দ্বিতীয় দিনের মতো ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে অবরোধ কর্মসূচি পালন করেছেন চট্টগ্রামের ইনস্টিটিউট অব হেলথ টেকনোলজির (আইএইচটি) শিক্ষার্থীরা। এতে মহাসড়কটির উভয় দিকে অন্তত ২০ কিলোমিটার যানজটের পড়ে ভোগান্তি পোহান যাত্রী ও চালকেরা। আজ রোববার বেলা ১১টার দিকে ছয় দফা দাবিতে চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ডের ফৌজদারহাট আইএইচটি ক্যাম্পাস এলাকার মহাসড়কে তাঁরা ঘণ্টাব্যাপী অবরোধ করেন।
এর আগে গতকাল রোববার বেলা ১১টার দিকেও ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়ক অবরোধ করেন প্রতিষ্ঠানটির শিক্ষার্থীরা। পরে মহাসড়কে সংক্ষিপ্ত সমাবেশ শেষে বেলা সাড়ে ১১টার দিকে অবরোধ তুলে নেওয়া হয়। আধা ঘণ্টার ওই অবরোধেও দুর্ভোগে পড়েন যাত্রী ও চালকেরা।
শিক্ষার্থীদের দাবিগুলোর মধ্যে আছে স্বতন্ত্র পরিদপ্তর গঠন, ডিপ্লোমাধারী টেকনোলজিদের দশম গ্রেড, স্নাতক ডিগ্রিধারী টেকনোলজিস্টদের নবম গ্রেড প্রদান, ঢাকা আইএইচটিকে বাংলাদেশ ইউনিভার্সিটি অব মেডিকেল সায়েন্স অ্যান্ড টেকনোলজি নামে বিশ্ববিদ্যালয়ের উন্নীত করা, মেডিকেল টেকনোলজি কাউন্সিল গঠন করে পেশাদার লাইসেন্স প্রদান ও সব কোর্সের বিএসসি এমএসসি, বি ফার্ম কোর্স চালু করে শিক্ষাবৃত্তির ব্যবস্থা।
প্রতিষ্ঠানটির ফিজিওথেরাপি বিভাগের তৃতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী মোহাম্মদ বোরহান উদ্দিন বলেন, মেডিকেল টেকনোলজিস্টরা ৩০ বছর ধরে বৈষম্যের শিকার। যেখানে কৃষি, মৎস্য, নার্সিংসহ অন্য ডিপ্লোমাধারীদের দশম গ্রেড দেওয়া হয়। অথচ ১৯৯৪ সাল থেকে স্বাস্থ্য খাতের ডিপ্লোমাধারীদের ১১তম গ্রেড দেওয়া হয়। ফলে রোগনির্ণয়ের ক্ষেত্রে এই ডিপ্লোমাধারীরা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করলেও তাঁদের অন্যায্যভাবে পিছিয়ে রাখা হয়েছে। বিশ্ব সংস্থার গাইডলাইন অনুসারে একজন চিকিৎসকের বিপরীতে পাঁচজন মেডিকেল টেকনোলজিস্ট থাকার কথা থাকলেও সে পরিমাণ নেই। ২০১১ সাল থেকে মেডিকেল টেকনোলজিস্ট নিয়োগ বন্ধ রয়েছে। ফলে তাঁদের দ্রুত বৈষম্য দূর করতে হবে।
দাবি না মানা হলে বৃহত্তর কর্মসূচির অংশ হিসেবে সারা দেশের আইএইচটি শিক্ষার্থীরা ঢাকার উদ্দেশে লংমার্চ করবেন বলে হুঁশিয়ারি দিয়েছেন আন্দোলনের অন্যতম সমন্বয়ক ও ফিজিওথেরাপি বিভাগের তৃতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী মো. তানভীর।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে ফৌজদারহাট আইএইচটির অধ্যক্ষ নুপুর কান্তি দাস জানান, শিক্ষার্থীরা শান্তিপূর্ণ আন্দোলন করছেন। সারা দেশের আইএইচটি শিক্ষার্থীরা সম্মিলিতভাবে আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছেন। তাঁদের দাবিগুলো ক্যাম্পাস থেকে বাস্তবায়ন করার কোনো সুযোগ নেই। এসব বাস্তবায়ন করতে পারে সংশ্লিষ্ট অধিদপ্তর কিংবা মন্ত্রণালয়। শিক্ষার্থীদের দেওয়া স্মারকলিপি সংশ্লিষ্ট অধিদপ্তরে পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে।
শিক্ষার্থীদের অবরোধ তুলে নেওয়ার পরও মহাসড়কটিতে আরও কিছু সময় যানজটের প্রভাব ছিল বলে জানান ফৌজদারহাট পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ উপপরিদর্শক (এসআই) আমিনুল ইসলাম। তিনি আজ দুপুরে জানান, যানবাহন ধীরে ধীরে চলাচল করছিল।