মেহেরপুরে আধিপত্য বিস্তার নিয়ে আওয়ামী লীগের দুই পক্ষের সংঘর্ষে সাতজন আহত হয়েছেন। গতকাল সোমবার রাত নয়টার দিকে সদর উপজেলার রাধাকান্তপুর গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। আহত ব্যক্তিদের প্রথমে মুজিবনগর স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেওয়া হয়। পরে উন্নত চিকিৎসার জন্য তাঁদের মেহেরপুর জেনারেল হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়েছে।
আহত ব্যক্তিদের মধ্যে রয়েছেন মেহেরপুর জেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি রাধাকান্তপুর গ্রামের আবুল কাশেমের ছেলে শাহরিয়ার লিওন, আওয়ামী লীগের কর্মী আরিফ হোসেন, মোছাব আলী ও নজরুল ইসলাম। তাঁরা গত সংসদ নির্বাচনে পরাজিত প্রার্থী আবদুল মান্নানের সমর্থক হিসেবে পরিচিত।
আহত অন্য ব্যক্তিরা হলেন আওয়ামী লীগের কর্মী আনারুল ইসলাম, জাহাঙ্গীর আলম ও ফারুক হোসেন। তাঁরা বর্তমান সংসদ সদস্য ও জনপ্রশাসন মন্ত্রী ফরহাদ হোসেনের সমর্থক।
আহত শাহরিয়ার লিওনের স্ত্রী নিশাথ ছাইরা বলেন, তিন মাস আগে জাতীয় সংসদ নির্বাচন শেষ হয়েছে। ওই নির্বাচনের পর থেকে পরাজিত স্বতন্ত্র প্রার্থী আবদুল মান্নানের লোকজনকে গ্রামের মসজিদ, ঈদগাহ ও কবরস্থানের কমিটি থেকে বাদ দিতে মরিয়া হয়ে উঠেছে প্রতিপক্ষ। তাঁরা এলাকায় প্রভাব বিস্তার করার চেষ্টা করছেন। গতকাল রাতে তারাবিহর নামাজ শেষে তাঁর স্বামীসহ অন্যরা একটি দোকানে বসেছিলেন। এ সময় প্রতিপক্ষের ২৫–৩০ জন দেশি অস্ত্র নিয়ে হামলা করেন।
এ সম্পর্কে সদর আওয়ামী লীগের সাবেক সভাপতি গোলাম রসুল বলেন, সংসদ নির্বাচনে ফরহাদ হোসেনের বিরুদ্ধে আওয়ামী লীগের যেসব নেতা–কর্মী প্রচারণা চালিয়েছিলেন, তাঁদের হয়রানি করা হচ্ছে। তাঁদের ওপর হামলাও হচ্ছে। সম্প্রতি জেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি জিয়াউদ্দিন বিশ্বাসকে মিথ্যা মামলা দিয়ে জেলে পাঠানো হয়েছিল।
তবে এসব অভিযোগ অস্বীকার করছেন জনপ্রশাসন মন্ত্রীর পক্ষের নেতা জেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ইব্রাহিম শাহীন। তিনি বলেন, স্থানীয় নেতা–কর্মীদের মধ্যে বিভিন্ন বিষয় নিয়ে ঝামেলা হতে পারে। কিন্তু এসব বিষয় সংসদ নির্বাচনের প্রতিফলন নয়। জনপ্রশাসন মন্ত্রী ফরহাদ হোসেন প্রতিশোধপরায়ণ ব্যক্তি নন।
সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা শেখ কনি মিয়া আজ মঙ্গলবার সকালে প্রথম আলোকে বলেন, গতকাল রাতের ঘটনার পরে ওই এলাকায় অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। পরিস্থিতি আপতত ভালো। এ ঘটনায় উভয় পক্ষ মামলার প্রস্তুতি নিচ্ছে।