জাতীয় নির্বাচনের পরে স্থানীয় নির্বাচন দেওয়ার দাবি জানিয়েছেন বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান আহমেদ আযম খান। তিনি বলেছেন, ‘আমরা অবিলম্বে জাতীয় সংসদ নির্বাচন দাবি করছি। মানুষ জাতীয় নির্বাচন চায়, মানুষ ভোট দিতে চায়। জাতীয় নির্বাচন বিলম্ব হলে জাতীয় ঐক্য, গণতন্ত্র ও বিপ্লব ব্যাহত হতে পারে।’
আজ সোমবার দুপুর সাড়ে ১২টায় সিলেট নগরের রেজিস্টারি মাঠে সিলেট জেলা ও মহানগর বিএনপির উদ্যোগে আয়োজিত বিজয় শোভাযাত্রার আগে এক সংক্ষিপ্ত সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে আহমেদ আযম খান এ কথা বলেন। তিনি আরও বলেন, ‘দেশকে নিয়ে দেশি-বিদেশি ষড়যন্ত্র চলছে। সংখ্যালঘুদের নাকি নির্যাতন করা হচ্ছে, এমনটা অপপ্রচার চালাচ্ছে ভারত। বাংলাদেশ সব ধর্মের মানুষ নিরাপদে সহাবস্থান করছে।’
আহমেদ আযম বলেন, চক্রান্তকারীরা বিজয়ের চেতনাকে নস্যাৎ করার ষড়যন্ত্র করছে উল্লেখ করে আহমেদ আযম খান বলেন, ‘সচেতন থাকতে হবে, যাতে বিজয়ের চেতনা ও জাতীয় ঐক্যকে কেউ যেন নস্যাৎ করতে না পারে। আমরা অকুণ্ঠভাবে ড. ইউনূস সরকারকে সমর্থন দিয়েছি। তাঁর নেতৃত্বে ধর্ম–বর্ণ-দলমতনির্বিশেষে আমরা জাতীয় ঐক্য তৈরি করেছি।’
আহমেদ আযম আরও বলেন, ‘মহান মুক্তিযুদ্ধে জিয়াউর রহমানের নেতৃত্বে সিলেট শত্রুমুক্ত হয়েছিল। স্বাধীনতার ঘোষণা দেওয়া থেকে শুরু করে রণাঙ্গনের মুক্তিযোদ্ধা শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের অবদানকে মুছে দেওয়ার চেষ্টা করা হয়েছে। আমাদের নেত্রী খালেদা জিয়া দীর্ঘ ৯ বছর স্বৈরাচারের বিরুদ্ধে আন্দোলন-সংগ্রাম করে গণতন্ত্রকে মুক্ত করেছিলেন। আমাদের নেতা তারেক রহমান দীর্ঘ ১৫ বছর গণতন্ত্রকে পুনরুদ্ধার করার জন্য রাজপথে লড়াই করেছেন। যার ফলে ছাত্র-জনতার গণ-অভ্যুত্থানে ফ্যাসিবাদ দেশ ছেড়ে পালিয়েছে।’
সমাবেশে সিলেট জেলা বিএনপির সভাপতি আবদুল কাইয়ুম চৌধুরী সভাপতিত্ব এবং জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক এমরান আহমদ চৌধুরী ও মহানগর বিএনপির ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক নজিবুর রহমান নজিব সঞ্চালনা করেন। বিশেষ অতিথির বক্তব্য দেন বিএনপির চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা খন্দকার আবদুল মুক্তাদির ও আরিফুল হক চৌধুরী, কেন্দ্রীয় কমিটির সহসাংগঠনিক সম্পাদক মিফতাহ্ সিদ্দিকী। স্বাগত বক্তব্য দেন সিলেট মহানগর বিএনপির ভারপ্রাপ্ত সভাপতি রেজাউল হাসান কয়েস লোদী।
সমাবেশে বক্তারা বলেন, বিজয়ের দিনে নতুন করে দেশ গড়ার প্রতিজ্ঞা নিতে হবে। সব ষড়যন্ত্রকে মোকাবিলা করে বিজয়কে রক্ষা করতে হবে। জুলাই-আগস্টে দেশের মানুষ জীবন দিয়ে বিজয়কে রক্ষা করেছেন। ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগ জনগণের সব গণতান্ত্রিক অধিকার কেড়ে নিয়েছিল, যা দীর্ঘ আন্দোলন-সংগ্রামের মধ্য দিয়ে ফিরে পেয়েছে দেশের মানুষ।
সমাবেশ শেষে একটি বিশাল বিজয় শোভাযাত্রা নগরের গুরুত্বপূর্ণ সড়ক প্রদক্ষিণ শেষে নগরের চৌহাট্টা এলাকার সিলেট কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে গিয়ে শেষ হয়। এতে বিএনপি ও অঙ্গ-সহযোগী সংগঠনের কয়েক হাজার নেতা-কর্মী অংশ নেন। এর আগে বিএনপির পক্ষ হতে সিলেট কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে শহীদের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করা হয়।
এদিকে ফেঞ্চুগঞ্জ উপজেলা বিএনপির উদ্যোগে বেলা তিনটায় উপজেলা সদরে বিজয় শোভাযাত্রা হয়েছে। এর আগে সংক্ষিপ্ত সমাবেশে সভাপতিত্ব করেন উপজেলা বিএনপির সভাপতি ওয়াহিদুজ্জামান চৌধুরী সুফি। এতে প্রধান অতিথির বক্তব্য দেন জেলা বিএনপির সভাপতি আবদুল কাইয়ুম চৌধুরী।
আবদুল কাইয়ুম চৌধুরী তাঁর বক্তব্যে বলেন, শহীদ জিয়া স্বনির্ভর বাংলাদেশ গড়ার কাজ শুরু করেছিলেন। বাংলাদেশের ইতিহাস আর শহীদ জিয়া একই সূত্রে গাঁথা। গত সাড়ে ১৫ বছর ইতিহাস বিকৃতি করা হয়েছে। পাঠ্যপুস্তকে মুক্তিযুদ্ধের ভুল ইতিহাস লেখা হয়েছে। শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের নাম মুছে দেওয়ার চেষ্টা করা হয়েছে। জনতার হৃদয় থেকে শহীদ জিয়ার নাম মুছে দেওয়া যাবে না।