী হওয়ার পর দলীয় কোনো সভা-সমাবেশে তাঁকে ডাকতেন না।’
নিয়ামতপুর উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক জ্যেষ্ঠ সহসভাপতি খালেকুজ্জামান বলেন, ‘সাধন মজুমদার এলাকায় সাধন–লীগ প্রতিষ্ঠা করেছিলেন। নিজের ছোট ভাই মনোরঞ্জনকে উপজেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক, ছোট মেয়েকে জেলা ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সদস্য ও বড় মেয়েকে জেলা মহিলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি বানিয়েছেন। একচ্ছত্র আধিপত্যকে কাজে লাগিয়ে ইউনিয়ন এবং উপজেলা নির্বাচনে চেয়ারম্যান ও ভাইস চেয়ারম্যান পদে ব্যাপক মনোনয়ন-বাণিজ্য করেছেন। ২০২৪ সালের নির্বাচনে তাঁর বিরুদ্ধে স্বতন্ত্র প্রার্থী হওয়ায় আমাকে ও আমার নেতা–কর্মীদের মামলা-হামলা করে নির্যাতন করেন।’
আওয়ামী লীগের শিক্ষা ও মানবসম্পদ উপকমিটির সদস্য শফিকুর রহমান বলেন, ‘সাধন একচ্ছত্র রাজত্ব কায়েম করার জন্য মাদক ব্যবসায়ী, টেন্ডারবাজসহ বিতর্কিত লোকদের নেতা বানিয়েছিলেন। যাঁরা ওর বিরুদ্ধে কথা বলেছেন, তাঁদের পদে রাখেননি। শুধু কমিটি গঠনে নয়, স্থানীয় সরকার নির্বাচনে মনোনয়ন দেওয়ার ক্ষেত্রেও বাণিজ্য করেছেন।’
সরকারি বিভিন্ন দপ্তর ও ঠিকাদারদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর (এলজিইডি), পানি উন্নয়ন বোর্ড, সড়ক ও জনপথ (সওজ) বিভাগ, গণপূর্তসহ সরকারি বিভিন্ন দপ্তরের উন্নয়ন প্রকল্পে কোন কাজ কে পাবেন, অঘোষিত নিয়ন্ত্রক ছিলেন সাধন চন্দ্র মজুমদার। সংশ্লিষ্ট ঠিকাদারকে প্রকল্পের মোট বরাদ্দের ১০ থেকে ক্ষেত্রবিশেষে ১৫ শতাংশ পর্যন্ত তাঁকে কমিশন দিতো হতো আগে। দরপত্র বণ্টন ও কমিশন আদায়ের দায়িত্বে ছিলেন নওগাঁ শিল্প ও বণিক সমিতির সভাপতি ইকবাল শাহরিয়ার (রাসেল) এবং সাধনের জামাতা ও নওগাঁ পৌর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক নাসিম আহমেদ। এ ছাড়া জেলা আওয়ামী লীগের শিল্প-বাণিজ্য সম্পাদক মোস্তাফিজুর রহমান, সাংগঠনিক সম্পাদক আহসানুর রহমান ও ঠিকাদার আলী আকবর ছিলেন সিন্ডিকেট সদস্য।
এলজিইডি ও সওজের তালিকাভুক্ত ঠিকাদার মনিরুল ইসলাম প্রথম আলোকে বলেন, ‘ইকবাল, নাসিম, মোস্তাফিজুর, আহসানুরসহ সাধন চন্দ্র মজুমদারের অনুগত গুটিকয় ঠিকাদার ছাড়া বেশির ভাগ দরপত্রে অন্য কেউ অংশ নিতে পারতেন না। অধিকাংশ ক্ষেত্রেই কাজ পেতেন সাধনের অনুগত ঠিকাদারেরা। লটারি মাধ্যমে সাধারণ ঠিকাদাররা কাজ পেলেও প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে চুক্তিপত্র করতে বাধা দেওয়া হতো। সাধনকে ১০–১৫ শতাংশ কমিশন দেওয়া ছাড়া কাজ করা যেত না।’
