কিশোরগঞ্জের ঐতিহাসিক পাগলা মসজিদ
কিশোরগঞ্জের ঐতিহাসিক পাগলা মসজিদ

‘জীবনসঙ্গী’ পাওয়ার চিঠিও পাগলা মসজিদের দানসিন্দুকে

কিশোরগঞ্জের ঐতিহাসিক পাগলা মসজিদের দানসিন্দুক থেকে এবার ৭ কোটি ৭৮ লাখ ৬৭ হাজার ৫৩৭ টাকা পাওয়া গেছে। সঙ্গে ছিল বৈদেশিক মুদ্রা ও স্বর্ণালংকারও। তবে এর বাইরেও ভিন্ন কিছু জিনিস পাওয়া গেছে।

কথিত আছে, পাগলা মসজিদে দানের মাধ্যমে মন থেকে কিছু চাইলে সে আশা পূরণ হয়। সেই বিশ্বাসে দূরদূরান্ত থেকে লোকজন এসে এখানে দান করার পাশাপাশি চিঠিও লেখেন। গতকাল শনিবার দানসিন্দুকের টাকা গণনার সময় এমন অনেকগুলো চিঠি পাওয়া গেল। একটি চিঠি প্রেমিকাকে পেতে এক প্রেমিকের আকুতির। হবিগঞ্জ জেলার সেই যুবক চিঠিতে লিখেছেন, ‘আমি একটা মেয়েকে ভালোবাসি, কিন্তু মেয়েটা আমাকে ভালোবাসে না। আমি আল্লাহর নিকট প্রার্থনা করি যে আল্লাহ তাকে যেন আমার জীবনসঙ্গী হিসেবে কবুল করেন।’

এক মা সন্তানের সুস্থতার আকুতি জানিয়ে চিঠিতে লিখেছেন, ‘হে আল্লাহ, তুমি আমার মেয়েকে সুস্থ করে দাও। বসার তৌফিক দাও। হাঁটার তৌফিক দাও। তুমি তার চোখের সমস্যা, মাথার সমস্যা দূর করে দাও। হে আল্লাহ, তোমার কাছে আমি আমার মেয়ের জন্য ভিক্ষা চাই, আর পাঁচটা শিশুর মতো আমার বাচ্চাটা যেন সুস্থ থাকে।’ আরেক নারী আল্লাহর কাছে চাঁদের মতো ফুটফুটে সন্তানের আকুতি জানিয়েছেন।

এ বিষয়ে পাগলা মসজিদের প্রশাসনিক কর্মকর্তা বীর মুক্তিযোদ্ধা শওকত উদ্দিন ভূঁইয়া বলেন, অনেক আবেগপ্রবণ লোক দানসিন্দুকে দানের পাশাপাশি চিঠি দিয়ে যান। অনেকে গাছের প্রথম শসা, লেবু, মুরগির ডিম, লাউ ও কাঁচা মরিচ এবং খাসি ও গরু দান করেন।

অতীতের সব রেকর্ড ভেঙে পাগলা মসজিদে এবার ৭ কোটি  ৭৮ লাখ ৬৭ হাজার ৫৩৭ টাকা পাওয়া গেছে। প্রায় আড়াই শ মানুষ গতকাল শনিবার সকাল সাড়ে ৭টা থেকে দিবাগত রাত দেড়টা পর্যন্ত টানা ১৮ ঘণ্টা গণনা করে নতুন এই রেকর্ড পরিমাণ টাকা পান। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন পাগলা মসজিদ কমিটির সভাপতি ও জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ আবুল কালাম আজাদ।

এর আগে গত বছরের ৯ ডিসেম্বর খোলা হয়েছিল দানসিন্দুকগুলো। তখন ২৩ বস্তার মধ্যে ৬ কোটি ৩২ লাখ ৫১ হাজার ৪২৩ টাকাসহ বৈদেশিক মুদ্রা, সোনার গয়না ও হীরা পাওয়া গিয়েছিল।