রংপুর পলিটেকনিকের অধ্যক্ষকে অবরুদ্ধ, এক ঘণ্টা পর উদ্ধার করল পুলিশ

রংপুর পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটের অধ্যক্ষকে অবরুদ্ধ করা হলে পুলিশ এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে নেয়। রোববার বিকেলে
ছবি: প্রথম আলো

রংপুর পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটের একটি আবাসিক ছাত্রাবাসে শিক্ষার্থীরা একাডেমিক ভবনে তালা লাগিয়ে অধ্যক্ষকে অবরুদ্ধ করে রাখেন। পরে পুলিশ গিয়ে তাঁকে উদ্ধার করে। আজ রোববার বিকেলে পলিটেকনিকের একাডেমিক ভবনে এ ঘটনা ঘটে।

তবে ছাত্রাবাসের শিক্ষার্থীরা তালা দেওয়ার বিষয়টি অস্বীকার করেছে। এ ঘটনায় ইনস্টিটিউটের পক্ষ থেকে পাঁচ সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে।

পলিটেকনিক ইনস্টিটিউট সূত্র জানায়, সরকারি পরিপত্র অনুযায়ী শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের আবাসিক ছাত্রাবাসে বৈদ্যুতিক মিটার বসানো হয়েছে। আবাসিক শিক্ষার্থীদেরই বিদ্যুতের বিল বহন করতে হবে। এই বিল দেওয়া না–দেওয়া নিয়ে আবাসিক শিক্ষার্থীদের মধ্যে অসন্তোষ দেখা দেয়। এই অসন্তোষ থেকে শিক্ষার্থীরা আজ বেলা তিনটার দিকে বিক্ষোভ মিছিল করেন। একপর্যায়ে তাঁরা একাডেমিক ভবনের প্রবেশপথে তালা ঝুলিয়ে দেন। এ সময় ভবনের ভেতরে আটকা পড়েন প্রতিষ্ঠানের অধ্যক্ষ ফরিদউদ্দিন আহমেদ।

এ পরিস্থিতিতে ইনস্টিটিউটের পক্ষ থেকে পুলিশকে খবর দেওয়া হয়। পুলিশ যাওয়ার পর ঘটনাস্থল থেকে বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীরা চলে যান। তখন একাডেমিক ভবনের অন্য একটি পথের দরজা খুলে অধ্যক্ষকে উদ্ধার করে পুলিশ। প্রায় এক ঘণ্টা অবরুদ্ধ ছিলেন অধ্যক্ষ।

ফরিদউদ্দিন আহমেদ বলেন, ইনস্টিটিউটের শাহজাহান কবির ছাত্রাবাসে ২২০ জন আবাসিক শিক্ষার্থী বসবাস করে। সরকারের পরিপত্র অনুযায়ী ছাত্রাবাসে বৈদ্যুতিক মিটার বসানো হয়েছে। বিদ্যুতের যা বিল আসবে, সে টাকা সমান ভাগে প্রতি শিক্ষার্থীর ওপর পড়বে। বিদ্যুতের বিল শিক্ষার্থীদেরই বহন করতে হবে। সেখানে প্রতিষ্ঠানের কোনো করণীয় নেই। এই বিদ্যুৎ বিল পরিশোধ করতে শিক্ষার্থীদের অনীহা রয়েছে। আর তা থেকেই আজ শিক্ষার্থীরা বিক্ষুব্ধ হয়ে একাডেমিক ভবনে তালা লাগিয়ে দেয়। তিনি প্রায় এক ঘণ্টা অবরুদ্ধ ছিলেন। পুলিশকে খবর দেওয়া হলে পুলিশ এসে তাঁকে উদ্ধার করে।

ফরিদউদ্দিন আহমেদ আরও বলেন, এ ঘটনায় ইনস্টিটিউটের চিফ ইনস্ট্রাক্টর আসাদুজ্জামানকে আহ্বায়ক ও কম্পিউটার বিভাগের ইনস্ট্রাক্টর হেলাল উদ্দীন আহমেদকে সদস্যসচিব করে পাঁচ সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। কমিটিকে ১১ অক্টোবরের মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন জমার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

ছাত্রাবাসের আবাসিক শিক্ষার্থী অপূর্ব রায় বলেন, ‘বাইরে থেকে এসে লেখাপড়ায় এমনিতেই অনেক খরচ পড়ে। তারওপর ছাত্রাবাসে থাকতে বিদ্যুতের বিল দিতে হলে তা কষ্টকর ব্যাপার। তাই আমরা এটি বাতিলের দাবি জানিয়েছি। কিন্তু একাডেমিক ভবনে তালা কে বা কারা দিয়েছে তা আমরা জানি না। আমাদের ওপর দোষ চাপিয়ে দেওয়া ঠিক হবে না।’

কোতোয়ালি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মাহফুজার রহমান বলেন, খবরটি জানার পর ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠানো হয়। বর্তমানে পরিস্থিতি শান্ত রয়েছে। এ ঘটনায় কাউকে আটক করা হয়নি। প্রতিষ্ঠানের পক্ষ থেকে কোনো অভিযোগও করা হয়নি।