তবে এলজিইডির জেলার নির্বাহী প্রকৌশলী তোফায়েল আহমেদ দাবি করেন, ‘এখন সব দরপত্রই অনলাইনে জমা দিতে হয়। নির্দিষ্ট কোনো ব্যক্তিকে কাজ পাইয়ে দেওয়ার সুযোগ নেই। তবে কাজ পাওয়ার পর কোনো ঠিকাদার কাকে কমিশন দিয়ে কাজ করছেন, সেটা দেখার বিষয় ডিপার্টমেন্টের নয়।’
ইকবাল শাহরিয়ার ও নাসিম আহমেদ এখন পলাতক। এ বিষয়ে মুঠোফোনে ও হোয়াটসঅ্যাপে বার্তা দিয়েও তাঁদের বক্তব্য জানা যায়নি। ঠিকাদার আহসানুর রহমান প্রথম আলোকে বলেন, ‘বিগত ১০-১২ বছরে আমি যেসব ঠিকাদারি কাজ করেছি, সব নিয়মতান্ত্রিকভাবেই পেয়েছি। সাধন মজুমদার কিংবা অন্য কেউ আমাকে কাজ পাইয়ে দেননি। অন্য ঠিকাদারের কাজে বাধা বা কারও কাছ থেকে কমিশন আদায়ে আমার কোনো সম্পৃক্ততা ছিল না।’
সাধন মজমুদারের নির্বাচনী এলাকা নিয়ামতপুর, পোরশা ও সাপাহারে কয়েক শ সরকারি পুকুর ও জলাশয় আছে। ২০০৯ সাল থেকে ৫ আগস্ট পর্যন্ত এসবের অধিকাংশই সাধন মজুমদারের ভাই মনোরঞ্জন মজুমদার ওরফে মনা মজুমদারের দখলে ছিল। আগে এসব পুকুরে স্থানীয় লোকজন সরকারকে রাজস্ব দিয়ে মাছ চাষ করতেন। সাধন মজুমদার সংসদ সদস্য হওয়ার পর তাঁর ভাই এসব পুকুরের অঘোষিত মালিক বনে যান। এমনকি অনেকের ব্যক্তিগত মালিকানাধীন পুকুরও দখল করেছেন।
পোরশার ঘাটনগর গ্রামের সেকেন্দার আলী বলেন, ঘাটনগরের ছয়ঘাটি, পাহাড়িয়া, নোসনাহারসহ অনেক পুকুর দখল করেন মনা মজুমদার। দলীয় লোকদের দিয়ে এসব পুকুর তিনি দখলে রাখতেন। বিনিময়ে মোটা অঙ্কের অর্থ নিতেন। সরকারকে রাজস্ব না দিয়ে এখন পর্যন্ত মনা মজুমদারের লোকজন মাছ চাষ করছেন।
নিয়ামতপুরের বিষ্ণুপুর গ্রামের হাকিম মণ্ডল বলেন, ‘২০০৯ সালে আওয়ামী লীগ ক্ষমতার আসার পর মনা মজুমদারের ক্যাডাররা আমার একটি পুকুর দখল করে নেয়। পৈতৃক সূত্রে পাওয়া পুকুরে গত ১৫ বছর যেতে পারিনি। থানায় অভিযোগ, আদালতে মামলা করেও প্রতিকার পাইনি। নিরূপায় হয় আল্লাহর কাছে বিচার দিয়েছিলাম।’
