কিশোরগঞ্জের ভৈরবে মেঘনা নদীতে ভাঙন এখনো থামেনি। গতকাল আরও কয়েকটি স্থান থেকে মাটি ধসে নদীতে মিলিয়ে যায়
কিশোরগঞ্জের ভৈরবে মেঘনা নদীতে ভাঙন এখনো থামেনি। গতকাল আরও কয়েকটি স্থান থেকে মাটি ধসে নদীতে মিলিয়ে যায়

ভৈরবে মেঘনায় ভাঙন

গুদাম থেকে সরানো হচ্ছে সার 

ভাঙন থেকে তিন গজ দূরে যমুনা ডিপো। এই ডিপো লাগোয়া মেঘনা ডিপো। ডিপো কর্তৃপক্ষ নিজ উদ্যোগে জিও ব্যাগ ফেলার কাজ করে চলেছে।

কিশোরগঞ্জের ভৈরবে মেঘনা নদীতে ভাঙন এখনো থামেনি। গতকাল মঙ্গলবার আরও কয়েকটি স্থান থেকে মাটি ধসে গিয়ে কিছু ভূমি নদীতে বিলীন হয়ে গেছে। এ অবস্থায় বিএডিসি কর্তৃপক্ষ অতি ঝুঁকিতে থাকা গুদাম থেকে সার সরিয়ে নেওয়ার কাজ শুরু করেছে। এ ছাড়া তেলের ডিপোগুলো থেকে দেশের আট জেলায় স্বাভাবিক সরবরাহ বাধাগ্রস্ত হচ্ছে। 

আগের দিন ভাঙন রোধে পানি উন্নয়ন বোর্ডকে (পাউবো) ১৯ আর্টিলারি ব্রিগেডের ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. তরিকুল ইসলাম দুই দিন সময় দেন। লক্ষ্য করা গেছে, সেনা কর্মকর্তার নির্দেশের পর দিন অর্থাৎ গতকাল ভোর থেকে ভাঙন রোধের উদ্যোগে গতি আসে। সকাল থেকে জিও ব্যাগ ফেলা শুরু হয়। ৪ ফিল্ড রেজিমেন্ট আর্টিলারির ব্যাটারি অধিনায়ক মেজর মো. সানজেদুল ইসলাম ও ভৈরব উপজেলা ভারপ্রাপ্ত নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ভাঙনরোধ কার্যক্রমের তদারকি করছেন। 

এ ছাড়া আরও কী উদ্যোগ নেওয়া যেতে পারে, এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিতে গতকাল দুপুরে আসেন পানি উন্নয়ন বোর্ডের কেন্দ্রীয় অঞ্চলের প্রধান প্রকৌশলী মো. আসাদুজ্জামান ও বিএডিসির সার ব্যবস্থাপনা বিভাগের যুগ্ম সচিব মো. আশরাফুজ্জামান। ভাঙনকবলিত এলাকা ঘুরে দেখেন, বিএনপি কেন্দ্রীয় পর্ষদের সাংগঠনিক সম্পাদক (ময়মনসিংহ অঞ্চল) শরিফুল আলম। তিনি ক্ষতিগ্রস্ত ১৭টি পরিবারকে ১০ হাজার টাকা করে অনুদান দেন।

সরেজমিনে দেখা যায়, গতকালও ভাঙছে। সারের গুদাম ও তেলের ডিপোর মাঝামাঝি স্থানে আরও কয়েক মিটার ভূমি ধসে পড়ে। জিও ব্যাগ ফেলার পরও যমুনা ডিপোর অফিসকক্ষটির নিচ থেকে আরও কিছু মাটি সরে গিয়ে ঝুঁকির মাত্রা বাড়ে। বিএডিসির অফিস কার্যালয়ের একাংশের নিচ থেকেও মাটি সরে গিয়ে গর্তের সৃষ্টি হয়েছে।

সারের দুটি গুদামের মধ্যে অতি ঝুঁকিতে রয়েছে ১ নম্বর গুদাম। সেই কারণে ১ নম্বর গুদামের সার ২ নম্বর গুদামে এবং পাশের উপজেলা কুলিয়ারচর গুদামে স্থানান্তর করা হচ্ছে। বিএডিসির সার ব্যবস্থাপনা বিভাগের যুগ্ম সচিব মো. আশরাফুজ্জামান বলেন, বিকল্প সড়ক সৃষ্ট করে দ্রুত বাকি সার নিরাপদে সরিয়ে নেওয়ার ব্যবস্থা করা হচ্ছে। 

ভাঙনে সবচেয়ে ঝুঁকিতে রয়েছে যমুনা ডিপো। যমুনা ডিপোর প্রাচীরের একাংশ এরই মধ্যে নদীতে তলিয়ে গেছে। নতুন করে আরও কিছু অংশ ভাঙনের কবলে পড়ায় ডিপোটির একটি দ্বিতল ভবন আছে ভাঙন থেকে তিন গজ দূরে। যমুনা ডিপো লাগোয়া মেঘনা ডিপো। ভাঙনের পরদিন থেকে ডিপো কর্তৃপক্ষ নিজ উদ্যোগে জিও ব্যাগ ফেলার কাজ করে চলেছে; কিন্তু পুরোপুরি রোধ করতে পারছে না। প্রতিদিন একটু একটু করে ভাঙছে।

গত রোববার ভোররাত থেকে মেঘনা নদীর ভৈরব মোহনার ডিপো ঘাট এলাকায় ভাঙন দেখা দেয়। ভাঙনে এরই মধ্যে ২৩০ মিটার ভূমি নদীতে বিলীন হয়ে গেছে। ওই স্থানে থাকা দুটি দোকান ও ১৩টি ঘর নদীতে বিলীন হয়ে যায়।