টানা তিন দিন ধরে অস্থির থাকা বাজারে কিছুটা ‘স্বস্তি’ নিয়ে চট্টগ্রামের পাইকারি আড়তে এসেছে দেশি মুড়িকাটা পেঁয়াজ। চট্টগ্রামের বৃহৎ দুই পাইকারি আড়ত চাক্তাই ও খাতুনগঞ্জে দেশি আগাম জাতের এই পেঁয়াজের সরবরাহ শুরু হওয়ায় আমদানি করা ভারতীয় পেঁয়াজের দামও কমেছে।
আড়তদারেরা জানান, আজ মঙ্গলবার বাজারে ১৫ গাড়ির মতো দেশি পেঁয়াজ এসেছে। প্রতিটি গাড়িতে ১৩ টন হিসাবে প্রায় দুই লাখ কেজি পেঁয়াজ বাজারে এসেছে। এর বেশির ভাগই মেহেরপুরের মুড়িকাটা পেঁয়াজ।
সকাল সাড়ে ১০টার দিকে খাতুনগঞ্জে গিয়ে দেখা যায়, প্রায় সব দোকানেই পেঁয়াজের সরবরাহ হয়েছে। ব্যবসায়ীরা বলছেন, এক সপ্তাহের মধ্যেই পেঁয়াজের বাজার স্বাভাবিক হবে। আজ বাজারে আমদানি করা ভারতীয় পেঁয়াজ ১৩০ থেকে ১৪০ টাকার মধ্যে বিক্রি হয়েছে। আর দেশি পেঁয়াজ বিক্রি হয়েছে ১০০ টাকা কেজি দরে।
এদিকে গতকাল সোমবার সকালেও খাতুনগঞ্জ ও চাক্তাই এলাকায় গিয়ে আড়তগুলোতে পেঁয়াজ দেখা যায়নি। আর আজ প্রায় সব আড়তেই দেশি পেঁয়াজের পাশাপাশি ভারতীয় পেঁয়াজও দেখা গেছে।
জানতে চাইলে নাম প্রকাশ না করে এক আড়তদার বলেন, কিছু ব্যাপারী অধিক মুনাফার আশায় পেঁয়াজ মজুত করেছিলেন। দেশি পেঁয়াজের সরবরাহ আসায় তাঁরা সেগুলো গুদাম থেকে বের করে বাজারে সরবরাহ করেছেন।
তবে পাইকারি বাজারে দাম কমলেও খুচরা পর্যায়ে আমদানি করা পেঁয়াজের দাম এখনো ১৭৫ থেকে ২০০ টাকা। বিক্রেতারা বলছেন, পাইকারি পর্যায় থেকে এসব পেঁয়াজ বেশি দামে কেনা হয়েছিল। খুচরা বাজারে নতুন পেঁয়াজ এলে দাম কমে যাবে।
চাক্তাই শিল্প ও ব্যবসায়ী সমিতির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আহসান খালেদ প্রথম আলোকে বলেন, আড়তে ১৫ গাড়ির মতো পেঁয়াজ এসেছে। এর মধ্যে বেশির ভাগই মেহেরপুরের পেঁয়াজ। কিছু ভারতীয় পেঁয়াজও এসেছে। আশা করা যায়, কয়েক দিনের মধ্যে দাম স্বাভাবিকে নেমে আসবে। তবে বাজারে এখনো ক্রেতা-স্বল্পতা রয়েছে।
ভারত গত শুক্রবার পেঁয়াজ রপ্তানি বন্ধের সিদ্ধান্ত জানানোর পর দেশের বাজারে চড়া দামে পেঁয়াজ বিক্রি হয়েছে। মাত্র এক দিনের ব্যবধানে গত শনিবার আমদানি করা পেঁয়াজের দাম রাতারাতি খুচরায় কেজিপ্রতি ৫০ থেকে ৮০ টাকা পর্যন্ত বেড়েছিল।
এদিকে পেঁয়াজবাজার তদারকিতে আজ নগরের বিভিন্ন বাজার পরিদর্শন করছেন চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসনের পাঁচ নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট। এর আগে সোমবার ব্যবসায়ীদের সঙ্গে এক মতবিনিময় সভায় চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসক আবুল বাসার মোহাম্মদ ফখরুজ্জামান বলেছিলেন, দোকান ও গুদামের বাইরে কোনো পণ্য পাওয়া গেলে ধরে নেওয়া হবে, সেসব পণ্য বাড়তি দামে বিক্রির জন্য অবৈধভাবে মজুত করা হচ্ছে। এসব পণ্য তৎক্ষণাৎ জব্দ করে ন্যায্যমূল্যে বিক্রি করে দেওয়া হবে।