বগুড়ায় সালিস বৈঠকে আওয়ামী লীগ নেতাসহ ৫ জনকে কুপিয়ে জখম

বগুড়া জেলার মানচিত্র
বগুড়া জেলার মানচিত্র

বগুড়ায় জমি নিয়ে বিরোধ মেটাতে বসা সালিস বৈঠকে প্রতিপক্ষের হামলায় আওয়ামী লীগ-যুবলীগের নেতাসহ পাঁচজনকে কুপিয়ে আহত করা হয়েছে। তাঁদের মধ্যে চারজনকে শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।

শনিবার সকাল সাড়ে নয়টার দিকে বগুড়া পৌরসভার ফুলবাড়ী দক্ষিণপাড়া এলাকায় ১৮ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর কার্যালয়ে এ হামলার ঘটনা ঘটে।

আহত ব্যক্তিরা হলেন বগুড়া শহরের মধ্যফুলবাড়ী মৃধাপাড়ার ইদ্রিস আলী মৃধা (৭৮), তাঁর বড় ছেলে রফিকুল ইসলাম ওরফে অরুণ (৫৫), মেজ ছেলে রাজ মাহমুদ ওরফে কাওছার (৪২), ছোট ছেলে মোহাম্মদ আলী (৩৫) ও রফিকুল ইসলামের ছেলে শাওন মৃধা (২৬)।

আহত রফিকুল ইসলাম পৌরসভার ১৮ নম্বর ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং রাজ মাহমুদ একই ওয়ার্ড যুবলীগের সভাপতি। ইদ্রিস আলী ছাড়া বাকি চারজনকে শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।

স্থানীয় একাধিক সূত্র জানিয়েছে, বগুড়া শহরের মধ্যফুলবাড়ী মৃধাপাড়ার আবু কালাম ও তাঁর চাচাতো ভাই শাহিনুরের মধ্যে জমি নিয়ে বিরোধ চলছিল। সম্প্রতি শাহিনুরের ভাতিজা তাপিক হাসান বগুড়া পৌরসভায় আবু কালামের বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ দেন। আজ সকাল আটটায় ১৮ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর রাজু হোসেন তাঁর কার্যালয়ে দুই পক্ষকে সালিস বৈঠকে ডাকেন।

সালিসে আবু কালাম ও শাহিনুরের আরেক চাচাতো ভাই ইদ্রিস আলী ও তাঁর ছেলেরা আসেন। তাঁরা আবু কালামের পক্ষ নিয়ে কথা বলেন। এ নিয়ে শাহিনুরের সঙ্গে ইদ্রিস আলীর পরিবারের তর্ক হয়। এর এক পর্যায়ে শাহিনুরের লোকজন ধারালো অস্ত্র দিয়ে ইদ্রিস আলী ও তাঁর পরিবারের সদস্যদের কুপিয়ে জখম করেন।

১৮ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর রাজু হোসেন পাইকাড় প্রথম আলোকে বলেন, একজনের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে আজ সকাল আটটায় দুই পক্ষকে কাউন্সিলরের কার্যালয়ে উপস্থিত থাকার জন্য নোটিশ পাঠানো হয়। সালিস বৈঠকে দুই পক্ষের আইনজীবীরাও উপস্থিতি ছিলেন। আবু কালামের পক্ষে আওয়ামী লীগ নেতা রফিকুল ইসলামের পরিবার কাগজপত্র দেখানোর সময় দুই পক্ষের ঝগড়া শুরু হয়। কাওছার ও শাহিনুরের মারমুখী আচরণের কারণে সালিস ভন্ডুল হয়ে যায়। এ সময় কার্যালয়ের বাইরে গেলে উভয় পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ হয়। একপর্যায়ে কৃষক দলের সাবেক নেতা শাহিনুরের নেতৃত্বে হামলা চালিয়ে পাঁচজনকে কুপিয়ে আহত করা হয়।

আহত শাওন মৃধা প্রথম আলোকে বলেন, ‘ওয়ার্ড কাউন্সিলর রাজু হোসেন পাইকাড় তাঁর কার্যালয়ে হাজির থাকার জন্য নোটিশ পাঠালে আজ সকালে আমরা যাই। এ সময় শাহিনুর অকথ্য ভাষায় গালমন্দ শুরু করেন। একপর্যায়ে শাহিনুরের নেতৃত্বে বহিরাগত ১০ থেকে ১২ জন দুর্বৃত্ত আমাদের কয়েকজনকে চাপাতি দিয়ে কুপিয়ে জখম করে।’

বগুড়া শহরের ফুলবাড়ী পুলিশ ফাঁড়ির পরিদর্শক জালাল উদ্দিন প্রথম আলোকে বলেন, এ ঘটনায় এখনো কেউ অভিযোগ করেননি। অভিযোগ পেলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।