পুকুর ছাড়াও সরকারি ও ব্যক্তিগত আবাদি জমি দখলের অভিযোগ আছে সাধন মজুমদারের ভাই মনা মজুমদার, ভাতিজা দেবব্রত মজুমদার, উত্তম কুমার মজুমদার ও উজ্জ্বল মজুমদার এবং ভাগনে উৎপল কুমার পিন্টুর বিরুদ্ধে। পোরশার মিনা বাজার এলাকার বাসিন্দা ও উপজেলা বিএনপির সাবেক সহসভাপতি তৌফিকুর রহমান বলেন, ‘সাধন মজুমদার ও তাঁর ভাই-ভাতিজারা আমার ও আমার পরিবারের ২০০ বিঘার বেশি জমি দখল করে নিয়েছে। সাধনের ভাই-ভাতিজা ও পোষ্য ক্যাডারদের ভয়ে এসব জমির আশপাশে যেতে পারিনি। ৫ আগস্টের পর দখলদারেরা সবাই এলাকাছাড়া।’
সাধন মজুমদারের জন্মভূমি শিবপুরের পাশের কুশমইল গ্রামের হজরত আলী (৭৫) বলেন, ‘সাধন মজুমদার মন্ত্রী হওয়ার পর হঠাৎ পুরো পরিবার যেন আলাদিনের চেরাগ পেয়ে যায়। তাঁর ভাই, ভাতিজা ও ভাগনেরা চেয়ারম্যান-এমপি না হলেও একেকজন চেয়ারম্যান-এমপির মতোই ক্ষমতাশালী। সরকারি পুকুর ও হাটবাজার সব তাঁদের দখলে ছিল।’
৫ আগস্টের পর মনোরঞ্জন মজুমদার পলাতক। অভিযোগের বিষয়ে তাঁর মুঠোফোন ও হোয়াটসঅ্যাপে যোগাযোগ করেও পাওয়া যায়নি। সাধনের ভাতিজা উত্তম কুমার মজুমদার প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমাদের বিরুদ্ধে দখলবাজির যেসব অভিযোগ করা হচ্ছে, সেগুলোর ভিত্তি নেই। অভিযোগ সত্যি হলে দু–একটি হলেও থানা বা আদালতে মামলা হতো। এখন রাজনৈতিক পরিবর্তনের সুযোগ নিয়ে আমাদের পরিবারকে হেয় করার জন্য পরিকল্পিতভাবে নানা প্রোপাগান্ডা ছড়ানো হচ্ছে।’
উৎপাদনে প্রসিদ্ধ নওগাঁয় ধান ও চালের দামে সামান্য হেরফের হলেই দেশের বাজারে প্রভাব পড়ে। চাল ব্যবসায় অভিজ্ঞ সাবেক খাদ্যমন্ত্রী সাধন মজুমদার ধান-চালের ব্যবসা নিয়ন্ত্রণে আত্মীয়স্বজন ও ঘনিষ্ঠ ব্যবসায়ীদের নিয়ে একটি সিন্ডিকেট গড়ে তুলেছিলেন। তাঁদের বিরুদ্ধে চালের বাজার অস্থির করে বাড়তি মুনাফা লুটে নেওয়ার অভিযোগ আছে।
পারিবারিক সূত্রে জানা গেছে, ১৯৭২ থেকে ২০০৯ সাল পর্যন্ত সরাসরি ধান-চাল ব্যবসা ও সারের ডিলারশিপের ব্যবসা করেছেন সাধন মজুমদার। এখন পারিবারিক ব্যবসা দেখাশোনা করেন তাঁর চাচাতো ভাই মুরালী মোহন মজুমদারের ছেলে দেবব্রত মজুমদার। এ ছাড়া তাঁর ভাই মনোরঞ্জন মজুমদারের নিয়ামতপুরে একটি চালকল আছে। মন্ত্রী থাকতে বিভিন্ন সময় নিয়ামতপুরে অবৈধ মজুতবিরোধী অভিযান চালানো হলেও মনোরঞ্জনের গুদামে কখনো অভিযান চালানো হয়নি। সেখানে অবৈধভাতে ধান–চাল মজুতের অভিযোগ আছে।
