সিলেট সিটি করপোরেশনের একটি বিজ্ঞপ্তি নিয়ে সমালোচনা চলছে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে। করপোরেশনের কর আদায় শাখা এ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করেছে। এতে পবিত্র রমজান মাসে নগরের ভেতরে বিজ্ঞাপনী বোর্ড, পোস্টার, ব্যানার, গাড়ির বডিসহ যেকোনো স্থানে বিজ্ঞাপন প্রচারে ব্যক্তির ছবি ব্যবহার না করার অনুরোধ জানানো হয়। অনুরোধ না মানলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়ার বিষয়টিও বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা হয়েছে।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, স্থানীয় কিছু পত্রিকায় ১৩ মার্চ সিটি করপোরেশনের প্রধান রাজস্ব কর্মকর্তা মো. মতিউর রহমান খান স্বাক্ষরিত একটি ‘জরুরি বিজ্ঞপ্তি’ ছাপা হয়েছে। এতে বলা হয়, আসন্ন রমজান মাসের পবিত্রতা ও ভাবগাম্ভীর্য রক্ষায় সিলেট সিটি করপোরেশনের ভেতরে বিভিন্ন বিজ্ঞাপনী বোর্ড, পোস্টার, ব্যানার, গাড়ির বডিসহ যেকোনো বিজ্ঞাপন প্রচারে ব্যক্তির ছবি ও কুরুচিপূর্ণ বিজ্ঞাপন প্রচার না করার জন্য অনুরোধ করা যাচ্ছে। যদি কোনো ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে বিজ্ঞাপনী বোর্ড, পোস্টার, ব্যানার কিংবা অন্য কোনোভাবে এ রকম বিজ্ঞাপন প্রচারিত হয়ে থাকে, তাহলে অনতিবিলম্বে অপসারণ করার জন্য অনুরোধ করা যাচ্ছে। অন্যথায় আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
এ বিষয়ে জানতে যোগাযোগ করলে প্রধান রাজস্ব কর্মকর্তা মো. মতিউর রহমান খান বলেন, ‘দেয়াললিখন ও পোস্টার লাগানো (নিয়ন্ত্রণ) আইন, ২০১২’ অনুযায়ী রমজান মাসে নগরে অনুমোদনহীন কুরুচিপূর্ণ ব্যানার, পোস্টার, বিলবোর্ড সাঁটানোর বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়ার বিষয়টি জানাতে বিজ্ঞপ্তি দেওয়া হয়েছে।
আইনে ব্যক্তির ছবিসহ প্রচারে কোনো নিষেধাজ্ঞা আছে কি না, জানতে চাইলে প্রধান রাজস্ব কর্মকর্তা বলেন, ‘এমনটা আইনে নেই। বিজ্ঞপ্তিতে কিছুটা ভাষাগত দুর্বলতা আছে। মূলত পবিত্র রমজান মাসে অশ্লীল ও কুরুচিপূর্ণ ছবিসহ বিজ্ঞাপন নিয়ন্ত্রণের জন্য এমন বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হয়েছে।’
বিজ্ঞপ্তি প্রকাশের পর থেকে বিষয়টি নিয়ে ফেসবুকে অনেকেই সমালোচনা করছেন। সংক্ষুব্ধ নাগরিক আন্দোলন সিলেটের সমন্বয়ক আবদুল করিম চৌধুরী কিম ক্ষোভ প্রকাশ করে ফেসবুকে স্ট্যাটাস দিয়েছেন। এ বিষয়ে তিনি বলেন, ‘জনগণের টাকা অপচয় করে পত্রিকায় এ ধরনের বিজ্ঞপ্তি দিয়ে জনগণকে ভয় দেখানোর অধিকার সিটি করপোরেশন কর্তৃপক্ষকে কে দিয়েছে? প্রচারে ব্যক্তি তাঁর নিজের ছবি দিতে পারবেন না, এটা বাংলাদেশের কোন আইনে আছে? আর সিটি করপোরেশন কোনগুলোকে কুরুচিপূর্ণ বিজ্ঞাপন বলছে, সেটার ব্যাখ্যাও তাদের দেওয়া উচিত। মূলত এমন বিজ্ঞপ্তিতে প্রতিক্রিয়াশীল গোষ্ঠীই উৎসাহিত হবে। উদ্দেশ্যমূলকভাবে একটা বিতর্ক তৈরি করতেই এ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হয়েছে।’