ধর্ষণের অভিযোগ ওঠায় বহিষ্কৃত গাজীপুর জেলা ছাত্রদলের সভাপতি ইমরান হোসেন শিশিরের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের হয়েছে। নির্যাতনের শিকার ওই নারী আজ বুধবার বাদী হয়ে কাপাসিয়া মডেল থানায় মামলাটি দায়ের করেন।
ইমরান কাপাসিয়ার তরগাঁও ইউনিয়নের সাফাইশ্রী গ্রামের বাসিন্দা। তিনি কাপাসিয়া ডিগ্রি কলেজ শাখা ছাত্রদলের সাবেক আহ্বায়ক। পরে তিনি গাজীপুর জেলা ছাত্রদলের সভাপতি হন। তাঁর বিরুদ্ধে ধর্ষণের অভিযোগ ওঠায় গত রোববার কেন্দ্রীয় ছাত্রদল তাঁকে সাংগঠনিক পদ থেকে অব্যাহতি দেয়।
ধর্ষণের অভিযোগ করা ওই নারীর বাড়িও কাপাসিয়ায়। বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে ইমরানের বিরুদ্ধে অনেকবার ধর্ষণের অভিযোগ তোলেন তিনি। ভিন্ন ভিন্ন সময় ধর্ষণের বর্ণনা দেওয়া একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়ে। পরে এসব অভিযোগ নিয়ে ওই নারী সাংবাদিকদের কাছেও অভিযোগ করেন। তবে অভিযোগের পরের দিন ওই নারী আবার সংবাদ সম্মেলন করে এসব অভিযোগ ভিত্তিহীন বলে দাবি করেন। এমনকি অভিযুক্ত ইমরানকে ফাঁসানোর উদ্দেশ্যে প্রতিপক্ষের লোকজন জোর করে তাঁর কাছ থেকে জবানবন্দি নিয়ে তা ভিডিও করে ছড়িয়েছিলেন বলেও অভিযোগ তুলেছিলেন তিনি। তবে এসব অভিযোগে দল থেকে অব্যাহতি দেওয়ার তিন দিন পর ওই নারী আজ ধর্ষণের অভিযোগে থানায় মামলা করেন।
মামলার এজাহারে বলা হয়, গত রোববার ইমরান ওই নারীর বাড়িতে কয়েকজন বন্ধুসহ উপস্থিত হন। বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে ওই নারীকে দিয়ে মিথ্যা বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হয়। একই সঙ্গে তাঁর কাছ থেকে মোবাইল ফোন, স্বর্ণালংকারসহ সঙ্গে থাকা নগদ টাকা ছিনিয়ে নেওয়া হয়।
এজাহারে আরও বলা হয়, ২০১৯ সালের ১২ সেপ্টেম্বর কাপাসিয়ার রাওনাট এলাকার এক বন্ধুর ফাঁকা বাড়িতে নিয়ে ওই নারীকে ধর্ষণ করেন ইমরান। ২০২২ সালের ৬ নভেম্বর স্বামী-স্ত্রীর পরিচয়ে ওই নারীকে ভারতে ঘুরতে নিয়ে যান ইমরান। সেখানে নিয়ে তাঁকে একাধিকবার ধর্ষণ করা হয়। ২০২৩ সালের ৩ অক্টোবর কক্সবাজারে হোটেল কল্লোল এবং পরে একই হোটেলে একই বছরের ৮ ডিসেম্বর তাঁকে ধর্ষণ করা হয়। এ বছরের ১৯ মার্চ কক্সবাজারে হোটেল নিসর্গ এবং একই বছরের জুলাই মাসে গাজীপুরের ফাওগান ইকো রিসোর্টে নিয়ে তাঁকে ধর্ষণ করেন ইমরান।
এসব ঘটনায় অভিযুক্ত ইমরানের বক্তব্য পাওয়া যায়নি। তাঁর মুঠোফোন বন্ধ পাওয়া যায়।
নির্যাতনের শিকার নারীর বাবা মুঠোফোনে প্রথম আলোকে বলেন, থানায় মামলা করতে যাওয়ার সময় ইমরান ও তাঁর লোকজন বারবার প্রতিবন্ধকতার সৃষ্টি করেছিলেন। রাস্তায় কয়েক দফা হুমকি দিয়েছেন। পরে পুলিশি সহায়তায় তাঁরা থানায় এসে মামলা করেন।
কাপাসিয়া মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. কামাল হোসেন প্রথম আলোকে বলেন, ‘বুধবার মামলাটি দায়ের করেন ওই নারী। আমরা মামলা অনুযায়ী পরবর্তী আইনগত ব্যবস্থা নিচ্ছি।’