জেলা চালকল মালিক গ্রুপের সাধারণ সম্পাদক ফরহাদ মজুমদার বলেন, ‘চালের বাজার নিয়ন্ত্রণে আমরা প্রকৃত মিলমালিকেরা তাঁকে (সাধন চন্দ্র মজুমদার) বিভিন্ন সময় পরামর্শ দিয়েছিলাম। কিন্তু তিনি সেগুলো গ্রহণ করেননি; বরং চাল ব্যবসায়ী নামধারী কিছু মজুতদার ছিলেন ওনার খুব কাছের। তাঁদের পরামর্শেই তিনি চলতেন। এ জন্য চাল ব্যবসায় অভিজ্ঞ হলেও তিনি চালের বাজার নিয়ন্ত্রণে ব্যর্থ হয়েছেন।’
২০০৮ সালে সংসদ নির্বাচনের সময় সাধন চন্দ্র মজুমদারের স্থাবর-অস্থাবর সম্পদের পরিমাণ ছিল ১০ লাখ ৪৩ হাজার ৫০০ টাকা। বছরে আয় করতেন আড়াই লাখ টাকা। তিন মেয়াদে সংসদ সদস্য ও এক মেয়াদে মন্ত্রীর দায়িত্ব পালনের পর ২০২৪ সালে তাঁর আয় ও সম্পদের হিসাব হচ্ছে কোটিতে। বর্তমানে তাঁর মোট সম্পদের পরিমাণ ১০ কোটি ২৩ লাখ ১৮ হাজার ৬৬০ টাকা। বার্ষিক আয় চার কোটির কাছাকাছি। সেই হিসাবে ১৫ বছরে সম্পদ বেড়েছে ৯৮ গুণ। আর বার্ষিক আয় বেড়েছে ১৫৭ গুণের বেশি।
২০২৪ সালে নির্বাচন কমিশনে দাখিল করা হলফনামা অনুযায়ী, তাঁর স্থাবর সম্পদের মধ্যে আছে ৫০ লাখ ৭৫ হাজার টাকা মূল্যের কৃষিজমি, ৪৫ লাখ ৬৪ হাজার ৯৩২ টাকা দামের অকৃষিজমি এবং নওগাঁ শহর ও জন্মভূমি নিয়ামতপুরের শিবপুর গ্রামে দুটি পাকা বাড়ি। তবে হলফনামার বাইরেও ঢাকার বসুন্ধরা আবাসিক এলাকায় ফ্ল্যাট, ভারতের দিল্লি ও কলকাতা এবং অস্ট্রেলিয়ায় ছোট মেয়ের নামে বাড়ি কেনার তথ্য স্থানীয় লোকজনের মুখে শোনা যায়।
সরকার পতনের পর সাধন চন্দ্র মজুমদারের ঘনিষ্ঠ অনেকেই এলাকা ছেড়ে পালিয়েছেন। এর পর থেকে তাঁর নওগাঁ শহরের পোস্ট অফিসপাড়ার বাড়িতে সুনসান নীরবতা। শেখ হাসিনার দেশত্যাগের পর বিক্ষুব্ধ লোকজন সাধন মজুমদারের বাড়িতে হামলা ও অগ্নিসংযোগ করেন। এ ছাড়া তাঁর বড় মেয়ে সোমা মজুমদারের ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান লুটপাট ও বাড়িতে হামলা, ভাগনে উৎপল কুমারের বাড়ি এবং ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানে হামলা ও অগ্নিসংযোগ করা হয়।
সুশাসনের জন্য নাগরিকের (সুজন) নওগাঁর সাবেক সাধারণ সম্পাদক বেলাল হোসেন প্রথম আলোকে বলেন, দখলবাজি, টেন্ডারবাজিসহ মন্ত্রী হওয়ার পর সাধন মজুমদারের বিরুদ্ধে অবৈধভাবে সম্পদ অর্জনের অভিযোগ আছে। এত দিন ভয়ে কেউ মুখ খোলেননি। সরকারি কর্মকর্তারাও ব্যবস্থা নিতে পারেননি। এখন তাঁর বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগ তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া উচিত।