সাড়ে তিন মাস পর উঠল নিষেধাজ্ঞা, প্রথম দিনে ১২০ মেট্রিক টন মাছ শিকার

কাপ্তাই হ্রদে জাল ফেলে মাছ ধরতে ব্যস্ত জেলেরা
ফাইল ছবি

ব্যাপক উৎসাহ-উদ্দীপনার মধ্য দিয়ে রাঙামাটির কাপ্তাই হ্রদে মাছ ধরা শুরু হয়েছে। সাড়ে তিন মাস বন্ধ থাকার পর গতকাল বৃহস্পতিবার থেকে সব ধরনের মাছ আহরণ ও বিপণনের জন্য খুলে দেওয়া হয়। প্রথম দিনে চারটি অবতরণঘাট থেকে ১২০ মেট্রিক টন মাছ শিকার করেছেন জেলেরা।

এদিকে দীর্ঘদিন পর হ্রদের মাছ ধরা শুরু হওয়ায় জেলে ও ব্যবসায়ীদের মধ্যে স্বস্তি ফিরেছে। জেলেরা পুরোদমে মাছ শিকারে ব্যস্ত হয়ে পড়েছেন। তবে এ বছর ভরা মৌসুমেও হ্রদে পানির উচ্চতা তেমন একটা বৃদ্ধি পায়নি। সে জন্য মাছ ধরায় দুই দফায় নিষেধাজ্ঞা বাড়ানো হয়।

জেলে ও ব্যবসায়ীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, কাপ্তাই হ্রদে মাছের প্রাকৃতিক প্রজনন নিশ্চিত করতে এবং কাপ্তাই হ্রদের কার্প-জাতীয় মাছ বাড়াতে গত ১ মে থেকে ৩১ জুলাই—তিন মাসের জন্য মাছ শিকার ও বিপণনের ওপর নিষেধাজ্ঞা জারি করে জেলা প্রশাসন। ৩১ জুলাই হ্রদে মাছ শিকারের নিষেধাজ্ঞার সময়সীমা শেষ হলেও পানি বৃদ্ধি কম হওয়ায় জেলা প্রশাসন দুই দফায় ১৭ দিনের জন্য সময় বৃদ্ধি করে। গত বুধবার মধ্যরাতে নিষেধাজ্ঞার সময় শেষ হওয়ার পর জেলেরা হ্রদে মাছ শিকারে ব্যস্ত হয়ে উঠেছেন।

কাপ্তাই হ্রদে ২৪ হাজার জেলে মাছ শিকার করেন। এর মধ্যে রাঙামাটির ২২ হাজার ২৫৫ জন। বাকিরা খাগড়াছড়ির দীঘিনালা ও মহালছড়ি উপজেলার বাসিন্দা।
বাংলাদেশ মৎস্য উন্নয়ন করপোরেশন (বিএফডিসি) সূত্রে জানা গেছে, বিএফডিসির অধীন রাঙামাটিতে চারটি মৎস্য অবতরণঘাট রয়েছে। সেগুলো হলো রাঙামাটি সদর, মারিশ্যা, কাপ্তাই ও মহালছড়ি ঘাট। এসব অবতরণঘাটে গতকাল প্রথম দিনে কাপ্তাই হ্রদ থেকে আহরণ করা ১২০ মেট্রিক টন মাছ এসেছে, যা থেকে সরকারের রাজস্ব আয় হয়েছে প্রায় ২৪ লাখ টাকা। তবে প্রথম দিনে হ্রদ থেকে জেলেদের জালে বড় মাছ তেমন ধরা না পড়লেও ছোট মাছ চাপিলা ও কাচকি বেশ ধরা পড়েছে।

মাছ শিকার ও বাজারজাতকরণের ওপর নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারের পর ব্যবসায়ী, জেলে ও শ্রমিকদের মধ্যে কর্মচাঞ্চল্য ফিরেছে। সরেজমিনে দেখা গেছে, জেলেদের কাছ থেকে ব্যবসায়ীরা মাছ বেচা-কেনা করে শহরের বিএফডিসি ফিসারি মৎস্য অবতরণঘাটে নিয়ে যাচ্ছেন। সেখানে বিএফডিসিকে রাজস্ব দেওয়ার পর এসব মাছ ট্রাকে করে দেশের বিভিন্ন স্থানে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে।

কাপ্তাই হ্রদে বৃহত্তর মৎস্য ব্যবসায়ী সমিতি লিমিটেডের সভাপতি মো. কবীর আহমেদ বলেন, শহরের বিএফডিসির মৎস্য অবতরণঘাটটি ছোট হওয়ায় সঠিকভাবে মাছ প্যাকেটজাত করা যাচ্ছে না। তাই ঘাটের আকার বৃদ্ধি দরকার। এ ছাড়া জ্বালানি তেলের দাম বাড়ায় পরিবহনের খরচ বেড়েছে। এ অবস্থায় বাড়তি খরচ দিয়ে দেশের অন্যান্য স্থানে মাছ নিয়ে যেতে হচ্ছে।

বিএফডিসি রাঙামাটি কার্যালয়ের বিপণন কর্মকর্তা মো. শোয়েব সালেহীন বলেন, কাপ্তাই হ্রদের চারটি অবতরণঘাট থেকে মাছ আহরণের পর সেগুলো বাজারজাত করা হয়েছে। প্রথম দিনে ১২০ মেট্রিক টন মাছ আহরণ করা হয়েছে, যার রাজস্ব আয় হয়েছে প্রায় ২৪ লাখ টাকা।